শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ কক্সবাজার জেলা কমিটির অনুমোদন । আরজেএফ’র উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল সম্পন্ন। কালের খবর মসজিদ উন্নয়নের কাজে অনিয়মের অভিযোগ। কালের খবর সাতক্ষীরায় ভারত থেকে অবৈধ পথে ফেরার সময় চার বাংলাদেশী আটক। কালের শেখ হাসিনার গাড়িবহরে মামলার সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার। কালের খবর পূর্বগ্রাম ব্লাড ডোনার গ্রুপের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত। কালের খবর ব্রয়লারের চেয়ে চাহিদা বেশি বাউ মুরগির, খুশি খামারিরা নবীনগরে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই সহোদর চাচাতো বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু। কালের খবর প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ। অটো মালিক, শ্রমিক সমিতির চেক বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত। কালের খবর
অপরাধে যুক্ত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না : প্রধানমন্ত্রী

অপরাধে যুক্ত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না : প্রধানমন্ত্রী

সংসদ থেকে এম আই ফারুক আহমেদ : প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আমরা চাই দেশ এগিয়ে যাক, উন্নত হোক। আমরা চাই না দেশকে নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলুক। কেউ দুর্নীতি করলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে। অপরাধী যেই হোক, শাস্তি তাকে পেতেই হবে। অপরাধে যুক্ত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না।

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায়কে সামনে রেখে বিএনপির গঠনতন্ত্র সংশোধনীর কঠোর সমালোচনা করে সংসদ নেতা বলেন, বিএনপি নেত্রী কারাগারে যাবেন এটি আগেই টের পেয়ে গেছে কিনা জানি না। রায় হওয়ার আগেই রাতারাতি বিএনপি তাদের দলীয় গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা পরিবর্তন করে নিয়েছে। এই ধারায় দুর্নীতিগ্রস্ত কিংবা সাজাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি নেতা হতে পারত না। রাতারাতি গঠনতন্ত্র সংশোধন করে বিএনপি দুর্নীতিকেই মেনে নিল, দুর্নীতিগ্রস্তকে নেতা হিসেবে মেনে নিল। যে দল দুর্নীতিকে নীতি হিসেবে গ্রহণ করে, অর্থাৎ দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্তকে নেতা হিসেবে মেনে নেয় সেই দল দেশকে কী দিতে পারে? স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ অধিবেশনে দশম জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ সমাপনী ভাষণে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর স্পীকার রাষ্ট্রপতির অধিবেশন সমাপ্তির আদেশটি পাঠ করার মাধ্যমে শীতকালীন অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

সমাপনী ভাষণের অংশ নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতের রায় প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদালত রায় দিয়েছে, এখানে সরকারের তো কোন হাত নেই। জজ সাহেব রায় দিলেন কেন সেজন্য অনেক বিএনপি নেতা হুমকিও দেন। তবে কী অপরাধীদের অভয়ারণ্য হবে বাংলাদেশ? এটা তো আমরা হতে দিতে পারে না। যেই হোক, অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হলে কাউকে ছাড় দেব না। জনগণের ভোটের অধিকার জনগণ ভোগ করবে। দুর্নীতিকে আমরা প্রশ্রয় দেই না। নিজেদের লোককেই কোন ছাড় দেই না। এমনকি আমাদের মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উঠলে যে কোন সময় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। আদালত থেকেও ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) স্বাধীনভাবে কাজ করছে। আমরা আইন মানি, কখনও নিজেদের দোষকেও ঢাকার চেষ্টা করি না।

তিনি বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে যে মামলা (জিয়া অরফানেজ) দিয়েছে, সেই একই ধরনের মামলা আমার বিরুদ্ধেও ওই সময় দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সকল কাগজপত্র পরীক্ষা করেছে, এতটুকু ফাঁক পাওয়া যায় কিনা। শত চেষ্টা করেও ট্রাস্টের এতটুকু অনিয়ম তারা পায়নি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ট্রাস্ট থেকে প্রতি মাসে ১৬ থেকে ১৭শ’ শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হয়। কিন্তু কোন অনিয়ম না পেলেও ওই সময় ট্রাস্টের এ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে করে ওই সময় অনেক শিক্ষার্থীর জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে, টাকার অভাবে গ্রেনেড হামলায় আহত অনেকেই পঙ্গু হয়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিএনপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দায়েরকৃত কোন মামলাই প্রত্যাহার করতে দেইনি। স্পষ্ট বলেছি প্রত্যেকটি মামলার তদন্ত হোক, কোথাও এতটুকু ত্রুটি ধরা পড়লে আমি বিচারের মুখোমুখি হবো। কারণ আমরা রাজনীতি করি নিজের ভাগ্য গড়তে নয়, জনগণের ভাগ্য গড়তে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও জীবনযাত্রা উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করি।

