বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় তাপদাহে রিকশাচালকদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতারণ। কালের খবর প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে বাগান, ঝরছে আম, শঙ্কায় চাষীরা। কালের খবর ট্রাফিক-ওয়ারী বিভাগ যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে। কালের খবর মারামারি দিয়ে শুরু হলো ‘খলনায়ক’দের কমিটির যাত্রা। কালের খবর কুতুবদিয়ার সাবেক ফ্রীডম পার্টির নেতা আওরঙ্গজেবকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন। কালের খবর সাতক্ষীরায় লোনা পানিতে ‘সোনা’ নষ্ট হচ্ছে মাটির ভৌত গঠন। কালের খবর সড়ক প্রশস্তকরণের কাজে অনিয়মের মহোৎসব। কালের খবর ইপিজেড থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর উদ্যোগে আইন শৃঙ্খলা ও কিশোর গ্যাং প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। কালের খবর শাহজাদপুরে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উড়ে গেল সি লাইন বাসের ছাদ, ১জন নিহত। কালের খবর সাতক্ষীরার কলারোয়ায় স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণার আত্মহত্যা। কালের খবর
মহাসড়কে মহাজট : দিনরাত পার গাড়িতেই

মহাসড়কে মহাজট : দিনরাত পার গাড়িতেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের খবর :

যাত্রীরা বাসে ঘুমাচ্ছে। চালকরা গামছা পেতে সড়কের ওপরেই বা পাশে ঘুমিয়ে পড়েছে।

চালকের সহকারী বাসের বনেটে কাত হয়ে ঘুমাচ্ছে বা ঝিমুচ্ছে। গতকাল অবিশ্বাস্য এই দৃশ্য দেখা গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়তাকিয়া, ফতেহপুর, চৌদ্দগ্রাম, মিরসরাই, সীতাকুণ্ডসহ নানা স্থানে। এসব স্থান থেকে যত দূর চোখ যায় বাস, ট্রাক, লরির লাইন। স্থির। কোথাও বহু সময় পর একবার-দুবার ঘড়ঘড় শব্দ তুলে ইঞ্জিন চালু হলেও চাকা বেশি দূর গড়ায় না। আবার নেমে আসে নীরবতা।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গত বুধবার থেকে তীব্র থাকা যানজটের কারণে নেমে এসেছে যেন এক মহাদুর্যোগ। এই দুর্যোগের প্রতিবাদে ও তার অবসান চেয়ে ক্ষুব্ধ বাস মালিকরা আজ সোমবার বাস চালানো বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ১২ ঘণ্টার এই ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।

স্থবির এই মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ১২০ কিলোমিটারজুড়ে গতকাল রবিবার ছিল যানজট।
আন্তজেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন কালের খবরকে  বলেন, ‘ফেনী ও দাউদকান্দিতে টানা কয়েক দিনের যানজটে যাত্রীরা প্রচণ্ড ভোগান্তিতে পড়েছে, মালিকরা আয়ের বদলে উল্টো লোকসান গুনছেন। তাই আমরা সোমবার ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিয়েছিলাম। ’ চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সঙ্গে গত রাতে ধর্মঘট ঘোষণাকারী পরিবহন নেতাদের বৈঠকে ধর্মঘট স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন (চট্টগ্রাম ও সিলেট) সভাপতি মৃণাল চৌধুরী গত রাতে কালের খবরকে  বলেন  ‘বৈঠকে আমাদের দাবিগুলো উত্থাপন করা হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়ায় ধর্মঘট স্থগিত করেছি। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের বলা হয়েছে, আগামীকাল ১৫ মের মধ্যে ফেনীর ওভারপাসের এক প্রান্ত যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। মেঘনা ও দাউদকান্দি সেতুতে পণ্য ও যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচলে যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভিন্ন এলাকায় শত শত যানবাহন আটকা পড়েছে, সেগুলো স্ব স্ব এলাকায় প্রশাসন যানজট নিরসনে কাজ করবে। এসব বাস্তবায়ন করা না হলে আমরা আবার ধর্মঘটে যাব। ’

