শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
যৌথ বাহিনীর অভিযান: থানচি-রুমা-রোয়াংছড়ি ভ্রমণে বারণ সাতক্ষীরার দেবহাটায় ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি সহ আহত পাঁচ। কালের খবর সাপাহারে রাতের অন্ধকারে ফলন্ত আম গাছ কাটল দূর্বৃত্তরা। কালের খবর বাঘারপাড়ায় হাঙ্গার প্রজেক্টের সামাজিক সম্প্রীতি কমিটির সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসার’র মতবিনিময়। কালের খবর রায়পুরায় মরহুম ডাঃরোস্তাম আলীর ২৭ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ইফতার ও দোয়া মাহফিল। কালের খবর ভাতৃত্ববোধ সুদৃঢ় করতে রায়পুরাতে দোয়া ও ইফতার। কালের খবর রিয়াদে বাংলাদেশ প্রবাসী সাংবাদিক ফোরামের ইফতার মাহফিলে প্রবাসীদের মিলন মেলা। কালের খবর ঢাকা প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবসে গুনীজনদের আলোচনা সভা সম্পন্ন। কালের খবর আরজেএফ’র উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল সম্পন্ন। কালের খবর সাতক্ষীরার সুন্দরবন রেঞ্জে ২৪ জন হরিন শিকারীর আত্মসমর্পণ। কালের খবর
সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের কর্মী রপ্তানির সুবাতাস

সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের কর্মী রপ্তানির সুবাতাস

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, কালের খবর :

বাংলাদেশ থেকে কর্মী রপ্তানিতে দাপট বেড়েছে সৌদি আরবের। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে মোট কর্মী রপ্তানির ৫৫ শতাংশই গেছে এই দেশে।

অথচ দুই বছর আগে ২০১৫ সালে কর্মী রপ্তানিতে তৃতীয় স্থানে ছিল সৌদি আরব, আর কর্মী রপ্তানির পরিমাণ ছিল মাত্র সাড়ে ১০ শতাংশ। দুই বছরের ব্যবধানে কর্মী রপ্তানিতে দাপট বাড়ল সৌদি আরবের।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০০৮ সালে সবচেয়ে বেশি কর্মী গিয়েছিল সংযুক্ত আরব-আমিরাতে; এর পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ১৯ হাজার জন। কিন্তু ২০১৭ সালে সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়েছে সৌদি আরব। গত বছর কর্মী গেছে ৫ লাখ ৫১ হাজার জন। সৌদি আরব ছাড়াও কর্মী রপ্তানিতে অনেক বছর পর দ্বিতীয় স্থানে উঠল আরেক বড় শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। ২০১৭ সালে মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়ার হার ছিল প্রায় ১০ শতাংশ। আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওমান প্রায় ৯ শতাংশ।

সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়ার হার ব্যাপকভাবে বাড়ায় বাংলাদেশের কর্মী রপ্তানির বাজারে সুবাতাস বইছে।

এই ধারা অব্যাহত থাকলে বছর শেষে মোট কর্মী রপ্তানিতে বড় অগ্রগতি হবে বলে মনে করছেন কর্মী রপ্তানিসংশ্লিষ্টরা।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সহকারী পরিচালক জহিরুল আলম মজুমদার কালের খবরকে বলেন, ‘সৌদি আরবে কর্মী রপ্তানির দুয়ার খোলার পর থেকেই বিদেশের শ্রমবাজারে বড় অগ্রগতি হয়েছে। সেই সঙ্গে মালয়েশিয়া যোগ হওয়ায় বছর শেষে কর্মী রপ্তানির রেকর্ড গড়বে। ’

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে মোট কর্মী গেছে ১০ হাজার ৮ হাজার জন। আর শীর্ষে থাকা সৌদি আরবে কর্মী গেছে ৫ লাখ ৫১ হাজার জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মালয়েশিয়ায় গেছে প্রায় এক লাখ, তৃতীয় স্থানে থাকা ওমানে গেছে ৯০ হাজার জন। অথচ দুই বছর আগেও কর্মী রপ্তানিতে শীর্ষে ছিল ওমান ও কাতার। কিন্তু এখন কর্মী রপ্তানিতে সেই সব দেশে গতি কমেছে।

কারণ হিসেবে জহিরুল আলম বলছেন, প্রতিটি দেশেরই কর্মী নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকে। সেটি পূরণ হওয়ায় চাহিদা কমেছে এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। কর্মী রপ্তানিতে প্রতিটি দেশেই উত্থান-পতন থাকবে, সেই ধকল সামাল দিতেই মন্ত্রণালয় ও সরকার কর্মী রপ্তানির তালিকায় নতুন দেশ যোগ করছে।

জনশক্তি রপ্তানিকারকরা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানিতে বিগত ২০০৯ সালের আগ পর্যন্ত সৌদি আরব তালিকার শীর্ষে ছিল। প্রবাসী শ্রমিকদের নানা অনিয়মের কারণে নিষেধাজ্ঞার পর ২০০৯ সালে সৌদি আরবে রপ্তানিতে ধস নামে। এরপর থেকে শ্রমবাজারে বিপর্যয় নেমে আসে। ২০০৮ সালে সৌদি আরবে যেখানে এক লাখ ৩২ হাজার জনশক্তি রপ্তানি হয়েছিল, ২০০৯ সালে তা ধস নেমে সাড়ে ১৪ হাজার এবং ২০১০ সালে আরো কমে ৭ হাজার জনে নেমে আসে।

বিগত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ব্যাপক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চললেও সেটির সুফল মেলেনি। ২০১৫ সালে কর্মী রপ্তানি বেড়ে ৫৮ হাজারে উন্নীত হয়। ২০১৬ সালে সেটি আরো বেড়ে ১ লাখ ৪৪ হাজারে উন্নীত হয়ে রেকর্ড গড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে রপ্তানির হার বেড়ে ৫ লাখ ৫১ হাজারে উন্নীত হয়; যা এযাবৎকালের রেকর্ড।

কর্মী রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রা চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির আহ্বায়ক এমদাদ উল্লাহ বলছেন, ‘ব্যাপক কূটনৈতিক উদ্যোগের পর সৌদি আরবে কর্মী রপ্তানির দুয়ার খুলেছে। এর বেশ ভালো প্রভাব আমরা দেখেছি ২০১৭ সালে। যেকোনো মূল্যে এর ধারাবাহিকতা রাখতে হবে, একই সঙ্গে নতুন বাজারের দিকে মনোযোগী হতে হবে। ’

তবে কর্মী রপ্তানিতে জড়িত একাধিক ব্যক্তি কালের খবরকে বলেন, কিছু রিক্রুটিং এজেন্সির অনিয়মের কারণে গত বছরও ওমরা ভিসা পেতে কঠিন সমস্যার মুখে পড়েছিল বাংলাদেশ। ওমরাহ ভিসার নামে লোক পাচার হওয়ায় বিপদে পড়েছিল বাংলাদেশ। সেই এজেন্সির বিরুদ্ধে এখনো চূড়ান্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। এদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে অনেক চেষ্টার পর অর্জিত সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ার কর্মী পাঠানোর সরকারের সবচেয়ে বড় এই অর্জন আবারও ঝুঁকির মুখে পড়বে।

সৌদি আরবে ধস নামার পর ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত কর্মী রপ্তানির শীর্ষে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। আরব আমিরাতে বাজার বন্ধ হলে সেই স্থান দখলে নেয় ওমান। বিগত ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কর্মী রপ্তানিতে শীর্ষে ছিল ওমান। এখন আবারও চালকের আসন নিল সৌদি আরব।

কালের খবর/১৫/২/১৮

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com