শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সিরাজগঞ্জে খিরা চাষে লাভবান কৃষক, খিরা যাচ্ছে সারাদেশে। কালের খবর তীব্র গরমে পথচারীদের সুপেয় পানি সরবরাহ করছে ফায়ার সার্ভিস। কালের খবর সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করে পশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে। কালের খবর সমাজে “শান্তি স্থাপন ও সহিংসতা নিরসনে — সাতক্ষীরায় তাপদাহে রিকশাচালকদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতারণ। কালের খবর প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে বাগান, ঝরছে আম, শঙ্কায় চাষীরা। কালের খবর ট্রাফিক-ওয়ারী বিভাগ যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে। কালের খবর মারামারি দিয়ে শুরু হলো ‘খলনায়ক’দের কমিটির যাত্রা। কালের খবর কুতুবদিয়ার সাবেক ফ্রীডম পার্টির নেতা আওরঙ্গজেবকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন। কালের খবর সাতক্ষীরায় লোনা পানিতে ‘সোনা’ নষ্ট হচ্ছে মাটির ভৌত গঠন। কালের খবর
নাঙ্গলকোটে সংশপ্তক ত্রাণ বিতরণের নামে জনগণের টাকা নিয়ে হরিলুট । কালের খবর

নাঙ্গলকোটে সংশপ্তক ত্রাণ বিতরণের নামে জনগণের টাকা নিয়ে হরিলুট । কালের খবর

ডেক্স রিপোর্ট,কালের খবর :-
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে করোনা মহামারিতে মানুষকে সহযোগিতা ও সচেতনতার লক্ষ্যে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন ‘সংশপ্তক’
ত্রাণ বিতরণের জন্য নাঙ্গলকোটের জনসাধারণ থেকে টাকা উত্তোলন করে হরিলুট করার অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ উঠার পর এই প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে দ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

জানা যায়, করোনা মোকাবিলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলামের সমন্বয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত নাঙ্গলকোট উপজেলার শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন হিসেবে ‘সংশপ্তক’ গঠিত হয়। এরপর উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়নে ১৭টি টিম গঠন করে গত ২৯ মার্চ থেকে তিনি নাঙ্গলকোটের বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গের কাছ থেকে স্থানীয় সাংসদ ও মাননীয় অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল লোটাস কামালের নাম বলে ত্রাণ বিতরণের নামে অর্থ ও পণ্য কালেকশন শুরু করেন।
গত ৮ ডিসেম্বর জহিরুল ইসলাম তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি ও সংশপ্তকের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেন- সংশপ্তক টিমের বাজেট ৮,৮০,০০০ টাকা, মোট কালেকশন ৬,৭৯,৫২০ টাকা, এখনো ঘাটতি ২,০০,৪৮০ টাকা। এর ১০ দিন পর ১৯ মার্চ আবার পোস্ট করলেন, সংশপ্তক টিমের কালেকশন ৫,৯৭,১২০ টাকা। যেখানে ১০ দিন পর টাকার পরিমাণ বাড়ার কথা সেখানে তিনি ৮২’৪০০ টাকার হিসাব কম দিয়েছেন।

এনিয়ে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন ব্যক্তি তার দুটি পোস্টের স্ক্রিনশর্ট দিয়ে ‘সংশপ্তক’ এর সমন্বয়কের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন। এ নিয়ে সমম্বয়ক জহিরুল ইসলাম ওইদিন রাতেই ফেসবুক লাইভে এসে সাংবাদিকদের নিয়ে বাজে অপপ্রচার চালায়। পরে আবার রাতেই তিনি তার আইডি থেকে লাইভ ভিডিওটি ডিলেট করে দেন।
পরেরদিন ২০ মার্চ সকালে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার লামইয়া সাইফুল এর কাছে তাদের আয়-ব্যায়ের হিসাব প্রদান করে তা ফেসবুকে প্রকাশ করে।

