শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ অপরাহ্ন
কালের খবর ডেস্ক :
ভুয়া পুলিশ সেজে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে নারী কেলেঙ্কারীর মিথ্যা ফাঁদে ফেলে চাঁদা আদায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় ভুয়া পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাদশা ফয়সাল (৪৫) এক ব্যক্তিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোরপূর্বক এক নারীর সাথে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে নগদ প্রায় লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই ও ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগ ভুক্তভোগী গতকাল ১৯/০৯/২০২২ইং তারিখে যাত্রাবাড়ী থানায় ১৭০, ৩৪২, ৩২৩, ৩৮৬, ৫০৬ সহ তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন, মামলা নং—৮০। ইতিমধ্যে পুলিশ ১নং আসামী মোঃ রাইসুল ইসলাম রাসেল ও ৪নং আসামী মোঃ আরিফকে গ্রেফতার করেছে এবং আজ ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে চালান করেন। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী বাদশা ফয়সাল জানান, তার নাম বাদশা ফয়সাল, এনআইডি—৮৬৫১৫৪০০৯১, জন্ম তারিখ:০১/০৩/১৯৭৮ইং, পিতা—মৃত হাজী আঃ রশিদ মুন্সী, মাতা—মৃত মোসাঃ নুর ভানু বেগম, সাং—খলিসাখালী, মুন্সীবাড়ী, থানা—দশমিনা, জেলা—পটুয়াখালী। মামলার আসামীরা হলেন— (১) মোঃ রাইসুল ইসলাম রাসেল (৩৫), পিতা—মৃত হাসেম হাওলাদার, সাং—দশমিনা, খানা—দ্শমিনা, জেলা—পুটুয়াখালী, বর্তমান ঠিকানা—শনিরআখড়া, ফয়েজীর বাড়ীর দক্ষিণ পাশে, থানা—যাত্রাবাড়ী, ঢাকা, মোবাইল— ০১৭০৫৩১৮৬৮৪, (২) মো: রাসেল (৪০), পিতা—অজ্ঞাত, সাং—অজ্ঞাত, শ্বশুরবাড়ী—গয়নাঘাট, থানা—দশমিনা, জেলা—পটুয়াখালী, মোবাইল—৩১৭৮০—২৬০০৮৬, (৩) খোরশেদ (৩৫), পিতা—অজ্ঞাত, সাং—অজ্ঞাত (৪) মোঃ আরিফ (৩৫), পিতা—জামাল উদ্দিন, মাতা—হোসনেয়ারা বেগম, সাং—বাসাইল, থানা+জেলো—নরসিংদী, বর্তমান ঠিকানা—রাশেদের বাড়ীর ভাড়াটিয়া, ০১নং গলি, গোবিন্দপুর, থানা—যাত্রাবাড়ী, ঢাকা (৫) মোজাম্মেল (৪০), পিতা—অজ্ঞাত, সাং—অজ্ঞাত, (৬) মোঃ আজমল (৪৬০), পিতা—সালাম মৃধা, মাতা—রাণী বেগম, সাং—খালিশাখালী, থানা—দশমিনা, জেলা—পটুয়াখালী (৭) মো: সালাউদ্দিন (৪০), পিতা—মৃত সাত্তার মুন্সি, মাতা—মৃত হাওয়া বেগম, সাং—খলিশাখালী, থানা—দশমিনা, জেলা—পটুয়াখালী। বাদশা ফয়সাল জানান, তিনি পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলাধীন ২নং আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান থাকাকালে ১নং আসামী মোঃ রাইসুল ইসলাম রাসেল আমার নিকট থেকে বিভিন্ন সুযোগ—সুবিধা নিত এবং আমাকে মাঝে মধ্যে ফোন দিয়ে ঢাকা বেড়াতে আসতে বলতো। গত ১০/০৯/২০২২ইং তারিখে আমি ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় আসি এবং আমার শ্বশুরের বাসা যাত্রাবাড়ী