রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন
লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরের মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে চরাঞ্চলের ফসলের মাঠ, ঘরবাড়ি ও মাছের ঘের। এতে দুই উপজেলার অন্তত ১৫ গ্রাম ডুবে পানিবন্দি হয়েছেন প্রায় ১২ হাজার মানুষ। এছাড়াও কমলনগরের চর মার্টিন এলাকায় একটি সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
শুক্রবার দুপুরে পূর্ণিমার প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারে মেঘনা নদীর পানি বেড়ে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। রামগতি ও কমলনগরে উপজেলায় মেঘনা নদীর ভাঙনে বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে যাওয়া জোয়ার এলেই এখানকার গ্রামের পর গ্রাম ডুবে যায়।
স্থানীয় তেলির চর বাজার, কামাল বাজার ও চেয়ারম্যান বাজার পানিতে তুলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ওই বাজারের ব্যবসায়ীরা।
চেয়ারম্যান বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী মো. তছলিম বলেন, অস্বাভাবিক জোয়ারে চরের হাট বাজার ডুবে গেছে, দোকানে জোয়ারের পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বাজারের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। চরের কৃষক, রাখাল ও খামারিরা গরু, ছাগল ও মহিষ নিয়ে দুর্ভোগে পড়েন।
স্থানীয় চর আবদুল্লাহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মঞ্জুর বলেন, জোয়ার এলেই ডুবে যায় চর আবদুল্লাহর রাস্তা-ঘাট, হাটবাজার ও বসতঘর। প্রকৃতির কাছে এখানকার মানুষ অসহায়।
ছাড়াও রামগতি উপজেলার মেঘনার ভাঙন কবলিত বালুর চর, চর আলেকজান্ডার, সুজনগ্রাম, গাবতলী, চর আলগী, চর গোঁসাই, চররমিজ, বড়খেরী, চরগাজী, চরগজারীয়ার বিস্তীর্ণ জনপদ জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে, কমলনগরে মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ না থাকায় উপজেলার চর কালকিনি ইউনিয়ন, সাহেবেরহাট ইউনিয়ন, চর মার্টিন ইউনিয়ন, চর ফলকন ইউনিয়ন ও পাটারিরহাট ইউনিয়নের মেঘনা উপকূলীয় এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
চর মার্টিন ইউনিয়নের সদস্য নুরুল ইসলাম জানান, চর মার্টিন ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ আলম মেম্বার বাড়ির দক্ষিণ পাশের রাস্তাটি জোয়ারের তোড়ে ভেঙে মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় চর কালকিনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাস্টার ছাইফ উল্লাহ বলেন, অব্যাহত নদী ভাঙনে বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে গেছে। জোয়ার এলেই সব ডুবে যায়। অস্বাভাবিক জোয়ারে বসতঘরে পানি উঠায় মানুষের দুঃখ-কষ্টের যেন শেষ নেই।
কমলনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক জোয়ারে সব ডুবে যায়। গত বছরেও জোয়ারে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নদী ভাঙন রোধে নদী তীর রক্ষায় বেড়িবাঁধের জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে। নদীর তীর রক্ষায় বাঁধ হলে আমরা নিরাপদে থাকতে পারবো।