শফিকুল ভূুইয়া, সরিষাবাড়ী (জামালপুর ), প্রতিনিধি , কালের খবর :
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার মাহমুদা সালাম মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের দুইজন সহকারী অধ্যাপক ও একজন প্রভাষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সিইডিপি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট জালিয়াতি সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ১০ নভেম্বর (মঙ্গলবার) কলেজ গভর্ণিংবডির বৈঠকে তাদের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বরখাস্তকৃতরা হলেন- কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেশ চন্দ্র সূত্রধর, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ এবং সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক ইয়াসমিন সুলতানা।
কলেজের গভর্ণিংবডির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তিনজনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কলেজ শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইডিপি) অর্থ আত্মসাৎ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট জালিয়াতি, কলেজের বিভিন্ন খাতের অর্থ তছরূপ, টেণ্ডার ও য়োনিগ বানিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে। সম্প্রতি সিইডিপি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট টিম পরিদর্শন করে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওই তিনজনকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কলেজ সূত্র জানায়, ওই তিনজনই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনহীন স্থানীয়ভাবে নিয়োগকৃত শিক্ষক। এরমধ্যে অধ্যক্ষ রমেশ চন্দ্র সূত্রধর ২০০৩ সালে অনিয়মের দায়ে কলেজ থেকে বরখাস্ত হন। পরবর্তীতে ম্যানেজিং কমিটিকে হাত করে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হন। একইভাবে সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ এবং তার স্ত্রী প্রভাষক ইয়াসমিন সুলতানাও খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সাথে যোগসাজশে নানা অনিয়ম শুরু করেন।
এদিকে নিয়মানুযায়ী কোন নন-এমপিও শিক্ষক সিইডিপি প্রকল্পের সদস্য হতে না পারলেও তারা ক্ষমতার প্রভাবে ঐ প্রকল্পের সদস্য হন এবং যোগসাজশে অনিয়ম করে সিংহভাগ টাকা হাতিয়ে নেন। সিইডিপি প্রকল্পের পরিচালক (যুগ্ম সচিব)কে এএম মুখলেছুর রহমান স্বাক্ষরিত গত ৩১ আগস্টের এক প্রতিবেদনে অধ্যক্ষ ও প্রকল্পের ম্যানেজারকে ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিধি বহির্ভূত ব্যয়কৃত এক লাখ ১৩ হাজার ১০১ টাকা ফেরতে প্রদানের নির্দেশ দেন।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নূরুন নাহার জানান, তিন শিক্ষকের নামে অব্যাহতির পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
এ ব্যাপারে বরখাস্তকৃত তিন শিক্ষকের মন্তব্য জানতে তাদের মুঠোফোনে চেষ্টা করা হলেও তিনজনের মোবাইলই বন্ধ পাওয়া যায়।