বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন
ফারুক আহমেদ, কালের খবর :
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি একে এম শামীম ওসমান বলেছেন, আমি আজ আপনাদের কছে ভোট চাইবনা, আমি কেন আপনাদের কাছে ভোট চাইবো। আপনাদের বিবেক আছে, বুদ্ধি আছে, কাকে ভোট দিলে কাজ করবে তাকে ভোট দেওয়ার জন্য আপনারা ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাইবেন।
আমার মনে হয় বাংলাদেশে একজন ব্যতিক্রম আছে আর সে হল আমি। যে এখন পর্যন্ত কোথাও একটা ভোট চায়নি এবং কসম খেয়ে বলছি আর ভোট চাইবো না।
আমি কেন বলবো আমাকে ভোট দেন! সমস্যা কার আমার না আপনার। আপনার বুদ্ধি নাই? আমি মনে করি আপনাদের আমার চেয়ে বেশি বুদ্ধি। কারণ আমার কোনো সমস্যা নাই সমস্যাটা আপনাদের। আমি দামি গাড়ী দিয়ে চলি, ভাংঙা রাস্তার জাকুনি আমার কুমুড়ে লাগেনা। আপনারা রিক্সায় চলেন আপনাদের কুমুরে জাকুনি লাগে আপনারা কষ্ট পান। তাই আপনাদের সমস্যা।
শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) সকালে সাইনবোর্ডের শান্তিধারা এলাকায় আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত পথসভা ও উঠান বৈঠকে তিনি এ সকল কথা বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, আমি কেন আপনাদের সাথে নাটক করবো! আমি কিন্তু ভালো অভিনয় করতে পারি। আমি বক্তৃতা দিয়ে আপনাদের কান্না ঝড়াইতে পারমু। আমি জানি, আমি ভালো বক্তৃতা দিতে পারি। কিন্তু আমি কোনো অবস্থাতেই মিথ্যা কথা বলবো না। আল্লাহ স্বাক্ষী আমি কোনো মিথ্যা কথা বলবো না
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো: নাজিম উদ্দীন নাজিম, আওয়াী লীগ নেতা হাজী আব্দুর রাজ্জাক ব্যাপারী, তুষার ধারা আয়ামীলীগের সভাপতি নুর ইসলাম নূরু ,সাধারণ সস্পাদক সৈয়দ ফজলুল হক মিন্টু , আওয়াী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক ফকির, মো: সূরুজ ব্যাপারীসহ প্রমুখ।
শামীম ওসমান বলেন, আমার সমস্যাটা হল আপনি নিরপেক্ষ আর আমি পক্ষ। ধরুন আমার এক চোখ আমি নৌকাকে সমর্থন করি। আমি নৌকার আদর্শের বিশ্বাস করি। কেন করি?
আমি বিশ্বাস করি এ নৌকা আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি এ নৌকা জননেত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি আজকে উপরের দিকে নিয়ে গেছেন।
কিন্তু আপনি করবেন কেন? আমরা যারা রাজনীতি করি আমাদের একটা চোখ । আমরা এক চোখ দিয়ে দেখি। কিন্তু আপনারা তো দুই চোখ দিয়ে দেখতেছেন। আমরা এক কান দিয়ে শুনি। আপনারা দুই কান দিয়ে শুনতেছেন। তাহলে আপনি কেন সিদ্ধান্ত নিবেন না যে আপনি কী করবেন? তাহলে আমি কেন আপনাদের কাছে ভোট ভিক্ষা চাইবো।
শামীম ওসমান আরো বলেন, ওরা ৭৫’র এ বঙ্গবন্ধুকে মারছে। ওরা ২৫ শে আগষ্ট শেখ হাসিনাকে মানতে চাইছে। ওরা ১৬ জুন আওয়ামীলীগ অফিসে বোমাব্লাস্ট করাইছে। এখন আমি কি আপনাদের কাছে ভোট চাইবো তাদের বিরুদ্ধে?