আন্তজেলা বাস মালিক সমিতি ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন গতকাল দুপুর ১২টায় নগরের বিআরটিসি মার্কেটে সংগঠনের এক সভায় ধর্মঘটের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এ নিয়ে সন্ধ্যায় ধর্মঘট আহ্বানকারী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ প্রশাসন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত বৈঠক চলে।

ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার পর ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালসহ রাজধানীর বিভিন্ন কাউন্টার থেকে চট্টগ্রামমুখী বাসের আগাম টিকিট বিক্রি গতকাল বিকেল থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরিবহনকর্মীরা যাত্রীদের ধর্মঘট কারণ দেখিয়ে টিকিট বিক্রি করেননি। একইভাবে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে চট্টগ্রামমুখী বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে পণ্যবাহী ট্রাক, লরি মহাসড়কে পড়ে থাকায় এ ক্ষেত্রে ধর্মঘটের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বুধবার থেকে যানজট তীব্রতর হয়ে ওঠায় ঢাকা-চট্টগ্রাম যাতায়াতে পুরো ২৪ ঘণ্টাই লাগছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থেকে গন্তব্য পরিবর্তন করে উল্টোপথে যাত্রীরা ফিরে যাচ্ছে ঢাকা বা চট্টগ্রামে। চালকরা গাড়ি ঘুরিয়ে ফেলছে কোথাও কোথাও। গতকাল মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে গাড়ি আটকে থাকায় ক্লান্ত যাত্রী ও চালকদের বাস বা ট্রাকে লম্বা ঘুম দিতে দেখা যায়। গাড়ি সামনে চলবে না জেনে অনেকে মহাসড়কে, মহাসড়কের পাশে গামছা বিছিয়ে শুয়ে ছিল। মহাসড়কের বড়তাকিয়া, ফতেহপুর, চৌদ্দগ্রাম, মিরসরাই, সীতাকুণ্ডসহ বিভিন্ন স্থানে এই দৃশ্য চোখে পড়ে। গতকাল চট্টগ্রামমুখী গাড়িগুলো ধীরগতিতে এগিয়ে গেলেও ঢাকামুখী গাড়ির সারি দুপুর পর্যন্ত ছিল স্থির। আটকা পড়েছিল পণ্যবাহী ট্রাক, লরি। সীতাকুণ্ডে উল্টোদিক থেকে গাড়ি চলাচলে যানজট আরো তীব্র হয়ে উঠতে থাকে। দুপুরে ফেনী সড়ক বিভাগের অংশ পার হতেই লেগেছে ১০ ঘণ্টা। অথচ আধাঘণ্টায় এই অংশ পার হওয়া সম্ভব স্বাভাবিক দিনগুলোতে।

চট্টগ্রাম থেকে কালের খবর’র  প্রতিবেদক  জানান, শ্যামলী পরিবহনে চট্টগ্রাম থেকে রংপুরের উদ্দেশে শনিবার সন্ধ্যায় যাত্রা করা ফার্নিচার ব্যবসায়ী আবু বক্কর সিদ্দিক গতকাল বিকেলে ঢাকায় পৌঁছে ফোনে কালের খবরকে  বলেন, ‘এবারের মতো ভয়াবহ যানজট আগে কখনো দেখেননি। শনিবার বিকেল ৪টার দিকে ভাত খেয়েছিলাম। রাতে ভাত খেতে পারিনি। যেখানে গাড়ি রাতভর ছিল (বড় দারোগারহাট) সেখানে আশপাশে কোনো দোকানপাট ছিল না। নির্জন জায়গা। আমাদের গাড়িতে ৩৮ জন যাত্রী সবাই ভয়ের মধ্যে ছিল। আতঙ্কের মধ্যে রাত কাটিয়েছি। ’ তিনি জানান, কুমিল্লা ময়নামতী ক্যান্টনমেন্ট যেতেই তাঁদের ১৭ ঘণ্টা লাগে। বড় দারোগারহাটে পুরো রাত বাসেই বসে ছিলেন। এরপর এক-দুই হাত করে এগিয়ে গতকাল সকাল ৬টা থেকে গাড়ি চলতে থাকে।

