রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২২ পূর্বাহ্ন
পরিমল চন্দ্র বসুনিয়া,লালমনিরহাট প্রতিনিধি, কালের খবর : লালমনিরহাটের সদর উপজেলায় বিপুল পরিমান সরকারি ঔষধ ও মেডিকেল সরঞ্জামাদিসহ এক দম্পতিকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জেলার কমিউনিটি ক্লিনিক ও হাসপাতাল গুলোতে তোলপাড় চলছে।
মঙ্গলবার (২৩ জুন) বিকাল সাড়ে ৫টায় জেলা শহরের ড্রাইভারপাড়া রেলওেয়ের একটি ভাড়া বাসা থেকে ওইসব সরকারি ঔষধ ও মেডিকেল সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
আটককৃত দম্পতি হলেন, গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধুমরাইটারী এলাকার মমতাজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রেজা মিয়া (৪৫) এবং লালমনিরহাট সদর উপজেলার খোচাবাড়ী এলাকার হাবিবুর রহমানের মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিন (৩৮)।
এছাড়া রেজা মিয়া ১৯৯৬ সালে গ্রামীন ব্যাংকের কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী শাখা থেকে অফিস সহায়কের পদ থেকে চাকুরিচ্যুত হন। পরে লালমনিরহাটে চলে আসেন এবং নিলুফা ইয়াসমিনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর শহরের ড্রাইভারপাড়া কলোনীর একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছেন।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান সরকারি ঔষধ ও ওজন মাপার মেশিন, ডায়াবেটিকস চেক আপ মেশিন, মাস্কস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, প্রেসার মাপার মেশিন উদ্ধার করা হয়। এ সময় ওই দম্পতিকে আটক করেন পুলিশ। এছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজনের উপস্থিতিতে থানায় জব্দ হওয়া ঔষধ ও মেডিকেল সরঞ্জামাদি সিজার লিস্ট করে মুল্য নির্ধারনে কাজ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে পুলিশের হাতে আটক আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রেজা মিয়ার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায় ৫/৬ বছর থেকে তিনি সরকারি ঔষধ ক্রয় করে রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করে আসছেন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের লোকজনের সহায়তায় ট্যাবলেট, ক্যাপ্সুল, স্যালাইন, ইনজেকশন ও ডিজিটাল বডি ইলেক্ট্রনিক স্কেল মেশিন সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনে নিয়ে বাইরে বিক্রি করেন তিনি।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করা কালীন সময়ে হাসপাতালের ষ্টোর থেকে কোন ঔষধ চুরি বা পাচারের ঘটনা ঘটেনি। যেহেতু সরকারি ঔষধ উদ্ধার করা হয়েছে তাই তিনি যথাযথভাবে ষ্টোর রুম তল্লাশী করবেন।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় বলেন, বিষয়টি শুনেছি। সে সব ঔষুধ ও মেশিন লালমনিরহাটের হাসপাতাল ও ক্লিনিকের কিনা তা খতিয়ে দেখার মৌখিক নির্দেশ দিয়েছি। যদি লালমনিরহাট জেলার কোনো সরকারি হাসপাতালের হয়ে থাকে তাহলে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজ আলম বলেন, ওষুদের গায়ে ডিজিটাল বডি ইলেকট্রনিক স্কেল মেশিনের মোড়কের উপর সরকারি সম্পত্তি লেখা রয়েছে।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লালমনিরহাটের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে কিনেছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। আশা করি জড়িতদের খুজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।