সংসদ নেতা প্রশ্ন রেখে বলেন, এতিমদের জন্য টাকা এসেছিল ২৭ বছর আগে, কিন্তু সেই এতিম টাকা কোথায়? তখনকার দিনে ২ কোটি টাকার অনেক মূল্য ছিল। ওই সময় দুই কোটি টাকা দিয়ে ধানম-িতে ৭-৮টি ফ্লাট কেনা যেত। সেই টাকার লোভ বিএনপি নেত্রী সামলাতে পারেননি। এতিমের হাতে একটি টাকাও তুলে দেননি, পুরো টাকাই মেরে খেয়েছেন। অন্যদিকে আমাদের কিছুই নেই। তবুও আমরা দুই বোন আমাদের পৈত্রিক বাড়িটিও জনগণের জন্য দান করে দিয়েছি। অথচ বিএনপি নেত্রী এতিমের দুই কোটি টাকার লোভ সামলাতে পারলেন না। তিনি বলেন, মামলা করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশন। এখানে আমাদের সরকারের দোষ কোথায়? খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে ১০৯ বার সময় নেয়া হয়েছে, ১০ বছর ধরে চলেছে এ মামলা। এরপর শাস্তি হয়েছে। শুরুতেই এতিমের টাকা দিয়ে দিলে তো এই মামলা চলত না। কিন্তু লোভ সামলাতে পারেনি বলেই আজ এ অবস্থা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু বিএনপি নেত্রীই নন, তাঁর পুত্র তারেক রহমানের পাচারকৃত অর্থ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ধরা পড়েছে। সিঙ্গাপুরে তাঁর আরেক পুত্রের কোকোর টাকা ধরা পড়ে। বিএনপির নেত্রীর পুত্রদের অর্থ পাচারের তথ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। আমরা ধরা পড়া সেসব টাকা দেশে ফেরত এনেছি।

বিএনপির গঠনতন্ত্র সংশোধন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে যাবে এটা বিএনপি নেতারা আগেই বুঝতে পেরেছেন কিনা জানি না। কিন্তু রায়ের আগেই রাতারাতি দলটির গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হলো। গঠনতন্ত্র সংশোধন করে বিএনপি দুর্নীতিকেই গ্রহণ করল, দুর্নীতিবাজকেই গ্রহণ করল। তিনি বলেন, যে রাজনৈতিক দল দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজকে গ্রহণ করে, সেই দল কীভাবে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে? এরা হত্যা-দুর্নীতি-লুণ্ঠন-অর্থপাচার এ সবই করতে পারে, জনগণের কল্যাণ করতে পারে না। তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী জেলে যাওয়ার পর যাকে দায়িত্ব দেয়া হলো সেও দ-প্রাপ্ত পলাতক ফেরারি আসামি। বিএনপির নেতৃত্বে কী একজনও ছিল না যে তাকে দায়িত্ব দিতে পারত?

তিনি বলেন, বিএনপির অধিকাংশ নেতার নামেই দুর্নীতির মামলা রয়েছে। কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা রয়েছে, কেউ কেউ সাজাপ্রাপ্ত। বিএনপি নেতা জানেন, যাদের দায়িত্ব দেবেন তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির মামলা রয়েছে। বিএনপির সবাই তো দুর্নীতিগ্রস্ত, সবার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। যদি তাই না হয়ে থাকে তাহলে বিএনপি নেত্রী দলে একজনকেও খুঁজে পেলেন না যাকে দায়িত্ব দিয়ে যাবেন। সবকিছু জেনেই বিএনপি নেত্রী যদি দ-প্রাপ্ত তারেক রহমানের হাতে দায়িত্ব দিয়ে থাকলে কোন কিছু বলার নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রে রাজনীতি শুরু হয়। ১৯টি ক্যু হয়েছে, হাজার হাজার সামরিক অফিসার সৈনিককে হত্যা করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে রাজনীতিতে পুনর্বাসন এবং মন্ত্রী-উপদেষ্টা পদে বসানো হয়েছিল। এটাই জাতির দুর্ভাগ্য। লাখো শহীদের রক্ত¯œাত জাতীয় পতাকা তুলে দেয়া হলো একাত্তরের গণহত্যাকারী, মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের হতে। দেশকে চালানো হয় উল্টোপথে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন তবে স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতো।

তিনি বলেন, যারা হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল, তারাই বড় গলায় বলে বেড়ায় তারা নাকি বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছিল! তাদের বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে প্রতি রাতে কারফিউ চলত। জনগণতন্ত্র নয় তারা কারফিউ গণতন্ত্র দিয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের ভোটের অধিকর ও রাজনীতির অধিকার ফিরিয়ে দেয়াই ছিল তাদের বহুদলীয় গণতন্ত্র। তখন স্বাধীন দেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা হয়েছিল। স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি তারাই এসব ষড়যন্ত্র করেছে। কেন বাঙালী বিজয় অর্জন করল তারই প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হচ্ছিল। তিনি বলেন, জেনারেল জিয়া ছিল খুনী মোশতাকের মূল বিশ্বাসভাজন। এ কারণেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াকে সেনাপ্রধান করা হয়। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জেনারেল জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার না করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করে।