থানাধীন মাতুয়াইল অবস্থান করি। গত ১৫/০৯/২০২২ইং তারিখ বিকাল আনুমানিক ৪ টার সময় ১নং আসামী মোঃ রাইসুল ইসলাম রাসেল আমার মোবাইলে ফোন দিয়ে আমার সাথে দেখা করতে চায়। এরপর বিকালে সে আমাকে তার বোনের বাসায় দাওয়াত খাওয়ার জন্য অনুরোধ করলে আমি তার কথায় রাজি হয়ে সরল বিশ্বাসে কিছু ফলফলাদি নিয়ে তার বোনের বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করি। তিনি জানান, বিকাল আনুমানিক ৫ টায় সময় আসামী রাসেল তার বোনের বাসার কথা বলিয়া আমাকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন শনিরআখড়া শেখদী রপসী গার্মেন্টপ এর বিপরীত পাশে ০৪নং আসামী আরিফ এর বর্তমান ঠিকানাহ রাশেদের বাড়ীর ভাড়া বাসার নিচ তলার ফ্ল্যাটে নিয়ে যায় এবং আমাকে একটি কক্ষে বসতে দেয়। কিছুক্ষণ পর একটি অজ্ঞাতনামা মেয়েসহ উপরোক্ত আসামীরা আমাকে অবরোধ করে। তাহার মধ্যে ০৫নং আসামী মোজাম্মেল এর হাতে হ্যান্ডকাপ ছিল। সে নিজেকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দেয়। অপর আসামীদের সহযাগেীতায় মেয়েটিকে আমার পাশে বসিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আপত্তিকর ছবি তোলে। আমি প্রতিবাদ করিলে আসামীরা আমাকে এলোপাথাড়ী মারধর করে এবং আমার কাছে থাকা ব্যক্তিগত মোবাইলটি ০১নং আসামী রাসেল ছিনিয়ে নেয়। এরপর ০৫নং বিবাদী মোজাম্মেল আমার হাতে হাতকড়া পড়িয়ে কাপড়—চোপড় খুলে জোর পূর্বক ঐ মেয়েটির সাথে পুনরায় ছবি তোলে এবং ভিডিও ধারন করে। অতঃপর ১নং আসামী রাইসুল ইসলাম রাসেল (৩৫), ২নং আসামী রাসেল (৪০) ও ৫নং আসামী মোজাম্মেল (৪০) আমার কাছে থাকা নগদ ৬৫ হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয় এবং আমার ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকী এবং ধর্ষণ মামলার ভয় দেখিয়ে আরো ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। আসামীরা তাৎক্ষনিকভাবে আমার সাথে থাকা মোবাইলের বিকাশ নং—০১৭১১৯৪৫০১৪ থেকে তাদের মোবাইলে বিকাশ নং—০১৬৭৪১৪৯৬৬১, ০১৭৬৬৬৭৯৯৯১ তে মোট ৩৫ হাজার পাঁচশত টাকা ক্যাশ আউট ও সেন্ডমানি করে নিয়ে নেয়। এরপর আসামীরা আমাকে এলোপাথারী মারধর করে এবং এই ঘটনা পুলিশকে জানাইলে ভবিষ্যতে বড় ধরলের ক্ষতি করার হুমকী দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে বের হয়ে আমি স্থানীয় ফার্মেসীতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে জরুরী ভিত্তিতে বাড়ীতে চলে যাই। পরবর্তী সময়ে এলাকায় গন্যমান্য লোকজন এবং আমার আত্মীয়—স্বজনের মাধ্যমে জানতে পারি আসামীরা বিভিন্ন ফেসবুক আইডি হতে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে আমার জোরপূর্বক তোলা ছবি গুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করেছে। ভুক্তভোগী বাদশা ফয়সাল এ ঘটনায় জড়িত চক্রের সকল সদস্যকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।