শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করে পশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে। কালের খবর সমাজে “শান্তি স্থাপন ও সহিংসতা নিরসনে — সাতক্ষীরায় তাপদাহে রিকশাচালকদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতারণ। কালের খবর প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে বাগান, ঝরছে আম, শঙ্কায় চাষীরা। কালের খবর ট্রাফিক-ওয়ারী বিভাগ যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে। কালের খবর মারামারি দিয়ে শুরু হলো ‘খলনায়ক’দের কমিটির যাত্রা। কালের খবর কুতুবদিয়ার সাবেক ফ্রীডম পার্টির নেতা আওরঙ্গজেবকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন। কালের খবর সাতক্ষীরায় লোনা পানিতে ‘সোনা’ নষ্ট হচ্ছে মাটির ভৌত গঠন। কালের খবর সড়ক প্রশস্তকরণের কাজে অনিয়মের মহোৎসব। কালের খবর ইপিজেড থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর উদ্যোগে আইন শৃঙ্খলা ও কিশোর গ্যাং প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। কালের খবর
শ্রীমঙ্গলে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা টমটম ও লক্ষ টাকার টোকেন ব্যবসা। কালের খবর

শ্রীমঙ্গলে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা টমটম ও লক্ষ টাকার টোকেন ব্যবসা। কালের খবর

স্টাফ রিপোর্টার,  কালের খবর :
মহামান্য হাইকোর্ট এবং সড়ক সেতু ও যোগাযোগ মন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে শ্রীমঙ্গল উপজেলার শহর কিংবা অলিগলিতে অবাধে চলছে নিষিদ্ধ যানবাহন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, অটো সিএনজি, ব্যাটারী চালিত অটো ভ্যান ও টমটম। এর ফলে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষ সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তেমনি হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশের মাসিক মাসোয়ারা ও স্থানীয় বির্তকিত কিছু রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, যারা এসব ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ও টমটম গাড়ির সমিতির লিডাররা। ও গ্যারেজ মালিক সেজে মাসিক চাঁদা আদায় করছে। তারা কার স্বার্থে এসব অর্থ তুলেছেন এ বিষয়েও বহু প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ জনগণ।
জানা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলার মৌলভীবাজার রোড, হবিগঞ্জ রোড কালীঘাট রোড সিন্দুর খান রোড ও ভানুগাছ রোডের এলাকায় যেসব অবৈধ ব্যাটারী চালিত রিক্সা সড়কে চলাচল করছে তাদের রয়েছে এলাকা ভিত্তিক একটি বড় সিন্ডিকেট। যাদের আওতায় থাকা অটো রিক্সার পেছনে সাঁটানো হয়েছে সাংকেতিক প্লেট ও বিভিন্ন অক্ষরের গোপন নাম্বার। যাতে লেখা থাকে বিভিন্ন সাংকেতিক শব্দার্থ সহ ইত্যাদি।
এসব নাম্বার সম্বলিত রিক্সাকে কখনো ট্রাফিক বা পুলিশ হয়রানি না করে অন্যান্য রিক্সা চালকদের হয়রানি করার কথা জানান। কেননা সুবিধা পাওয়া চালকেরা নির্দিষ্ট সময় পর মাসোহারা দিচ্ছেন প্রভাব বিস্তারকারী নেতাদের।
কয়েক মাসের পরিসংখ্যানে জানা যায় এসব পরিবহনে যাতায়াত করা একাধিক যাত্রী নিয়ে ও ব্যাটরী চালিত অটোরিকশা বিভিন্ন যানবাহনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে বিভিন্ন সময়ে বহু দূর্ঘটনা ঘটছে। এতে মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনার পাশাপাশি পঙ্গুত্ব ও আহত হয়েছেন অনেকেই। যদিও গত কয়েক মাস আগে এসব তিন চাকার অবৈধ যান বন্ধে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে বেশ কিছু ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা জব্দ করেন। পরে অদৃশ্য কারণে সে অভিযানও থেমে যায়।
বর্তমানে প্রধান সড়কগুলোতে রাত-দিন ব্যাটারী চালিত এসব অবৈধ তিন চাকার যান চলতে দেখে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্তব্য করেন। ব্যাটারী চালিত রিক্সা ও অটোরিক্সার বেলায় প্রশাসনের পদক্ষেপ তাহলে যা বায়ান্ন তা তেপান্ন নয় কি।
জানা যায়, উপজেলার মহাসড়কে প্রায় ’ ২ হাজার থেকে ৩ হাজার ব্যাটারী চালিত ইজি বাইক অটো রিক্সা ও টমটম চলাচল করছে। এসব পরিবহনে দেখা যায়, মা পরিবহন, পরাগ পরিবহন, আমানত এক্সপ্রেস, মিশুক এক্সপ্রেস সহ ইত্যাদি নামে। অপরদিকে ৫ শতাধিক ইঞ্জিন চালিত সিএনজি হতে টোকেন ও রশিদে চাঁদা আদায়ও অব্যাহত রয়েছে।
