সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
ধৃতরা হলো- মাদারীপুর জেলা সদরের শিলখাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলাম সরকারের ছেলে ও স্কুলের সহকারী শিক্ষক আশরাফুল আরিফ আশরাফুল (৩০) এবং ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানার বাকচর এলাকার মৃত শহিদুল্লাহ শেখের ছেলে অত্র স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকার (৫৫)।
এলাকাবাসীর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, অক্সফোর্ড হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আশরাফুল আরিফ গত ৮ বছর যাবৎ স্কুলটিতে গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে পাঠদান করে আসছিল। এর মধ্যে বিগত পাঁচ বছর যাবৎ বিভিন্ন সময় সে অসংখ্য ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে আপত্তিকর ছবি তুলে ধর্ষণ করে আসছিল। ছাত্রীদের কোচিং পড়নোর জন্য তার বাসা ছাড়াও স্কুলের পাশে বুক্স গার্ডেন নামক একটি এপ্যার্টমেন্টে ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়। তার স্ত্রী, সন্তান না থাকলেও ঐ ফ্ল্যাটে তিনটি খাট ছিল বলে জানায় ঐ ফ্ল্যাটের দারোয়ান। গত তিনদিন যাবত তার অনৈতিক কর্মকান্ডগুলো এলাকায় প্রচার হতে থাকে।
পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঐ স্কুলে গেলে আশরাফুল আরিফ তার মোবাইলে থাকা আপত্তিকর ছবিগগুলো মুছে ফেলে। এলাকাবাসী ঐ মোবাইল উদ্ধার করে এলাকার একটি মোবাইল দোকানে নিয়ে দোকানদারের সহায়তায় সফটওয়ারের মাধ্যমে ছবিগুলো উদ্ধার করে। এসময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়ে। পরে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঐ স্কুলে হামলা চালায়। এসময় স্কুলের লম্পট শিক্ষক আশরাফুল আরিফ ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারকে গণধোলাই দেয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকার লম্পট শিক্ষক আরিফকে সহযোগীতা করতো।
এলাকাবাসী জানায়, ২০০৩ সালে একই এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে কিন্ডার গার্টেন স্কুল প্রতিষ্ঠা করে রফিকুল ইসলাম জুলুফিকার। পরবর্তীতে ঐ স্কুলের লাভের টাকা দিয়ে বর্তমান স্কুলের জমিসহ ৪ তলা ভবনটি কিনে নেয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ৮ বছর পূর্বে এ স্কুলে গণিত ও ইংরেজীর শিক্ষক হয়ে আসেন আরিফুল ইসলাম। তার অপরাধমূলক কাজে সহযোগীতা করতো স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকার। গত তিনমাস পূর্বে স্কুলের এক শিক্ষিকার সাথেও ঐ শিক্ষক যৌনহয়রাণি করেছে। ঐ শিক্ষিকা এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিলে প্রধান শিক্ষক তাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানায়, তার মেয়ে ৫ম শ্রেণীতে পড়ার সময় ঐ শিক্ষকের দ্বারা যৌন লালসার শিকার হয়। ঐ মেয়ে এখন ৯ম শ্রেণীতে পড়ছে। এখনও লম্পট ঐ শিক্ষক থেকে পরিত্রান পায়নি আমার সন্তান। কিন্তু ঘটনার এত বছর পেরিয়ে গেলেও আমার সন্তান আমাকে না বলায় আমি এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারিনি। গত ২-৩ দিন পূর্বে এ ব্যাপারটি জানতে পেরে এলাকার কিছু যুবকদের জানিয়েছি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া স্কুল বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, আমি খবর পেয়েছি ঐ শিক্ষক মেয়েকে ব্ল্যাকমেইলিং করে মেয়ের মাকেও ধর্ষণ করেছিল।
র্যাব-১১’র অতিঃ পুলিশ সুপার মোঃ আলেপ উদ্দিন (পিপিএম) বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থেেল এসে তার মোবাইল থেকে ছাত্রীদের সাথে অনৈতিক কর্মকান্ডের অনেক ছবি ও ভিডিও উদ্ধার করেছি। তার মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। ২০ জনের অধিক ছাত্রীকে ঐ শিক্ষক ব্ল্যাকমেইল করে ধর্ষণ করেছে। যা প্রথামকিভাবে ঐ শিক্ষক আমাদের কাছে শিকার করেছে।