সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩০ পূর্বাহ্ন
যশোর প্রতিনিধি, কালের খবর :
মা দশ মাস দশ দিন অসহ্য যন্ত্রণা সয়ে গর্ভে ধারণ করে সন্তান আর বাবা স্নেহের বটের ছায়ায় আগলে রাখে আমরণ। যশোরের ঝিকরগাছার নিশ্চিতপুরে
সবুজ রঙের চাকচিক্য বাড়িটির নাম রাখা হয়েছে মা বাবার দোয়া। অথচ ওই বাড়িতেই স্থান হয়নি সেই মা-বাবার। প্রায় তিন বছর তারা মেয়ে-জামাতার বাড়িতে থেকে শেষমেষ গ্রামের মসজিদে ঠাঁই নিয়েছিলেন। উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ওই বাবা-মাকে বাড়িতে তুলে দেন।
জানা গেছে, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের জামে মসজিদের ভেতর অচল শরীর নিয়ে শুয়ে আছেন আব্দুল জলিল (৭০)। পাশে বসে থাকা স্ত্রী রোজিনা বেগমও (৬০) চলাচলে অক্ষম। আব্দুল জলিল বলেন, সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কারণে-অকারণে ছেলে নাসির উদ্দীন তাকে ও তার স্ত্রীকে মারপিট করে তিন বছর আগে তাড়িয়ে দেয়। এতদিন মেয়ে-জামাতার বাড়িতে ছিলাম। মেয়ে-জামাতা বেকার হওয়ায় আমরা ফিরে এসে বাড়িতে উঠতে চেয়েছিলাম কিন্তু ছেলে ও পুত্রবধূ বাড়িতে উঠতে দেয়নি তাই মসজিদে উঠেছি।
আব্দুল জলিলের মেয়ে পারভীন আক্তার বলেন, ভাই নাসির উদ্দীন মা-বাবাসহ আমাদেরকে অনেকবার মারধর করেছেন। এবং জালিয়াতি করে বাবার কাছ থেকে বসতবাড়ি জমি লিখে নিয়ে বাড়ি থেকে মা-বাবাকে বের করে দিয়েছেন।
অভিযুক্ত নাসির উদ্দীন (৪৪) বলেন, আমি মা-বাবাকে বাড়িতে থাকতে দিবো কিন্তু বোনদেরকে বাড়িতে জায়গা দেবোনা। বাবা ও বোনেরা আমার নামে ১৮ টি মামলা করেছে, আমিও তাদের পাঁচটি মামলা করেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল হক বলেন, জানতে পেরে ওই মা-বাবাকে মসজিদ থেকে ছেলের বাড়িতে উঠিয়ে দি এবং বসতবাড়ির জমিটি যতদিন ছেলে নাসির উদ্দিনের নামে রেকর্ড না হবে ততদিন তিনি এই বাড়িতে থাকতে পারবেন না বলেও জানানো হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেএম মামুনুর রশিদ, নির্বাসখোলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খাইরুজ্জামানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।