বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
দু:স্থ অসহায় পাহাড়ি-বাঙালিদের মাঝে বিজিবি’র আর্থিক অনুদান। কালের খবর পরিবেশ সংরক্ষণ ও মানবাধিকার সাংবাদিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক বিশ্ব মানবাধিকার দিবস ২০২৪ পালিত। কালের খবর হিন্দু শিক্ষককে দেয়া হল জানাজা! কালের খবর পররাষ্ট্র নীতি : চিরবন্ধু চিরশত্রু রাস্ট্র বলে কিছু নেই। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় বেগম রোকেয়া দিবস পালিত। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় ‘বাঁশরী ওয়াদুদ’ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন। কালের খবর দিনাজপুরে যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে নিহত-৪ ও আহত ২০-২২জন। কালের খবর তথ্যসন্ত্রাস নিয়ে যে সতর্কবার্তা দিলেন জাতীয় মসজিদের খতিব। কালের খবর ঈশ্বরগঞ্জে চুরির ঘটনায় হামলা ভাংচুর লুটপাট। কালের খবর শান্তি ,বড়ই প্রশান্তিময় একটি শব্দ। কালের‌ খবর।
দাম কম থাকায় জিয়াউর রহমানের সরকার কৃষকের ধান কিনে নিয়ে ছিলো: মির্জা আলমগীর । কালের খবর

দাম কম থাকায় জিয়াউর রহমানের সরকার কৃষকের ধান কিনে নিয়ে ছিলো: মির্জা আলমগীর । কালের খবর

কালের খবর রিপোর্ট : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ধানের দাম কমে যাওয়ায় কৃষকের ধান তার সরকার কিনে নিয়েছিলো। তখন গুদাম জাত করার মত বেশি স্থান না থাকায় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাও ধান গুদামজাত করা হয়েছিলো। কিন্তু এখন বিশ্বব্যাংক থেকে কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য টাকা এনে সরকার দলীয় লোকজন ভাগ করে খেয়ে ফেলছেন।

শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে  মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম,বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।

বিএনপি মহাসচিব বলেন,ঋণ খেলাপিদের মাফ করা হয় কিন্তু কৃষকের ঋণ মওকুফ হয় না। আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম বহু কৃষি ঋণ সুদসহ মওকুফ করে দিয়েছিলাম। তিনি বলেন, সরকার বলে ছিলো কৃষকের হাতে কার্ড পৌছে দেয়া হবে। সেই কার্ড এর মাধ্যমে কৃষকের নামে বরাদ্দকৃত টাকা সরাসরি কৃষকের হাতে চলে যাবে। কিন্তু তার কিছুই করেনি সরকার।

কৃষক ও ভোক্তার মাঝে মধ্যবর্তী একটা পক্ষ সুবিধা ভোগ করায় কৃষক ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন সরকার কৃষকদের ন্যায্য দাবির কথা কানেও নিচ্ছে না বরং সরকারের একজন মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের কৃষকদের এই বিক্ষোভকে ‘স্যাবোটেজ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কৃষকদের বাস্তব এই সেন্টিমেন্টকে সরকার দলীয় শীর্ষ নেতার এহেন মন্তব্যে নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। এদেশের কৃষকদের বর্তমানে যে দুরাবস্থা তা সরকারের ভুল নীতির প্রতিফলন। কিন্তু সরকার দলের নেতারা কৃষকের আন্দোলনের সাথে বিএনপির সম্পৃক্ততা খুঁজে পাচ্ছেন। তিনি বলেন, সরকার এখন ভূতের মত সব জায়গায় বিএনপিকে দেখতে পায়। বিএনপি ইজ সো পাওয়ারফুল, বিএনপি সব পারে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ দেশের ১৬ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান দাতা কৃষক পরিবারের অবস্থা আজ খুবই নাজুক ও দুর্বিষহ। কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশাগ্রস্থ। দেশের প্রায় ১.৫ কোটি কৃষক পরিবারের আজ নাজুক অবস্থা। তিনি বলেন, খাদ্য শষ্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে কৃষকের বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে। দেশের কৃষককুল তাদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে বহু স্থানে ধানের জমিতে আগুন দিয়ে রাস্তায় ধান ফেলে দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছে। কৃষকদের বিশেষ করে ধান চাষীদের চাওয়া হচ্ছে-সরকার ন্যায্য মূল্যে চাষীদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয় করুক। কৃষকদের চাওয়া খুবই সামান্য ও যৌক্তিক। আমরা কৃষকদের এই যৌক্তিক দাবির সাথে একমত।

