শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৭ অপরাহ্ন
রিয়াজুল ইসলাম, যশোর থেকে, কালের খবর :
মেস ভাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে বাড়ির মালিকদের দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যশোর পুলিশের পক্ষ থেকে। এখন থেকে যে বাড়ি মালিকের ১৮ বছরের উর্ধ্বে পুত্র সন্তান থাকবে তিনি ছাত্রী বা মহিলা মেস ভাড়া দিতে পারবেন না। শহরজুড়ে সিটিজেন ডাটাবেজ করার পরিকল্পনা করেছে পুলিশ। প্রত্যেক মেসে ছাত্র বা ছাত্রীর ছবিসহ পরিচয় পুলিশকে দিতে হবে। প্রয়োজনে মেসের ছাত্রদের ডোপটেস্ট করা হবে। পুলিশের নির্দেশনা অমান্যকারী মেস মালিকের বিরুদ্ধে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে।
বৃহস্পতিবার বিকেল যশোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যশোর সদর উপজেলার সকল বাড়ি ও মেস মালিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় পুলিশের পক্ষ থেকে ওই দিক নির্দেশনা দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক সার্কেল গোলাম রব্বানী।
মতবিনিময় সভায় বলা হয় সন্ত্রাস, জঙ্গি, মাদক, চাঁদাবাজ, ইভটিজিংকারী, কিশোর গ্যাংসহ নানা অপরাধী, আবাসিক এলাকায় মেস বা বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। কোন বাড়ির মালিকের ১৮ বছরের উর্ধ্বের ছেলে থাকলে তিনি মেয়েদের মেস ভাড়া দিতে পারবেন না। তবে আলাদা থাকলে সমস্যা নেই। এক্ষেত্রে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে নারী আনসার সদস্য নিয়োগ দিবেন। ছেলেদের মেসে সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, মাদক সেবনকারী, জঙ্গির অস্তিত্ব পাওয়া যায় তাহলে বাড়ির মালিকদের দায় নিতে হবে। ওই মেসের বিল্ডিং ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হবে। প্রত্যেকটা মেসের ডাটাবেজ রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। অনেক সময় জোর করে মেসের ছাত্রদের মিছিলে নিয়ে যাওয়া হয়। যদি কোনো ছাত্র বা ছাত্রী স্বেচ্ছায় মিছিল বা সমাবেশে যায় তাহলে পুলিশের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু মিছিলে যেতে বাধ্য করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিক বা চাকরিজীবীরা মেস ভাড়া নিয়ে সেখানে জুয়া ও মাদকের আস্তানা গড়ে তোলে। সেদিকে বাড়ির মালিকদের লক্ষ্য রাখতে হবে। মেসে যদি বড় ধরনের কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজসহ অপরাধীরা বড় ধরনের অপরাধ সংঘটিত করে তাহলে পুলিশ মালিকদের ছাড় দেবে না। এ ক্ষেত্রে বাড়ির মালিকদের আদালতে যেয়ে নিরাপরাধ প্রমাণ করতে হবে। পৌরসভা থেকে স্বাস্থ্য ছাড়পত্র নিতে হবে মেসের অধিবাসীদের। অনেক সময় বাড়ির পানির ট্যাংকের ভিতর অস্ত্র ও পানির ট্যাপের ভিতর মাদক লুকিয়ে রাখে এগুলো খেয়াল রাখতে হবে। মেসের তালিকা করে প্রত্যেকটি মেসে অভিযান পরিচালনা করা হবে। প্রয়োজনে ছাত্র ডোবটেষ্ট করা হবে।
সভায় আরো বলা হয়, শহর জুড়ে সিটিজেন ডাটবেজ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে পুলিশের। ভাসমান অপরাধীরা সাধারণত হোটেল অথবা মেসে উঠে অপরাধ করে থাকে। মহিলা মেসে বখাটেদের উৎপাত চলে। এক্ষেত্রে আপনারা (বাড়ির মালিক) পুলিশের সহযোগিতা নিবেন। প্রয়োজনে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করবেন। ফোনদাতার নাম পরিচয় গোপন রাখা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ খ সার্কেল সুপার জামাল নাসের, সদর ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক তুষার কুমার মন্ডল, চাঁচড়া ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক শাহাজাহান আহম্মেদ ও পুরাতন কসবা ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক মিলন কুমার মন্ডল, মেস মালিকদের মধ্যে আরবপুর এলাকার জসিম উদ্দিন, সৌনিক ইসলাম, স্টেডিয়াম পাড়ার আতিয়ার রহমান, মোজাফফার হোসেন, লুইন হোসেন, আবু বকর সিদ্দিক, নীলগঞ্জ শাহা পাড়ার আবুল খায়ের, পুলিশ লাইন এলাকার আব্দার রহমান প্রমুখ
সভা শেষে বাড়ি বা মেস মালিকদের ছাত্র/ছাত্রীদের ছবিসহ ডাটাবেজ তৈরি করে তা পুলিশের পক্ষ থেকে উপ-পরিদর্শক জাহিদ হোসেন (ডিএসবি)’র কাছে জমা দেয়ার জন্য আহবান জানানো হয়।