রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২২ পূর্বাহ্ন
কালের খবর রিপোর্ট :
মগবাজার, নয়াটোলা, আমবাগান, দিলু রোড ও আশপাশের এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরশনের (ডিএনসিসি) ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড। এই এলাকায় রয়েছে বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও শপিংমলসহ নানা স্থাপনা। তারপরও নাগরিক অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত এখানকার বাসিন্দারা। যানজট, জলাবদ্ধতা ও মাদক এখানকার প্রধান সমস্যা। এছাড়া অপরিকল্পিত বজ্র্য ব্যবস্থাপনার ফলে স্থানীয়দের ভোগান্তির শেষ নেই। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মগবাজার ওয়্যারলেস মোড়ে ময়লার ভাগাড়ের পাশ দিয়ে চলাচলই দায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, সিটি কর্পোরেশনের এমন অপরিকল্পিত পদক্ষেপে সড়কে বাড়ছে যানজটও। এলাকার ভেতরের বেশির ভাগ রাস্তা খানাখন্দে ভরা।
পথচারীদের চলাচলের জন্য নেই ফুটপাথ। সরু রাস্তায় প্রচন্ড যানজটে স্থানীয়দের ভোগান্তি যেন নিত্যসঙ্গী। স্থানীয়দের প্রত্যাশা, আসছে সিটি নির্বাচনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি মানুষের দুর্ভোগ কমাতে কাজ করবেন।
আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এই ওয়ার্ডে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৫ জন প্রার্থী। ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোক্তার সরদার নির্বাচন করছেন কাঁটাচামচ প্রতীক নিয়ে। তিনি ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এছাড়াও এই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন। তাদের একজন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আবুল বাশার চৌধুরী লড়ছেন ঘুড়ি প্রতীক নিয়ে। আরেকজন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফয়জুল মুনির চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ঠেলাগাড়ি প্রতীক নিয়ে। একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও নিজের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলের সমর্থন পাওয়া মোক্তার সরদার। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী শেখ আমির হোসেন নির্বাচন করছেন এয়ার কন্ডিশনার প্রতীক নিয়ে। তিনি হাতিরঝিল থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তার কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। সুষ্ঠু ভোট হলে জয়ের ব্যাপারেও তিনি শতভাগ আশাবাদী। তবে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তিনি। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের হুমকি ধামকিতে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পরছেন না বলে জানান তিনি। তিনি মানবজমিনকে বলেন, প্রচারণাই ঠিকমতো করতে পারছি না। আওয়ামী লীগ সমর্থিত লোকজনের কারণে মাঠে নামতে পারছি না। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, প্রশাসনও আমাদের হয়রানি করতে পারে সেজন্য মাঠে নামতে পারছি না। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের লোকজনেরা আমাদের পেছনে লেগেই আছে। পোস্টার লাগাতে দেয়া হচ্ছে না। এসব কারণে নির্বাচনও সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। পূর্বের নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতার জেরে ভোটারদের মধ্যে একধরনের আস্থার সংকট তৈরি করেছে। সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে তাদের মধ্যেও শঙ্কা কাজ করছে।
তবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোক্তার সরদার তার অভিযোগ অস্বীকার বলেন, যেদিন তাদের মেয়র প্রার্থী আমার এলাকায় আসেন সেদিন আমরা নিজেরা তাদের অভ্যর্থনা জানিয়েছি। তারা মিছিল সমাবেশ করছেন। আমার পৃষ্ঠা ১৭ কলাম ৪
ওয়ার্ডে আরও ৩জন প্রার্থী নির্বাচন করছেন। তারাও সমানভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএনপির প্রার্থীও ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাদের পোস্টার দিয়ে এলাকা ছেয়ে গেছে। বিএনপি প্রার্থী শুধু শুধু অভিযোগ করছেন অনুকম্পা পাওয়ার জন্য। আপনারা এলাকায় সরজমিনে দেখলেই সব দেখতে পারবেন। আমি নোংরা রাজনীতি পছন্দ করি না। নিজ দলেরই একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বর্তমান কাউন্সিলর হিসেবে আমি এত দিন এলাকাবাসীর সঙ্গে ছিলাম, তাদের জন্যই কাজ করেছি। আশা করছি এবারও তারা আমাকে মূল্যায়ন করবেন। বিদ্রোহী প্রার্থী মুনির চৌধুরি সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনি এমপি নির্বাচন করে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে এখন এখানে আসছেন কাউন্সিলর নির্বাচন করতে। নির্বাচন আসলেই তিনি একটা ব্যবসা খুলে বসেন। তার এলাকার কিছু লোকজন থেকে অনুদান নেন। সেই অনুদান থেকে কিছু টাকা নির্বাচনে খরচ করে আর কিছু নিজে খায়।