রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩১ অপরাহ্ন
প্রিয়া সাহা (ছদ্মনাম) পেশায় একজন চিকিৎসক। স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে রাজধানীতে বাস তার। স্বামীও চাকরিজীবী হওয়ায় সন্তান দেখশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন। তাই মরিয়া হয়ে কাজের বুয়া খুঁজছিলেন।
এমন সময় ত্রাতার ভূমিকায় হাজির হন কোহিনুর নামের এক দালাল। সেই দালালের হাত ধরে আমেনা নামের এক কাজের বুয়া আসেন ওই বাসায়। বাচ্চাদের দেখাশোনার জন্য গৃহকর্মী পেয়ে কিছুটা স্বস্তি ফিরে পান ওই নারী চিকিৎসক।
বিশ্বাস করে প্রথম দিনেই অপরিচিত আমেনার কাছে দুই শিশু সন্তানকে বাসায় রেখে হাসপাতালে চলে যান চিকিৎসক মা। তবে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেই যা দেখেন তার জন্য প্রন্তুত ছিলেন না তিনি। ফাঁকা বাসায় একাই রয়েছে শিশুরা। কোথাও নেই সেই আমেনা। তাকিয়ে দেখেন ঘরে থাকা লকারও ভাঙা। লকার থেকে প্রায় ২০ ভরি স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে গেছেন কাজের বুয়া সেজে বাসায় আসা আমেনা নামের অচেনা সেই নারী।
চুরির ঘটনার প্রায় এক বছর পরে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন সেই আমেনা। একই সঙ্গে তার কাছে থেকে চোরাই স্বর্ণ কেনার অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরও এক ব্যক্তি।
ডিবির লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার ডিসি) রাজীব আল মাসুদ দৈনিক কালের খবরকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বংশাল থানা থেকে মামলাটি গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের কোতোয়ালি জোনাল টিমে হস্তান্তর হয়। এরপর গোয়েন্দা বিভাগ প্রথমে দালাল কোহিনুরকে গ্রেপ্তার করে। পরে দীর্ঘ সময় পলাতক থাকা আমেনাকে গতকাল কুমিল্লা দাউদকান্দি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
রাজীব আল মাসুদ আরও বলেন, ‘আমেনার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ঢাকার তাতিবাজার “মেসাস ফোরস্টার জুয়েলার্স” এর মালিক মো. আবুল হাসেমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছে এক লক্ষ ২৮ হাজার টাকার বিনিময়ে স্বর্ণগুলো বিক্রি করে দিয়েছিল বলে জানিয়েছে আমেনা।’
‘দীর্ঘ এক বছর আগের ক্রয়কৃত চোরাই স্বর্ণ ইতিমধ্যে গলিয়ে চোরাই বাজারে বিক্রি করে দিয়েছে ফোরস্টারের মালিক হাসেম। দুর্ধর্ষ কাজের বুয়া আমেনা একজন পেশাদার চোর। এর আগেও সে একই রকমভাবে বিভিন্ন বাসায় কাজের বুয়া সেজে চুরি করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে’, বলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আমেনাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে সে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। তার অন্যান্য চুরি সম্পর্কে আরও তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।