মির্জা ফখরুল ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব এগরিকালচাল (ইউএসডিএ ) একটি রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে বলেন, ওই রিপোর্ট অনুসারে গত ৩২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণে (৩৮ লাখ মেঃ টন) বাংলাদেশ চাল আমদানী করেছে ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে। একদিকে সরকার বলছে চাল উৎপাদনে তারা স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন করেছে অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ চাল আমদানী করছে। চাল উৎপাদন নিয়ে সরকারের মিথ্যাচার ধরা পড়েছে সরকারের দেয়া পরিসংখ্যানেই। তিনি বলেন, বিদেশ থেকে বিপুল পরিমানে চাল আমদানী করার কারণে সরকারী বেসরকারী হিসাব বলছে দেশে বর্তমানে ২৫/৩০ লক্ষ টন চাল উদ্বৃত্ত রয়েছে। ফলে বাজারে চাপ তৈরী করছে এবং ধানের দাম কমছে। অনিয়ন্ত্রিত চাল আমদানীকে দেশের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখছেন, কেন এই চাল আমদানীর হিড়িক ?

বিএনপি মহাসচিব বলেন, চাল আমদানীর ক্ষেত্রে দুর্নীতির মাত্রা এতই ব্যাপকতা লাভ করেছে যে, সরকারের অংশীদারী একটি দলের প্রধান সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেননও চাল আমদানীতে সরকারের দুর্নীতির কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়াও সরকারী দলের সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেন-ও এহেন পরিস্থিতির জন্য এ সরকারের সাবেক খাদ্য মন্ত্রী কামরুল ইসলামকে দায়ী করেছেন। আপনারা জানেন বর্তমানে ব্যাংক ব্যবস্থায় খেলাপী ঋনের পরিমান প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা। এই খেলাপী ঋণ গ্রহিতাদের জন্য সরকার বিশেষ ছাড় দিয়েছে। যদিও এই ছাড় মহামান্য হাইকোর্ট আটকে দিয়েছে। সরকার ব্যাংক লুটপাটকারীদের দুধকলা দিয়ে পুষছেন। অথচ এই খেলাাপী ঋণের মাত্র ১০ শতাংশ বরাদ্দ দিলে সরকার আরো প্রায় ৩৬ লাখ মেট্রিক টন ধান কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারে। এতে দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা উপকৃত হবে।

বর্তমানে কৃষকদের যে দূরাবস্থা তা দূর করতে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শ্রমিকের ঘাটতি লাঘব ও কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীন কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নামে একটি প্রকল্প রয়েছে। দেশের হাওর ও দক্ষিণ উপকূলীয় এলাকায় ৫০-৭০% হারে ভর্তুকি দিয়ে প্রকৃত কৃষকদেরকে কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্য ছিল এ প্রকল্পটির। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি যে, সরকারের দলীয়করণ ও দুর্নীতির কারণে এই প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়েছে। কোটি কোটি টাকার এই প্রকল্পের সুফল পাচ্ছে সরকারের দলীয় লোকজন কিন্তু প্রকৃত কৃষক এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে ধান উৎপাদন সম্পর্কে সরকার মিথ্যাচার করছে। সরকার বলছে দেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন, অথচ প্রতি বছর ২০ থেকে ৩০ লক্ষ মেঃ টন চাল আমদানী করছে। সরকার জনগণের সাথে মিথ্যাচার করে আসল সত্যকে আড়াল করছে।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com