মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩১ অপরাহ্ন
কালের খবর প্রতিবেদক : একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নোয়াখালীর সুধারামের আমির আলীসহ তিন রাজাকারের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া রায়ে একজনের ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার কিছু আগে বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ১৫০ পৃষ্টার রায় পড়া শুরু হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জামায়াত নেতা আমির আলী, মো. জয়নাল আবদিন ও আবুল কালাম ওরফে একেএম মনসুর। তাদের মধ্যে মনসুর পলাতক। অন্য আসামি মো. আব্দুল কুদ্দুসকে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
রায় ঘোষণা শুরুতে নেপালের কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের প্লেন বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের প্রতি গভীরশোক, দুঃখ ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেছে করেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষে এ মামলা সিএভি (রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ) রাখা হয়।
২০১৫ সালের ৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানান প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম। ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে ওই দিনই নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর থেকে গ্রেপ্তার হন আমির আহম্মেদ ওরফে রাজাকার আমির আলী, জয়নাল আবদিন ও ইউসুফ আলী। পরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয় আব্দুল কুদ্দুসকে। পরে ওই বছরের ১৪ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে পলাতক আবুল কালাম ওরফে এ কে এম মনসুরকে আত্মসমর্পণে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও তিনি আত্মসমর্পণ করেননি বা গ্রেপ্তার হননি। মনসুর পালিয়ে থাইল্যান্ড চলে গেছেন বলে নিশ্চিত হয়েছেন প্রসিকিউশন।
২০১৪ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে গত বছরের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত এ মামলায় পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন। গত বছরের ৩১ আগস্ট তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওই দিনই প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেয় তদন্ত সংস্থা।
২০১৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নোয়াখালীর সুধারামে ১১১ জনকে হত্যা-গণহত্যার তিনটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০১৬ সালের ২০ জুন অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ চারজনের বিচার শুরু হয়। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষ ট্রাইব্যুনাল আজ রায় ঘোষণা করেন।