তাদের দেয়া হিসাব বিশ্লেষণ করে জনগণের টাকা হরিলুট করার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। হিসাব দেখে মনে হয় সংশপ্তক আত্মমানবতার সেবার নামে জনগণের টাকায় বনভোজন করেছেন।

তাদের কিছু হিসাব অনুযায়ী বিষয়টিরর সু-স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।
যেমন- সমম্বয়ক জহিরুল ইসলামের হিসাবে, ১ বক্স নরমাল হ্যান্ড গ্লাভসে ২০৯০ টাকা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বাবদ ৯৫০ টাকা, তরমুজ অ্যাপ্যায়ন ৬০০ টাকা, ডাব বাবদ ৪৪০ টাকা, যাতায়াত ১৭৩০ টাকা, রাকিব মজুমদার ও ইউসুফ ভূঁইয়ার বাড়িতে যাতায়াত ১০০০টাকা, অ্যাপ্যায়ন বাবত খরচ ৭২০ টাকা, বাইক তেল ৬০০ টাকা, মোবাইল বিল ৮০০ টাকা এবং নাঙ্গলকোট পৌরসভা টিম প্রধান সাইফুল ইসলাম এর হিসাবে, রিক্সা ও বিবিধ ৪০০ টাকা, ১৩ এপ্রিল বাজার ২৮৯৫ টাকা, জাবেদ বিবিধ ৫০০ টাকা। মৌকরা টিম প্রধান আব্দুল মালেক ৭০০ টাকা, দৌলখাঁড় টিম প্রদান আকরাম ২৫০০ টাকা, বক্সগন্জ টিম প্রধান শাহজালাল ১২০০ টাকা, সাতবাড়িয়া টিম প্রধান সাইফুল ৯০০ টাকা, হেসাখাল টিম প্রধান ১০০০ টাকা, জোড্ডা পশ্চিম টিম প্রধান ১৫২০ টাকা ব্যক্তিগত খরচ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশপ্তক টিমের একাধিক সদস্য বলেন – আজকের হিসাব দেখে বুঝলাম, সংশপ্তকের সাথে যুক্ত হয়ে ভুল করেছি। সমন্বয়ক যেভাবে হিসাব দিয়েছেন তাতে বুঝা যায়, স্বেচ্ছায় সেবা নয়! জনগণের টাকায় তিনি ব্যবসা করতে এসেছেন। আমরা দেখেছি, তিনি বা অন্য টিম প্রধানরা যেখানে গিয়েছেন, সবাই মটর সাইকেল করে যাতায়াত করেছেন। কিন্তু তারা ভাড়া বাবত (১৭৩০+১০০০=২৭৩০) টাকা, আবার বাইকের তৈল খরচও হিসাবে দিয়েছেন। এছাড়া অ্যাপ্যায়ন বাবত তিন দাগে ১৭৬০ টাকা, যা আমরা দেখিনি, নরমাল ১বক্স গ্লাভস উল্লেখ করেছেন ২০৯০ টাকা, যার দাম ৫০০ টাকার বেশী হবেনা। হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ বাবত ৯০০ টাকা, যা বিতরণ করা হয়নি। আমাদের পৌরসভা টিম প্রধান সাইফুল যে হিসাব দিয়েছেন- রিক্সা ও বিবিধ ৪০০ টাকা, ১৩ এপ্রিল খরচ ২৮৯৫, জাবেদ ২০০, বিবিধ ৫০০ টাকা এবং অন্যান্য টিম প্রধানদের নামে যে খরচ উল্লেখ করেছেন তা কোন খাতে খরচ করেছেন তারও উল্লেখ নাই। এসমস্ত হিসাব দেখে মনে হয়, স্বেচ্ছায় কাজের নামে আমাদের ব্যবহার করে সংশপ্তকের সমন্বয়ক জহির ও তার অনুসারীরা দেশের এই ক্রান্তিকালে ব্যবসা করতে এসেছেন।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com