বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৮ অপরাহ্ন
ডাকসু নির্বাচনঃ এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা
ডাকসু নির্বাচন :
ক্স ৬ জুন, ১৯৯০ সর্বশেষ নির্বাচন
ক্স ২১ মার্চ, ২০১২
২৫ শিক্ষার্থীর আদালতে রিট।
ক্স ২৫ নভেম্বর, ২০১৭
ওয়ালিদ নামে এক শিক্ষার্থীর অনশন।
ক্স ১৭ জানুয়ারী, ২০১৮
৬ মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ।
ক্স ৬ জানুয়ারী, ২০১৯
হাইকোর্ট বলেছে মার্চে নির্বাচনে আইনগত বাধা নেই।
আব্দুল হালমি নশিাণ ও রাজিবুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরেঃ
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে অচলাবস্থা কেটে যাওয়ার পর থেকেই বিরোধী সকল পক্ষই এখন এক যোগে ভোটের সুষ্ঠ পরিবেশ চাচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী রাজনীতিতে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় পরিবারে ডাকসু নির্বাচনের চরম হাওয়া বইছে জোরেশোরে।
দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ ঝিমিয়ে পড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রানের সঞ্চার করেছে। বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সব ছাত্র সংগঠনের নেতাদের ডেকে আলোচনা, রিটানিং কর্মকর্তা নিয়োগ, খসরা ভোটার তালিকা প্রকাশ, গঠনতন্ত্র সংশোধন, আচরনবিধী প্রনয়নে কমিটি এবং দুই দফায় পরিবেশ পরিষদের সভা হওয়ার পর নির্বাচন নিয়ে সংশয় অনেকটাই কেটে গেছে।
অধ্যাপক মোঃ আখতারুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচাযর্, গত ২১ শে জানুয়ারী সোমবার ১৩টি ছাত্র সংগঠনের সভাপতি-সাধারন সম্পাদক ও বিশ^বিদ্যালয় শাখার সভাপতি-সাধারন সম্পাদকদের নিয়ে দ্বিতীয় দফা পরিবেশ পরিষদের বৈঠক করেছেন। আবসিক হলগুলোর প্রাধ্যক্ষ ও ডাকসু নির্বাচনের জন্য গঠিত বিভিন্ন কমিটির সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে বৈঠকে সকল শিক্ষার্থী সংগঠনের নেতারা বলেছেন, প্রশাসনের উদ্যেগে তারা নির্বাচন হওয়ার আস্থা পাচ্ছেন। তবে সুষ্ঠ নির্বাচন নিয়ে সরকার বিরোধী শিক্ষার্থী সংগঠনগুলোর শঙ্কা কাটছেনা।
বৈঠকে উপস্থিত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক আকরামুল হাসান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “বিশ^বিদ্যালয়ের সর্বত্র সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত হতে হবে। অন্যথায় নির্বাচন প্রহসনে রুপান্তরিত হবে”।
এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন,“কোন ছাত্র সংগঠনের বৈধ ও নিয়মিত শিক্ষার্থীরা হলে থাকলে ছাত্রলীগ কোন বাধা প্রদান করবে না।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাসদ সমর্থিত ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নেতারাও হলে সহাবস্থান, একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র, সভাপতি ও সহ-সভাপতির (ভিপি) ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
ভোটার ও প্রার্থী হতে পারবেন কারাঃ
তফসিল ঘোষনার দিন পর্যন্ত যেসব শিক্ষার্থীর বয়স ৩০ বছরের মধ্যে থাকবে, শুধু তারাই ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভোটার হতে পারবেন। তবে পিএইচডি বা সন্ধ্যা কালীন কোন কোর্সে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা ভোটার ও প্রার্থী হতে পারবেন না। তাদের বয়স ৩০ এর কম বা বেশী যাই হোক। ২৯ জানুয়ারী মঙ্গলবার বিশ^বিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে বিশ^বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বলেন, ৩০ বছরের বেশী বয়সী কোন শিক্ষার্থী ভোটার হওয়ার সুযোগ পাবেন না। এছাড়া অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থী, সন্ধ্যা কালীন কোর্স, পিএইচডি, প্রফেসনাল, এক্সিকিউটিভ, স্পেশাল মাস্টার্স, ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স, সার্টিফিকেট কোর্স বা এ ধরনের অন্যান্য কোর্সের শিক্ষার্থীরা ভোটার বা প্রার্থী কোনটাই হতে পারবে না।
¯œাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তির পর ¯œাতকোত্তর বা এমফিলে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা (বয়স ৩০এর নীচে) ভোটার ও প্রার্থী হতে পারবেন।
এছাড়া আবাসিক হলের ভোট কেন্দ্র আবাসিক হলেই থাকবে।
হলে ভোট কেন্দ্র করার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিকছাত্র ফ্রন্ট ও ছাত্র ফেডারেশনের নেতারা। বামপন্থী প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতারা হলের ভেতরে ভোটকেন্দ্র করার যে সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেট নিয়েছে, তাকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে।
সংগঠনের বিশ^বিদ্যালয় শাখার সাধারন সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে এখন তাদের একমাত্র দাবি দ্রুত ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করা। ডাকসু নির্বাচনের বৃহত্তর স্বার্থে সব প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনকে দায়িত্বশীল আচরন করার আহ্বান জানান। তিনি আরও জানান, ইতিপূর্বে ১৭ই জানুয়ারী ডাকসু নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য বিশ^বিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগের অধ্যাপক এস. এম. মাহফুজুর রহমানকে প্রধান রিটানিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেন উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি অধ্যাপক মোঃ আখতারুজ্জামান।