শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ফ্যাসিস্ট আ.লীগের নেতা মোঃ কামরুল ইসলাম নান্টুর রাজধানী ঢাকায় আবাসিক হোটেলের নামে অবৈধ পতিতা, মাদক ও অস্ত্রের রমরমা ব্যবসা। কালের খবর শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় ইসলামী শ্রমনীতি চালু করতে হবে : আ ন ম শামসুল ইসলাম। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে পৌর বিএনপি। কালের খবর অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা কপালপোড়া জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে : হাসনাত। কালের খবর মাটিরাঙ্গা বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির নেতৃত্বে জামাল-মুকুট। কালের খবর তিল ধারণের ঠাঁই নেই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। কালের খবর আমতলীতে ভূমি দস্যুর অত্যাচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন। কালের খবর নবীগঞ্জ প্রেস ক্লাব নির্বাচন সম্পন্ন : সালাম সভাপতি, ছনি সম্পাদক নির্বাচিত। কালের খবর সীতাকুণ্ডে জামায়াত নেতার ওপর হামলা, প্রতিবাদে মিছিল সমাবেশ। কালের খবর আমাকে ও আমার মেয়েদের কুপ্রস্তাব দেয় রাজ্জাক। কালের খবর
করোনাকালের মানবিক পুলিশ

করোনাকালের মানবিক পুলিশ

ঢাকার ধামরাইয়ে করোনাভাইরাসের উপসর্গে মারা যাওয়া পাখি মণ্ডলের মৃতদেহের কাছে কোনো স্বজন আসেননি। অনেকটা সময়

তাঁর মৃতদেহ পড়ে ছিল। পরে ধামরাই থানা পুলিশের সহায়তায় কায়েতপাড়া শ্মশানে তাঁকে সৎকার করা হয়। সেদিন পুলিশের এই মানবিক ভূমিকার প্রশংসায় ভাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।

দেশে-বিদেশে পুলিশের প্রশংসনীয় ভূমিকার চেয়ে নেতিবাচক সমালোচনাই বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর ওই দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়েছে, যা এখনো চলছে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশের রূঢ় আচরণ নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। অমূলক সন্দেহেও লোকজনকে হেনস্তা করার বিস্তর অভিযোগ। এত দিন পুলিশের ভাবনায় হয়তো ছিল, আইন প্রয়োগ করতে হলে কঠোর হতে হবে। কিন্তু করোনাকালে সেই বদ্ধমূল ভাবনার গায়ে মানবিকতার পরশ বুলিয়ে দিয়েছে তারা।

সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন ব্যবস্থাপনা ও জননিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অসহায় মানুষদের খাদ্যসাহায্যেও হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সংক্রমণের শিকার হয়েছে; মারাও গেছে। করোনাকালে পুলিশের জনকল্যাণকর ভূমিকা মানুষের প্রশংসা পাচ্ছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পুলিশের ২৯ সদস্য মারা গেছেন, আর আনসার ও ভিডিপির মারা গেছেন তিনজন। তাঁরা পুলিশের সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করছিলেন। সোয়া লাখের পুলিশ বাহিনীতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজারের বেশি সদস্য।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বললেন, করোনায় পুলিশের যে সদস্যরা মারা গেছেন, মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়েই তাঁরা প্রাণ দিয়েছেন। তাঁদের অবদান জাতি ভুলবে না।

করোনাকালে পুলিশের মতো​ র‍্যাবও বিভিন্ন স্থানে অভাবী মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী ​বিতরণ করছে, নানাভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে র‍্যাবের প্রায় দেড় হাজার সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে আক্রান্ত ৪৮০ জন। তাঁদের মধ্যেও সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে মাঠে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের টঙ্গী পূর্ব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শুভ মণ্ডল নিজের জন্মদিনে অসহায় পরিবারের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মধ্যরাতে এক করোনা রোগীকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন বাড়িওয়ালা। গভীর রাতে পুলিশ তাঁকে বাড়িতে তুলে দিয়ে আসে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে সাভারের আশরাফুজ্জামানকে একা ফেলে বাসা থেকে চলে যান তাঁর স্ত্রী ও সন্তান। নিরুপায় হয়ে তিনি একটি গাড়ি ভাড়া করে গ্রামে ঝিনাইদহে গিয়েও বাড়িতে উঠতে পারেনি। সেখানে জনপ্রতিনিধিরা তাঁকে ঠাঁই দেননি। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান তাঁর বসবাসের বন্দোবস্ত করে দেন। করোনাকালে সারা দেশেই পুলিশের সামাজিক দায়বদ্ধতা বা মানবিকতার এমন টুকরো টুকরো অনেক ঘটনা আছে।

পাশাপাশি লকডাউন এলাকায় পাহারা বসানো, কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের নজরদারি করা, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীকে বাড়ি থেকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের দাফন বা সৎ​কারে সহায়তার কাজও করে যাচ্ছে পুলিশ। অভাবী মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণ যাতে চুরি না হয়, সে ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখছে পুলিশ। সব মিলিয়ে করোনার এই দুর্যোগে পুলিশের এক নতুন মানবিক ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com