মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের খবর :
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের দক্ষিণ ও মধ্য বেগুনবাড়ি প্রধান সড়ক-ফুটপাত ভাঙাচোরা এবং এবড়োখেবড়ো হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাগুলো সংস্কার না করায় জনদুর্ভোগ বাড়ছে।
সড়কে একাংশ দখল করে বসানো হয়েছে বাজার ও রিকশার গ্যারেজ। নেই কোনো স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা। সামান্য বৃষ্টি হলে সড়কে পানি জমে থাকে।
যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনায় দুর্গন্ধ ও জনদুর্ভোগ বেড়েই চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক ও ফুটপাত বেহাল
থাকায় রাস্তায় রিকশা রাখা হচ্ছে। যানবাহন চলালের রাস্তা দিয়ে পথচারী চলাচল করছে। এতে প্রায় সময় ঘটছে দুর্ঘটনা। অভিযোগ রয়েছে, এসব রিকশার গ্যারেজ স্থানীয় রাজনীতিক নেতাদের মদদে চলে।
এসব রাস্তার অধিকাংশ সড়কবাতি নষ্ট থাকায় সন্ধ্যা হলেই সৃষ্ট হয় ভুতুরে পরিবেশ।
সরেজমিন দেখা যায়, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার ডিপিকা মোড় থেকে বিটাক মোড় পর্যন্ত সড়ক ও চীনা ফ্যাক্টরি মোড়, কেন্দ্রীয় মাদকাশক্ত নিরাময় কেন্দ্র মোড়সহ আশপাশের কয়েকটি রাস্তায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
বেশির ভাগ ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি রিকশা-ভ্যানের গ্যারেজ। দীর্ঘদিন ধরে এসব সড়কের ফুটপাত অরক্ষিত থাকায় পথচারী হাঁটার কোনো পরিবেশ নেই।
দেখা যায়, শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি প্রধান সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের এসব রাস্তা ব্যবহার করা হয়।
দীপিকার মোড় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড অফিসার্স কোয়ার্টার ও পোস্ট অফিস বটতলা মোড় সড়কের বিভিন্ন অংশে খানাখন্দ হয়েছে।
কোথাও কোথাও জমে আছে আবর্জনার স্তূপ। ফুটপাতের বেশির ভাগ অংশ ভেঙে আছে। আর এ সুযোগে রাস্তার পশ্চিম পাশের ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে তৈরি হয়েছে অস্থায়ী বাজার।
স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াজ আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন এই রাস্তা ও ফুটপাতের কোনো উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। গত বছর সাত রাস্তা থেকে দীপিকা মোড় সড়কে সংস্কার করা হলেও অন্য সড়কগুলোর কোনো উন্নয়ন হয়নি।
রাস্তা ও ফুটপাত ভাঙাচোরা থাকায় দিন দিন অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। দোকানদার মো. জাকির হোসেন বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে এ রাস্তাগুলো খানাখন্দ ও ভাঙাচোরা থাকায় দিন দিন দুর্ভোগ বেড়েই চলছে।
অন্যদিকে কিছু প্রভাবশালীও রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে বাণিজ্য চালাচ্ছে। এতে প্রশাসনে কোনো ভূমিকা লক্ষ করা যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা সামিয়া রহমান বলেন, বিটাক-পোস্ট অফিস বটতলা-দীপিকা এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বহু যানবাহন চলাচল করে। এ সড়ক বাইপাস হিসেবে ব্যবহার করে।
সব সময় এসব রাস্তায় পথচারী ও যান চলাচলে চাপ থাকে। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা হলেও দক্ষিণ ও মধ্য বেগুনবাড়ি জনবসতি পূর্ণ এলাকা। পথচারী চলাচলের চাপ বেশি থাকে।
অথচ ফুটপাতগুলো চলাচলের অনুপযোগী। রাস্তার বিভিন্ন অংশে ভাঙাচোরা ও ময়লা পানি জমে থাকে। পলিটেকনিক ছাত্রাবাস মোড়ে দেখা যায়, রাস্তার দু’পাশে ফুটপাত ও সড়কের অধিকাংশ দখল করে রিকশার গ্যারেজ করা হয়েছে।
একাধিক পথচারী বলেন, সড়ক ও ফুটপাত ভাঙাচোরা এবং দখল থাকায় রাস্তা দিয়েই চলাচল করতে হয়।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আঞ্চলিক কার্যালয়-৩-এর নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সাইদুল রহমান বলেন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সব রাস্তা ও ফুটপাত উন্নয়নের জন্য একটি প্রকল্প করা হয়েছে।
রোড মেইন্টেনেন্স ও সড়ক নিরাপত্তা (আইডিআরএস) নামে তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের মাধ্যমের ধাপে ধাপে উন্নয়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের মধ্যে সড়ক ও ফুটপাত সংস্কার, স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা এবং সড়কবাতি রয়েছে।
গুরুত্ব অনুযায়ী ধাপে ধাপে সব রাস্তা ও ফুটপাত সংস্কার করা হবে। গুলশান এলাকার রাস্তাগুলোর আদলে উন্নয়ন করা হবে। যেখানে পথচারী চলাচলের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে।