রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন
আব্দুর রউফ ভূঁইয়, ব্যুরো প্রধান কিশোরগঞ্জ, কালের খবর : কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার ঐতিহ্য সাজনপুরের বৃহত্তর গরুর হাট। সাজনপুর গরু হাটের ইজারাদার মোঃ আলম সংবাদ মাধ্যম কে জানান এই ঐতিহ্যবাহী গরুর হাট কে নিয়ে নানামুখি ষঢ়যন্ত্র শুরু হয়েছে। স্থানীয় কতিপয় লোক এ গরুর হাটটির ঐতিহ্য বিনষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছে। অথচ এই হাটটি বিগত কয়েক বছর ধরে কিশোরগঞ্জ জেলার মধ্যে সর্ব বৃহত্তর গরুর হাট হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।কিশোরগঞ্জ জেলা ছাড়াও আশেপাশের জেলাগুলো হতে ব্যাপক সংখ্যক গরুর ব্যাপারী এই গরুর হাটটিতে গরু-মহিষ ক্রয়-বিক্রয় করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে আসছে। উক্ত গরুর হাটের ইজারা কমিটির সদস্যরা বাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদেরকে সার্বিক নিরাপত্তা মুলক সহযোগিতা করায় এই গরুর হাটে দূর দূরান্ত থেকে মানুষজন গরু কেনা বেচার জন্য আসতে আগ্রহ বোধ করেছে। প্রতি সপ্তাহের বুধবার এই গরুর হাট জমে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগমে মুখরিত হয়ে ওঠে সাজনপুর গরুর হাট প্রাঙ্গন।
সরজমিনে গরুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, জেলার নিকলী উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের সাজনপুর হাটে কিশোরগঞ্জ জেলাসহ ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বি-বাড়িয়া, নেত্রকোনা, নরসিংদী, গাজিপুরসহ,বিভিন্ন জেলার গরুর ক্রেতা বিক্রেতা পাইকাররা এই গরুর হাটে গরু-মহিষ ক্রয়-বিক্রয় করতে আসেন। প্রতি সপ্তাহের বুধবার বেলা ১২ টা হতে কিশোরগঞ্জ জেলা ছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে যানবাহনে গবাদি পশু বিক্রয়ের জন্য নিয়ে এসে জড়ো হয় এই গরুর হাট প্রাঙ্গনে। সাজনপুর গরুর হাট পরিচালনা কমিটির সদস্যদের ভাষ্যমতে জানা যায় গরুর হাটের আশেপাশের কিছু সংখ্যক লোক গরুর হাট পরিচালনা কমিটির নিকট মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবী করে আসছিল, গরুর হাট পরিচালনা কমিটি উক্ত লোকবল কে চাঁদা না দেয়ায় তারা বাজারটি বিরুদ্ধে ষঢ়যন্ত্রে পা বাড়িছে। এ ব্যাপারে সাজনপুর (আঠারবাড়িয়া) গরুর হাটের ইজারাদার মো. আলম মিয়া জানান, আমরা এ হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের কে নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন সেবা দিয়ে আসছি, এ হাটের আয় থেকে স্থানীয় সাজনপুর দাখিল হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দেওয়া দেয়া। তাছাড়াও এলাকায় বিভিন্ন মসজিদ-সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও অসহায়দের কল্যাণে এ হাটের অর্জিত অর্থ থেকে দান করা হয়। এ বিষয়ে বাজার কমিটি সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক জানান,সাজনপুর (আঠারবাড়িয়া) গরু-ছাগলের হাটটি কিশোরগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বৃহৎ হাট। বাজারটিতে ক্রেতা বিক্রেতারা যাতে কোন ধরনের সমস্যায় না পড়ে সেজন্যে আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে আসছি। এ বিষয়ে গরুর হাট পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম মানিক জানান, এলাকার কিছু স্বার্থন্বেষী লোকজন বাজার কমিটির কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল,গরুর হাট পরিচালনা কমিটি তাদের এই অন্যায় আবদারটি প্রত্যাখ্যান করায় তারা বাজারটির বিরুদ্ধে ক্রমাগতভাবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বানোয়াট অসত্য তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশ করে বিভ্রান্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করছে।
গরু হাটের পাশে অবস্থিত আঠারবাড়ি ২৭ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আউয়াল জানান ইস্কুলের পাশে প্রতি সপ্তাহে একদিন গরুর হাট জমার ফলে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের কোন অসুবিধা হয় না, তিনি আরো জানান,নিকলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার সরজমিনে বাজারটি পরিদর্শন করে,পরামর্শ দিয়েছেন স্কুল বাউন্ডারিতে যেন একটি পর্দার ব্যবস্থা করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী বাজারের ইজারা কমিটি স্কুল বাউন্ডারিতে পর্দার ব্যবস্থা করেছেন।
নিকলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাকিলা পারভীন জানান, নিকলীর সাজনপুর গরুর হাটটি কিশোরগঞ্জ জেলার বৃহত্তর গরুর হাট উল্লেখ করে তিনি জানান, স্কুল মাঠে গরুর হাট না বসানোর নির্দেশনা ইতিপূর্বেই দেয়া হয়েছে।