এসব যানবাহন চলাচলের নেতৃত্বে থাকা কথিপয় নেতারা, হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশকে মাসিক মাসোয়ারা দিয়ে বিভিন্ন সড়কে নিষিদ্ধ যানবাহন নামিয়ে দিয়েছে বলে প্রচার রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার সচেতন মহলে রয়েছে কাঁনাঘোষা এই অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও টমটম চলাচল নিয়ে। শ্রীমঙ্গলের এক ব্যবসায়ী নেতার নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমাদের প্রতিবেদককে জানান সরকারের নিষেধ থাকা শর্তেও কিভাবে চলে, সেটাও আসলে বোধগম্য নয় অনেক সচেতন মহলের।
অনেকের ধারণা সেক্ষেত্রে নীরব ভূমিকা পালন করছে থানা পুলিশ। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ। ফলে নিষিদ্ধ যানবাহনের চালকরা তোয়াক্কা করছেনা মহামান্য হাইকোর্টের রায় ও সরকারের সড়ক সেতু যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ।
অপরদিকে স্থানীয় সচেতন জনসাধারণ মনে করেন, শ্রীমঙ্গল শহরের প্রধান সড়কগুলোতে নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হলে এই ঐতিহ্যবাহী পর্যটননগরীর যানজট অনেকাংশে কমে যাবে, এবং শ্রীমঙ্গলে সড়ক দূর্ঘটনা অনেকাংশেই কমে যাবে। পাশাপাশি দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাবে জানমাল ও মানুষের মহামূল্যবান জীবন।
অনেক সময় দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ এসব ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে থানা পুলিশ অভিযান করলে এর প্রতিবাদে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ করেন অটো রিকশাচালকেরা। নানা তদবিরে ব্যস্ত হয় স্থানীয় কতিপয় নামধারী নেতা ও নামস্বর্বস্ব শ্রমিক নেতা। যারা এসব যান চলাচলের সাথে জড়িত বলে জানা যায়। যাদের সহায়তা ও আর্থিক লেনদেনের কারণে এসব যান চলছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
গত কয়েকদিন আগেও অবৈধভাবে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সার চাঁদা উঠাতে দেখে শ্রীমঙ্গল শহরের এক ব্যবসায়ী নেতা বাধা দিলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের কতিপয় নেতার সাথে ঝগড়া হয় পরবর্তীতে উত্তর ব্যবসায়ী নেতার কাছে ওয়াদাবদ্ধ হয়ে আসে যে আর কখনো চাঁদাবাজি ও টোকেন ব্যবসা করবে না বলে জানা যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে, আবাসিক মিটার ও চোরাই সংযোগের মাধ্যমে এসব রিক্সার ব্যাটারি চার্জ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের বিরুদ্ধেও। বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের (পিডিবি) এক শ্রেণির অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসোহারা দেওয়ার ফলে চোরাই বিদ্যুৎ লাইনের মাধ্যমে রিক্সার ব্যাটারিতে চার্জ দিয়ে থাকেন। এ ধরণের অভিযোগও কম নয়। যেহেতু ব্যাটারি চালিত রিক্সা দৈনিক ভাড়া ২০০ /২৫০ /৩০০ টাকা আর সাধারণ রিক্সার দৈনিক ভাড়া ৪০/৫০ টাকা।
শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ সুত্র জানা যায়, ‘পুলিশের তৎপরতার কারণে ব্যাটারী চালিত রিক্সা কমেছে। পরে সময় করে অভিযান আরো জোরদার করা হবে।
শ্রীমঙ্গলের ট্রাফিক অফিস সুত্রে জানা যায় , ‘জনবল সংকট থাকায় উপজেলার বাজারের প্রধান রাস্তাগুলোর মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক ও অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে খুব শিগগির তবে আমরা নিতে চাইলেও পারিনা এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের কারনে।
সচেতন মহলের একাংশ জানান, গরিব মানুষেরা বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা না করে ধার দেনা করে অটো রিক্সা কিনে অবৈধ যান চালানোর কাজ করছে তা সত্যিই দুঃখজনক। এদের উচিত ছিলো ভিন্ন পেশায় যাওয়া, কেননা এটাতে খুব বেশি ঝুঁকি রয়েছে ।
এ প্রসঙ্গে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, ‘উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ও অলিগলিতে ব্যাটারী চালিত নিষিদ্ধ অটো রিক্সা চলছে বলে মৌখিক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। জনগণের স্বার্থে এসব বন্ধে শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com