মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২০ পূর্বাহ্ন
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি, কালের খবর :
পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ দাশুড়িয়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) সাজ্জাদুর রহমানের ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়া সংক্রান্ত একটি গোপন ভিডিও নিয়ে তুলকালাম শুরু হয়েছে। ঘুষ প্রদানকারী গ্রাহকের অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী সব টাকা পরিশোধ করার পরও ঘুষ না দেয়ায় সংযোগ চালু করেনি পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়ে টাকা দিতে গেলে সেখানে উপস্থিত এক ব্যক্তি ঘটনার ভিডিও করেন। গত শনিবার তা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পুরো বিষয়টি তাকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র দাবি করে থানায় অভিযোগ করেছেন ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমান। পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মো. আকমল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আলোচনায় এলে দাশুড়িয়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সাজ্জাদুর রহমানকে শোকজ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিভাগীয় তদন্তের জন্য আমি ঢাকায় পত্র প্রেরণ করেছি। দুই একদিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি পাঠাবে।’ ঘুষ প্রদানকারী আমিনুল ইসলাম রানা বলেন, ‘পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অন্তর্ভুক্ত দাশুড়িয়া জোনাল অফিসের আওতায় একটি বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আমি বেশ কিছুদিন আগে আবেদন করি। সরকার নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে বিদ্যুৎ সরঞ্জাম সংযোজনের পরও নানা অজুহাতে সংযোগ দিচ্ছিল না কর্তৃপক্ষ। ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমানকে ‘মিষ্টি খাওয়ার জন্য’ ১ লাখ টাকা ঘুষ দিলে সংযোগ দেয়া হবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
পরে ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করে গত ১৪ই সেপ্টেম্বর ডিজিএম সাহেবকে দিতে যাই। তিনি টাকা নিয়ে ড্রয়ারে রাখার সময় সেখানে উপস্থিত এক ব্যক্তি টাকা দেয়ার দৃশ্য ভিডিও করলে হাতে নেয়া টাকা ছুড়ে ফেলে দেন ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমান। ভিডিও ধারণকারী ব্যক্তিকে আমি চিনি না।’ এদিকে শনিবার এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়। এটিকে সংঘবদ্ধ চক্রের ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা বলে দাবি করেন ওই কর্মকর্তা। ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘বুধবার সকাল আনুমানিক ১০টায় দাশুড়িয়া পুরাতন ট্রাফিক মোড় এলাকার মো. আনিছুর রহমান ওরফে হামেজ উদ্দিনের ছেলে মো. আমিনুল ইসলাম রানা ৩-৪ জন ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে অফিসে আসেন। সেখানে হঠাৎ করেই ৫০ হাজার টাকার একটি বান্ডিল দিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করে। এ সময় আমি অন্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ডাকলে তারা দ্রুত পালিয়ে যান।’ সাজ্জাদুর রহমান আরও বলেন, ‘আমিনুল ইসলামের বাবা আনিছুর রহমানের নামে দাশুড়িয়া জোনাল অফিসে ৯ লাখ ৩ হাজার ৯৪৮ টাকা বকেয়া থাকায় মামলা চলমান রয়েছে। তাদের বকেয়া টাকা ৮ কিস্তিতে পরিশোধের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর চক্রান্ত করেছে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’ তবে বাবার বকেয়া বিলের সঙ্গে নতুন সংযোগের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেন রানা। তিনি বলেন, ঘুষ নেয়ার ভিডিওর জন্য সমালোচনার মুখে পড়ে ডিজিএম ‘আবোল-তাবোল’ বকছেন। ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, ‘এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। সেটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’