শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
পার্বত্য চট্টগ্রামের সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল কাসাভা। কালের খবর চবি এক্স স্টুডেন্টস ক্লাব ঢাকা এর সভাপতি ব্যারিস্টার ফারুকী এবং সাধারণ সম্পাদক জিএম ফারুক স্বপন নির্বাচিত। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল সম্পন্ন। কালের খবর সীতাকুণ্ড হবে বাংলাদেশের অন্যতম মডেল উপজেলা : আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী। কালের খবর মাটিরাঙ্গার গুমতিতে মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মুরাদনগরে সামাজিক সংগঠনের শীতের কম্বল বিতরণ। কালের খবর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে ‘স্বাধীনতা সোপানে’ শ্রদ্ধা নিবেদন। কালের খবর জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন। কালের খবর জুলাইয়ের শহীদ পরিবারদেরকে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে নবীউল্লা নবীর আর্থিক সহায়তা ও খাদ্য বিতরণ। কালের খবর
উদ্যোক্তা নারী এবং তাদের সামাজিক সম্পর্ক। কালের খবর

উদ্যোক্তা নারী এবং তাদের সামাজিক সম্পর্ক। কালের খবর

 

শামীমা ইয়াসমিন (মিথিলা) কালের খবর : 
“উদ্যোক্তা নারী এবং তাদের সামাজিক সম্পর্ক ” শিরোনামে আমার একটি গবেষণা প্রবন্ধ আছে। বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমার গবেষণার সার সংক্ষেপটি তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।
আমাদের গর্ব , জীবন্ত কিংবদন্তি নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ডঃ ইউনুস স্যার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নে কী ভূমিকা রেখেছেন তার কিছুটা হয়তো পাঠক আমার এই লেখাটি পড়ে উপলব্ধি করতে পারবেন।জীবনের গল্প বলার সময় আব্দুল মালেকের দুচোখ গড়িয়ে চোখের পানি পড়ছিলো। এ ছিল তার ভাগ্য ফেরানোর আনন্দ অশ্রু । আমাকে আপা বলে সম্বোধন করে বললেন ” ৯১ এর ঘূর্ণিঝড়ে আন্ডা ঘর বাই ভাঙ্গি চুরমার অই গেছে। থাইকবার জাগা আছিলোনা। কন্ডে থাকমু, কি খামু চোকে আন্ধার দেইয়ের। কোন আত্মীয়তুন দুই টেয়াঅ ( টাকা) ধার হাইনো। হেই সময় হুইনছি মাইয়োলারগো ( মহিলাদের) সমিতি করি বলে গ্রামীণ ব্যাংকের তুন টেয়া লন যায়। খুব অল্প সময়ের মইধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক এর তুন লোন লই ঘর তুইলছি । মুরগির ডিম বেঁচি আর গরুর দুধ বেচি আস্তে আস্তে টেয়া শোধ কইচ্ছি। এঙ্গা( এখন) মাথা গুজার ঠাঁই অইছে। হোলা মাইয়ারগো ( ছেলে মেয়েদের) আব্দার হুরন কইত্তা হারি।” সাথে সাথে আব্দুল মালেকের স্ত্রী সালেহা বেগম ও তার সংসার জীবনের চড়াই উৎরাই এর কথা বলতে শুরু করলেন । ” সংসারের অভাবের লাই হিয়া ( তার স্বামী) আগে আরে বোত মাইরদর
কইচ্ছে । বারবার টেয়ার লাই বাপের বাইত হাড়াইছে। আর বাপ অ গরীব। টেয়া কন্ডেতুন দিব। লোন লনের হরে দিনরাত কাজ কইচ্ছি। এঙ্গা হরাগত (স্বচ্ছলতা) আইছে। হিয়ায় আরে আর মারে না। কনো এককান কাজ কইত্তে ও জিজ্ঞায় লয়। এঙ্গা সুখ অইছে।”গ্রামবাংলায় এরকম হাজারো পরিবারের বাস্তব জীবনের গল্প রয়েছে যাদের ভাগ্য উন্নয়নের সাথে ডঃ ইউনুস স্যার এবং গ্রামীণ ব্যাংক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশের যত নারী অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত তাদের ৯০% এরও বেশি গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ নেয়ার মাধ্যমে যুক্ত হয়েছে। পুরুষ শাসিত সমাজে নারীদের গৃহস্থালির অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মূল্যায়ন হয় না বলে নারীরা নিগৃহীতই ছিল । যখন গৃহস্থালির কাজ ছাড়াও সরাসরি আনুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কাজে নারীরা অংশগ্রহণ করতে শুরু করলো তখন পরিবার এবং সমাজে নারীর কাজের ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকলেও উভয় ক্ষেত্রেই নারী ব্যাপকভাবে ক্ষমতায়িত হয়েছে। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের মাত্রা কমে এসেছে। পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীকেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
নারীর অর্থনৈতিক জাগরণের সাথে সাথে সামাজিক জাগরণ ও ত্বরান্বিত হচ্ছে , সমাজের এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নারীর পদায়ন হচ্ছে। যার গোড়া পত্তন সম্ভব হয়েছে নারীদেরকে বিনা জামানতে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে ।বাংলাদেশের ৮৫ হাজার গ্রাম আজ প্রায় মফস্বলময় হয়ে উঠেছে। এই উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছেন ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস স্যার এবং গ্রাম বাংলার নারী সমাজ।

অনেক পাঠক হয়তো বলবেন সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে হয়। আমি ও বলছি সুদ সহ ঋণ পরিশোধ করতে হয় এবং নির্দিষ্ট টাইমে পরিশোধ না করলে অনেক চাপ সৃষ্টি করা হয়। তারপরও আমি ডক্টর ইউনুস স্যারের প্রশংসা করবো, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রশংসা করবো কারণ –
১. গ্রামের মানুষ যখন চরম অর্থ কষ্টে থাকে, যখন আত্মীয়-স্বজন কোথাও থেকে ঋণ পায়না , যখন জামানত রাখার মত কোন কিছু নাই , তখন কঠিন সমস্যা থেকে উৎরানোর একমাত্র পথ গ্রামীণ ব্যাংক।
২. ঋণের টাকা হাতে পেয়ে যে জন্য ঋণ নেওয়া হয়েছে সেটা না করে মানুষ অন্য কাজ করতে পারে কিংবা অলস হয়ে যেতে পারে , তাই ঋণ পরিশোধের জন্য তাগাদা দেওয়াটা সঠিক বলে আমি মনে করি। এতে করে অর্থনৈতিক গতি ত্বরান্বিত হবে।
৩. চরম অর্থ কষ্টের সময় ঋণের সুদ কত হবে সেটা বড় বিষয় নয়। তাছাড়া অন্য কোন ব্যাংক কি আপনাকে জামানত ছাড়া ঋণ দেয়? অন্য কোন ব্যাংক কি সুদ মুক্ত? যিনি ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যারকে সুদখোর বলছেন , তিনি কি ব্যাংকে টাকা রেখে সে টাকার সুদ খান না?
৪ . ইসলামী শরীয়ার আলোকে পরিচালিত যে সমস্ত ব্যাংক আছে সেগুলোর কোনোটা কি সুদ মুক্ত? সুদকে প্রফিট বললে কি সেটা হালাল হয়ে গেল?
লেখক: প্রভাষক, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা
উপদেষ্টা: উত্তরা রেসিডেন্সিয়াল কলেজ এবং
শেল্টার গ্লোবাল স্কুল এন্ড কলেজ

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com