তিনি বলেন, এখন একটা হত্যাকান্ড হলে বিচারের জন্য অনেক কথা বলা হয়। পিতা-মাতা-ভাইসহ পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হলেও আমাদের দুই বোনের বিচার চাওয়ার কোন অধিকার ছিল না। শুধু জিয়াই নয়, জেনারেল এরশাদও বঙ্গবন্ধুর খুনীকে রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী করেছিল। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, দেশে আরেকজন জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তি আছেন তিনি এখন বড় বড় কথা বলেন। আমি সংসদে একটি গাধার গল্প বলেছিলাম। এতে তিনি নাকি মনোক্ষুণœ হয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাঁদের মতো শিক্ষিত লোকদের গাধা বলা হয়েছে। আমি তো একটা গল্প বলেছিলাম মাত্র। এখন কেউ যদি নিজেকে গাধা বলে মনে করেন সেখানে আমার তো কোন কিছু করার নেই।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর টাকায় ইত্তেফাক গঠন হয়েছিল। এটা আওয়ামী লীগেরও সম্পদ। অথচ সেই ইত্তেফাকের টাকায় বঙ্গবন্ধুর খুনীদের নিয়ে ওই ব্যক্তিটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছিল। আজ সেই ব্যক্তির মুখে এখন গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়, গণতন্ত্রের সংজ্ঞা শুনতে হয়- এটাই দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন, এই ব্যক্তিটি আমার কাছে অনেকবার এসেছিলেন উপদেষ্টা হতে, আমি করিনি। এ কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আমার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হলো। মামলা মোকাবেলার জন্য জোর করে বিদেশ থেকে ফিরে আসি। তখন আমাকে ওই ব্যক্তিটি ফোন করে বলেছিল আমার দেশে ফেরার দরকার নেই। আমি বলেছিলাম, কেন আসব না। আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, আমি মামলা মোকাবেলা করব। তখন আমি বিরোধী দলের নেতা ছিলাম, কিন্তু আমাকেই প্রথমেই গ্রেফতার করে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেয়া হলো। রাজনীতি থেকে বিদায় করতে অনেক ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।

নির্বাচন নিয়ে প্রথম প্রহসন সৃষ্টি করার জন্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশে নির্বাচন নিয়ে খেলা শুরু করেন জেনারেল জিয়াউর রহমান। ‘হ্যাঁ-না’ ভোটে না ব্যালট খুঁজেই পাওয়া যায়নি। রাষ্ট্রপতি পদে শতভাগেরও বেশি ভোট দেখানো হলো। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে প্রথমে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে এবং পরে জনগণের ভোট চুরি করার পর জিয়াউর রহমান দল গঠন করেন। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাতে তৈরি দল অবৈধই হবে। সেই দলটি কখনও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। জাতির দুর্ভাগ্য বারবার আমরা সংগ্রাম করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনি, আবার একটা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে গণতন্ত্র হারাতে হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসনের একতরফা নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী কর্নেল রশিদ-হুদাকে ভোট চুরি করে জিতিয়ে বিরোধী দলের নেতা বানান জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া। এত বড় অন্যায় আল্লাহ’র আরশ কেঁপে যায়। মাত্র ৩০ দিনের মাথায় জনগণের আন্দোলনের মুখে খালেদা জিয়ার পতন ঘটে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা আসার পর সর্বপ্রথম দেশের জনগণ উন্নয়নের মুখ দেখে। আওয়ামী লীগ ছাড়া যারাই অতীতে ক্ষমতায় এসেছে তারা জনকল্যাণ করেনি, নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন করেছে, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। গ্যাস বিক্রিতে রাজি হয়নি বলে ২০০১ সালের নির্বাচনে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাঁচটি বছর ধরে তারা যে নির্যাতন করেছে তা কল্পনাও করা যায় না। আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি দখল করে রাতারাতি পুকুর করা হয়েছে। ভয়াবহ কায়দায় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করা হয়েছে। হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। মা-বোনদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছে। ৬৩ জেলায় একসঙ্গে বোমা হামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর গ্রেনেড হামলা হয়েছে। অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে প্রায় দেড়শ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। তারা ক্ষমতায় থেকে একদিকে অত্যাচার করেছে, অন্যদিকে সীমাহীন দুর্নীতি করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিকে আমরা প্রশ্রয় দিতে চাই না। আমাদের কোন মন্ত্রী-নেতা-এমপির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের সন্দেহ হলে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আদালতে হাজিরা দিচ্ছে। আমরা প্রশ্রয় দেই না। সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদকে আমরা কঠোর হস্তে দমন করছি। সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ-মাদকের বিরুদ্ধে সারাদেশে জনসচেতনতা সৃষ্টি করছি। তিনি বলেন, ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ হিসেবে পালন করতে চাই। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই। বাংলাদেশকে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলবই।

কালের খবর  -/১/৩/১৮

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com