গতকাল দুপুর ২টায় চট্টগ্রামের অলংকার মোড়ে সাতক্ষীরা থেকে ঈগল পরিবহনে আসা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘যানজটের কারণে ঢাকা থেকে সাত ঘণ্টা দেরি হয়েছে এখানে আসতে। ’ বিকেল ৩টায় চট্টগ্রামের কর্নেলহাটে নোয়াখালী থেকে আসা বাসযাত্রী ফাতেমা বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৮টায় গাড়িতে উঠেছিলাম। অন্য সময় আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা লাগে বাড়ি থেকে এখানে আসতে। আজকে (রবিবার) লেগেছে সাত ঘণ্টা। ’ ঢাকা থেকে গতকাল দুপুর ১২টায় নগরের জিইসি মোড়ে একটি মাইক্রোবাসে করে আসা কয়েকজন যাত্রী জানায়, ঢাকার গাবতলী থেকে শনিবার বিকেল ৫টার দিকে মাইক্রোবাসটি ভাড়া করে তারা চট্টগ্রাম আসছিল। যানজটের কারণে মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ সড়ক দিয়ে আসার পরও তাদের সময় লেগেছে ১৭ ঘণ্টা। মাইক্রোবাসের যাত্রী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘গাড়িতে ওঠার আগে নাশতা করেছিলাম। রাতভর কিছু খেতে পারিনি। দীর্ঘ সময় সড়কের মধ্যে ছিলাম। ঘুমাতে পারিনি। প্রায় দুই দিন পর এখন নাশতা করব। ’

ফেনী প্রতিনিধি জানান, মহাসড়কে যানজটে কাবু লাখো যাত্রী ও চালক ডাকাতি, ছিনতাইয়ের আতঙ্কে ছিল। গতকাল সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা মহাসড়কের মহিপাল, ফতেহপুর, মোহাম্মদ আলী বাজারের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায় হাজার হাজার গাড়ি দাঁড়িয়ে। কখনো চলছিল শম্বুকগতিতে। চট্টগ্রাম থেকে আসা ট্রাকচালক আবুল খায়ের বলেন, দুই দিন আগে শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে রওনা দিয়েছি। রবিবার সকালে ফেনীতে এসে পৌঁছেছি। এখন আর গাড়ি চালানোর মতো শক্তি নেই। তিনি বলেন, অনেক বাস বারইয়ারহাট থেকে করেরহাট, শুভপুর, ছাগলনাইয়া হয়ে ফেনীতে ঢুকে আবার ঢাকার দিকে যাচ্ছে। এদিকে চট্টগ্রাম থেকে স্টার লাইন পরিবহনের বাস শুক্রবার দুপুরে রওনা দিয়ে শনিবার বিকেলে ফেনী পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে এই রুটে বাস বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরিবহনটির নির্বাহী পরিচালক মো. জাফর উদ্দিন কালের খবরকে  বলেন, ‘ভয়াবহ যানজটের ফলে আমরা ওই রুটে বাস বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি। ঢাকা থেকে ফেনী অথবা চট্টগ্রাম যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো কোনো বাসচালক ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার ঘুরে লাকসাম রোড, নোয়াখালীর চৌমুহনী, দাগনভূঞা হয়ে যাতায়াত করছেন।

আবার অনেক স্পটে দেখা যায়, যাত্রীবাহী দূরপাল্লার বাসগুলোকে বিপরীত সড়কে (রং সাইড) চলাচলেও পুলিশ তেমন বাধা দেয়নি। ফেনীর ট্রাফিক পরিদর্শক মীর গোলাম ফারুক বলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে ট্রাফিক সদস্যরা নির্ঘুম রাত কাটিয়ে কাজ করছেন।

