রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩০ অপরাহ্ন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে ফেলেছে। সেজন্য তাদের রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বিচার হবে। এই দেশের মানুষের সঙ্গে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আজকে নয়, ১৯৭১ সালের পর থেকে বিশ্বাসঘাতকতা করে আসছে। সে কারণে আওয়ামী লীগের একদিন বিচার হবে।
তিনি বলেন, ‘যে আওয়ামী লীগ নেতা স্যান্ডেল পরতে পারত না, তার পাঁচটা বাড়ি, নতুন নতুন গাড়ি। আসলে আওয়ামী লীগ এই দেশে আর কোনো কিছু বাকি রাখেনি।’
শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী সমর্থিত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের (একাংশ) বার্ষিক কাউন্সিলে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
এ সময় গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার একের পর এক আইন করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে যেসব আইনগুলো করা হচ্ছে, প্রত্যেকটি আইন, নীতিমালা সংবাদ বা গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। সাংবাদিকরা যেন সত্য কথা বলতে না পারে, সেজন্যই সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রণ আইন করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমাজে একটা স্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। সেই ক্ষতটা হচ্ছে বিভাজন। সাংবাদিক ইউনিয়ন দুই ভাগ, সংবাদকর্মীরা দুই ভাগ। অর্থাৎ একটা জায়গাও নেই যে ভাগ ছাড়া নাই। চিকিৎসকরা দুই ভাগ; সব আলাদা হয়ে গেছে।’
বিভাজন ও বিভক্তির জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে দায়ী করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যারা ফ্যাসিবাদী ও কর্তৃত্ববাদী তারা সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সবসময় বিভাজন সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগ এক যুগে দেশের আত্মাকে ভাগ করে দিয়েছে। এখন চায়ের দোকানে দুটি বেঞ্চ আলাদা, একটা আওয়ামী লীগের, অন্যটা বিএনপির। এ বিভাজন তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ।’
তিনি বলেন, বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেন বলেছেন- ‘আওয়ামী লীগ সব পারে। শুধু পারে না পুরুষকে নারী করতে, আর নারীকে পুরুষ করতে’। এখনো আওয়ামী লীগ সব করছে, সব পারছে তারা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাঁচতে হলে এই অবৈধ সরকারকে সরাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আর এ সরকারকে সরাতে হলে অবশ্যই ঐক্য তৈরি করতে হবে। আমরা জাতীয়ভাবে চেষ্টা করছি, এ সরকারকে সরাতে, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে।’
বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সহসভাপতি রাশিদুল ইসলাম ও সহকারী মহাসচিব শফিউল আলম দোলনের সঞ্চালনায় কাউন্সিলে আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি এমএ আজিজ, বিএফইউজে একাংশের বর্তমান মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজে একাংশের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসাইন, রফিকুল ইসলাম আজাদ, ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, রাজশাহীর সরদার আবদুর রহমান, খুলনার আনিসুজ্জামান, যশোরের এম আইয়ুব, ময়মনসিংহের এম আইয়ুব আলী, গাজীপুরের এইচএম দেলোয়ার হোসেন, বগুড়ার মির্জা সেলিম রেজা, কুমিল্লার রমিজ খান, দিনাজপুরের মাহফিজুল ইসলাম রিপন, কুষ্টিয়ার আবদুর রাজ্জাক বাচচু প্রমুখ।
এ ছাড়া বিএনপি নেতাদের মধ্যে আবদুস সালাম, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশসের রিয়াজুল ইসলাম রিজুও বক্তব্য দেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর কাউন্সিল অধিবেশন হয়। সারা দেশ থেকে দুই শতাধিক কাউন্সিলর এতে অংশ নেন।