মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ১০:৫৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ঈদযাত্রা নিরাপদ, নির্বিঘ্ন ও আনন্দদায়ক করতে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে : সড়ক উপদেষ্টা। কালের খবর সাংবাদিক সুরক্ষা ও কল্যাণ ফাউন্ডেশন এর ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা ময়মনসিংহ জেলায়। কালের খবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন অর্থনীতি ছাত্র সমিতি (কিউয়েসা) কর্তৃক আয়োজিত অর্থনীতির অভিবাসন ও দক্ষ জনশক্তি বাংলাদেশ প্রসঙ্গ শীর্ষক এক সেমিনার। কালের খবর পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করলেন আরিফুর রহমান। কালের খবর কক্সবাজারের শাপলাপুরে অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ মাইক্রোবাসে থাকা ০২ জন গ্রেফতার। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় বিশ্ব রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস পালন। কালের খবর কাপ্তাই উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতির ভাইয়ের উপর ‍স্থানীয় সন্ত্রাসীদের বর্বরচিত হামলা। কালের খবর নলডাঙ্গায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের বাড়ীতে ডাকাতি। কালের খবর রায়পুরায় মানসিক প্রতিবন্ধী নিখোঁজ। কালের খবর মাটিরাঙায় বিজিবির অভিযানে সাড়ে ১৩ লাখ টাকার অবৈধ সিগারেট জব্দ। কালের খবর
দুধ-দইয়ে ক্ষতিকর উপাদান : গবেষণার ফলাফল আমলে নেয়া জরুরি। কালের খবর

দুধ-দইয়ে ক্ষতিকর উপাদান : গবেষণার ফলাফল আমলে নেয়া জরুরি। কালের খবর

সম্পাদকীয়, কালের খবর :

সরকারের জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের আওতাধীন ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির (এনএফএসএল) গবেষণায় উঠে এসেছে কিছু উদ্বেগজনক তথ্য। খোলাবাজারে গাভির যে তরল দুধ বিক্রি হয়, তাতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক, সিসা ও নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

আরও পাওয়া গেছে আলফাটক্সিন এবং বিভিন্ন অণুজীব। এছাড়া প্যাকেটজাত দুধে পাওয়া গেছে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি অ্যান্টিবায়োটিক ও সিসার অস্তিত্ব। শুধু তরল দুধে নয়, সাধারণ দোকান থেকে শুরু করে নামি-দামি প্রতিষ্ঠানের দইয়েও পাওয়া গেছে অতিরিক্ত সিসা ও অণুজীব। এসব ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি পাওয়া গেছে গোখাদ্য, গরুর দুধ, প্যাকেটজাত দুধ ও দইয়ের নমুনা পরীক্ষা করে।

বলাবাহুল্য, দুধ ও দইয়ের এসব উপাদান জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বিশেষজ্ঞরদের মতে, মানবদেহে এসব উপাদানের মাত্রাতিরিক্ত প্রবেশ ক্যান্সার, কিডনি ও লিভার বিকল হওয়া এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে পড়ার মতো মারাত্মক সব রোগের কারণ হতে পারে। খাদ্যে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের কারণে মানবদেহ অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে ওঠে। ফলে একপর্যায়ে রোগ প্রতিরোধে কোনো অ্যান্টিবায়োটিকের আর কার্যকারিতা থাকে না। এ সবকিছুর পরিণতি হল দ্রুত মৃত্যু।

চিন্তার বিষয় হল, দুধ হল শিশুদের প্রধান খাদ্য। শিশুর পুষ্টির সহজ জোগান আসে দুধ থেকেই। সেই দুধেও যদি মারাত্মক ক্ষতিকর উপাদান থাকে, তাহলে শিশু খাবে কী? বিষতুল্য খাবার খেয়ে সে বেড়ে উঠবে? এটি কোনোভাবেই চলতে দেয়া যায় না। সরকারের উচিত এনএফএসএলের গবেষণার ফলাফল আমলে নিয়ে এ ব্যাপারে জরুরিভাবে ব্যবস্থা নেয়া। প্রথমত, দুধ ও দই কীভাবে এসব ক্ষতিকর উপাদান দ্বারা দূষিত হচ্ছে তা উদ্ঘাটন করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, এ দূষণ রোধে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। এ ক্ষেত্রে দুধ ও দইয়ের উৎপাদন থেকে শুরু করে এর বাজার ব্যবস্থাপনায় দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করি আমরা। পুরো প্রক্রিয়াটিতে মনিটরিং জোরদার করতে হবে।

বস্তুত দেশে এখন প্রায় প্রতিটি খাদ্যসামগ্রী নিয়েই চলছে ভেজালের মহোৎসব। রাসায়নিক মিশ্রিত ভেজাল, নকল ও ক্ষতিকর খাবার অবাধে বিক্রি হলেও দেশে ক্রেতাদের কোনো শক্তিশালী সংগঠন না থাকায় অসৎ সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াতে পারছে না।

অন্যদিকে ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে সময়ে সময়ে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে, সেটাও যথেষ্ট নয়। কারণ এক্ষেত্রে ভেজালকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে নামমাত্র জরিমানা ও তিরস্কার করে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।

এর ফলে সেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান জরিমানা প্রদান শেষে পুনরায় একই কর্মে লিপ্ত হচ্ছে। খাদ্যে ভেজাল রোধে আইন থাকলেও এর কার্যকারিতা নেই বললেই চলে। আমরা আশা করব, আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ এবং সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক প্রয়োগের বিস্তার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সরকার তৎপর হবে।

তা না হলে এমন দিন আসবে, যেদিন দেখা যাবে পুরো জাতিই একটি ‘বিকলাঙ্গ’ জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। সে পরিস্থিতি এড়াতে হলে দুধসহ প্রতিটি খাদ্যদ্রব্যেই ভেজাল ও ক্ষতিকর উপাদানের মিশ্রণ রোধে নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com