গতকাল সকালে ও দুপুরে ফতেহপুর ওভারপাস এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আল আমিন কনস্ট্রাকশন কম্পানির প্রায় ৪০০ কর্মী পশ্চিম পাশের লেনটিতে কাজ করছেন। সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যরা কাজের তদারক করছেন। সেখানে রোলারের মাধ্যমে পাথরের একটি স্তর সমান করার কাজ চলছিল। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার মো. লাবলু ও মো. সাজু বলেন, এখন ওভারপাসের ওপরের অংশে পাথরের স্তর দেওয়া হবে। পশ্চিম পাশে সীমানাপ্রাচীর ঢালাইয়েরও কাজ চলছে।

এদিকে মিরসরাই, সীতাকুণ্ড, চিওড়াসহ কয়েকটি স্থানে রাতে ছিনতাই হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে। অনেক যাত্রীর কাছ থেকে টাকা-পয়সা, মোবাইল ফোনসেট, স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। আমীর হোসেন নামের এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, শনিবার রাতে মারাত্মক যানজট দেখে তিনি চট্টগ্রাম থেকে ফেনী আসার পথে করেরহাট নেমে যান। পরে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে তিনি করেরহাট রোড হয়ে রওনা হন। কিন্তু শুভপুরের কিছু আগে একদল ছিনতাইকারী তাঁকে মারধর করে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। স্বজনরা খবর পেয়ে ছাগলনাইয়া হয়ে ওই স্থানে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে ফেনীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। আমিনুল হক নামের এক কাভার্ড ভ্যানচালক বলেন, শনিবার রাতে চিওড়া ও পদুয়ায় একাধিক গাড়িতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

এ পরিস্থিতিতে মহাসড়কের ফেনী অংশে টহল জোরদার করেছে পুলিশ। ফেনীর পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার গত শুক্র ও শনিবার সড়কের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, কেউ যেন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে না পড়ে সে জন্য তৎপর রয়েছে পুলিশ।

মিরসরাই প্রতিনিধি জানান, গতকাল ভোর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মিরসরাই অংশে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। দুপুর ২টার পর জোরারগঞ্জ-বারইয়ারহাটে যানজট তীব্র হয়ে ওঠে। মিরসরাই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সভাপতি আশরাফ উদ্দিন সোহেল জানান, ‘গত কয়েক দিনের যানজটে নারী-শিশুরা বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে। এমন যানজট আমরা আর কখনো দেখিনি। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা প্রিন্স সৌদিয়া দিনভর আটকে থাকে মহাসড়কে। ওই বাসের যাত্রী নাজিয়া ফরায়েজি চট্টগ্রামের একটি ওষুধ কম্পানিতে চাকরি করেন। অসুস্থ মাকে দেখতে শনিবার দুপুরে কুমিল্লার উদ্দেশে রওনা হন। তিনি কালের খবরকে   বলেন, ‘দিনভর মনে তেমন ভয় ছিল না, কিন্তু রাত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা বেশ আতঙ্কে কাটাচ্ছি। কখন এ জট খুলবে তাও জানি না। ’ রাত ১০টা নাগাদ সুফিয়া রোড এলাকায় ইলেকট্রনিকস মালামালবোঝাই কাভার্ড ভ্যান নিয়ে জটে আটকা ছিলেন চালক রেজাউল করিম। বলেন, ‘ভাই নিজের খাওয়া-দাওয়া এসব নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। চিন্তা শুধু কম্পানির মূল্যবান মালামাল নিয়ে। ’

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি  জানান, গতকাল মহাসড়কের ফেনী থেকে সীতাকুণ্ড পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট ছিল। স্টার লাইন পরিবহনের যাত্রী কলেজছাত্রী আইরিন আক্তার জানান, তিনি চট্টগ্রামের এমটি মহিলা কলেজে পড়েন, থাকেন হোস্টেলে। বাড়িতে মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন শুনে নিজ বাড়ি ফেনীর মহিপালে যাওয়ার উদ্দেশে গাড়িতে ওঠেন। কিন্তু গাড়ি আর চলছে না। সকালে চট্টগ্রাম থেকে রওনা দিয়ে তিন ঘণ্টায়ও সীতাকুণ্ড পার হতে পারেনি যাত্রীরা।

…….দৈনিক কালের খবর

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com