সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন
কালের খবর রিপোর্ট :
ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ নিতে বলা হয়েছিল বলে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর । ভিপি নুর বলেছেন, কমিটির পক্ষ থেকে এক নম্বর সহসভাপতি, এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ নিতে অফার করা হয়েছিল। ছাত্রলীগের সেক্রেটারি গোলাম রাব্বানী আমাকে এ প্রস্তাব করেছিলেন।
বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বগুড়ায় তার ওপর হামলার প্রতিক্রিয়া জানাতে নুর সংবাদ সম্মেলন ডাকেন।
নুরুল হক নুর বলেন, তারা আমাকে সবসময় বলেছেন- ছাত্রলীগের রাজনীতি করলে তারা সব সুযোগ-সুবিধা দেখবে। আমি যেন অন্য কোনো রাজনীতি না করি বা অন্যদিকে না যাই।
ছাত্রলীগের সঙ্গে একমত হতে না পারায় বগুড়ায় তার ওপর হামলা অভিযোগ করে ডাকসু ভিপি বলেন, তাদের সঙ্গে আমি যাইনি। তাদের সঙ্গে একমত হতে পারিনি, বিধায় তারা পরিকল্পিতভাবে আমার ওপর হামলা চালাচ্ছেন। আমি আমার জীবন ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।
হামলাকারীদের বিচার দাবি করে ভিপি নুর বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করতে চাই, ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ঐতিহ্যবাহী একটি সংগঠন। যারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করছে তাদের যেন তিনি বিচারের আওতায় নিয়ে আসেন।
নুর বলেন, ‘যেদিন ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হয়েছি, সেদিনও ছাত্রলীগ টিএসসিতে আমার ওপর হামলা করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনার সময় আমি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম, তারা বলেছিলেন- ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু দুঃখজনক ঘটনা, পরের দিন বগুড়ায় একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। আমাকে হত্যা করার জন্য ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা এ ধরনের হামলা করানো হচ্ছে।
বগুড়ায় হামলার বর্ণনা দিয়ে নুরুল হক নুর বলেন, সেদিন আমাদের সঙ্গে যারা ছিল তাদের ওপর জঙ্গি হামলার মতো হামলা করা হয়েছে। হামলার একপর্যায়ে আমি পড়ে গেলে আমার সঙ্গী রাতুল ও সোহেলকে রড দিয়ে তারা পেটায় এবং আমার বাম পায়ে ইট দিয়ে আঘাত করে। পবিত্র রমজান মাসে তারা এ ধরনের হামলা করে প্রমাণ করেছে, তারা একটি সাম্প্রদায়িক শক্তিতে পরিণত হচ্ছে।
পূর্বাপর হামলার সঙ্গে সাম্প্রতিক হামলার যোগসূত্র টেনে নুর বলেন, তাদের সাম্প্রতিককালের কর্মকাণ্ড জঙ্গিদের মতো মনে হচ্ছে। পহেলা বৈশাখে তারা বাঙালির একটি উৎসবে অগ্নিসংযোগ করেছিল। ছাত্রলীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন এ ধরনের কাজ করে আমার কাছে মনে হয় তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে সরে গিয়ে সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি কার্যক্রমের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত রোববার বগুড়ায় ইফতার ও দোয়া মাহফিলে যোগ দিয়ে হামলার শিকার হন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সঙ্গীরা। ওই দিন বিকালে শহরের পৌর পার্কের উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তন চত্বরে হামলায় নুরসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। পরে পুলিশ নুরকে উদ্ধার করে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইফতার পার্টিতে যেতে নুরকে বাধা দেয়ার একদিন পরই এ ঘটনা ঘটে।