এ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভোট চাইবো কেন? কেন ভোট চাইবো আপনাদের কাছে? আপনারা না ইয়াং আপনারা না যুবক। আপনারা সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারেন। আপনারা না ইয়াং জেনারেশন (তরুণ প্রজন্ম) জানেন না এই যে মাটিতে আপনারা দাড়িয়ে আছেন সেখানে ত্রিশ লাখ শহীদদেরর রক্ত আছে।
এই যে ৭১’র যুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ মানুষকে শহীদ করলো, ১০ লাখ মা-বোনের ধর্ষন নির্যাতনের পর হত্যা করলো এটা কারা করেছে ? বাইরে থেকে এসে করেছে নাকি দেশের আলবদর, রাজাকার, জামাত-শিবির ওরা করেছে। যারা জামাত-শিবির, আলবদর এ সকল কর্মকান্ড করলো তাদের বিরুদ্ধে এখানে এসে আমি ভোট চাইবো! কেন? কেন ভাই কিসের জন্য ভোট কিনবো? আপনাদের কি কোনো দায়বদ্ধতা নাই।
১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেন, ছেলেকে হত্যা করলেন তার পুরো বংশকে মেরে ফেলছেন। হয়তো আমি আপনি কেউ করি নাই। কিন্তু আমি প্রতিবাদ করছি। আপনি করছেন? আমি আমার আদর্শে আছি আপনি আছেন?
শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানাইয়া ফেলাইছি। আরে বাবা অনেক বড় কাজ করাইয়া ফেলাইছে। শেখ হাসিনা কেন এসেছে ক্ষমতায়? বাবা হত্যার প্রতিশোধ নিতে? তাহলে তে সে সেটা ৯৬ তেই নিতে পারতো।
কিন্তু সে বাংলাদেশের ভাগ্যের পরিবর্তন করাচ্ছে। গরীব, তলাহীন ঝুড়ি বাংলাদেশ আজকে আমরা মধ্যম সারির দেশে পদার্পন করতে যাচ্ছি। সে এতকিছু কার জন্য করছে। আপানদের জন্য তাহলে সমস্যা কার? আপনার। সমস্যা আপনার সমাধান আপনারই করতে হবে।
আপনাদের সিদ্ধান্ত আপনাদেরই নিতে হবে। আমি শুধু এতটুকু বলবো। ভালো আর খারাপকে একত্রিত করবেন না। তাহলে ভালো আর ভালো কাজ করার উৎসাহ পাবে না। যারা নির্বাচন করবে তাঁদেরকে আনেন।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী ভাইকে বলবো, বিএনপির যে বা যারা নির্বাচন করবে তাঁদের আনেন। ডাকেন ডেকে একটা জায়গায় জমায়াত করেন। জিজ্ঞেস করেন। আমি এ পাঁচ বছরে যে পরিমান কাজ করেছি। সে পরিমান কাজের পঞ্চাশ ভাগের একভাগ কাজ যদি তারা করে তাহলে আমি নির্বাচন করবো না।
এ সময় শামীম ওসমান সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবার কঠিন। আপনারা খোঁজ নিবেন। আমি যদি যোগ্য হই। আমি টাকা দিয়ে ভোট কিনবো না। আমি টাকা পয়সা দিয়ে ঈমান কিনবোও না ঈমান বেঁচবোও না। আমি স্পষ্টভাষী লোক।
আপনাদের আল্লাহ রসূলের দোহাই লাগে আমি যদি সঠিক না হই আপনারা আমার বিপক্ষে যাবেন। আর যদি সঠিক হই তাহলে আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে আমার জন্য আপনাদের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাওয়া। কারণ আমার পক্ষে ছয়-সাত লাখ মানুষের কাছে যাওয়া সম্ভব না।
আমি আল্লাহর নামে ওয়াদা করছি।
আল্লাহর হুকুম হলে আমার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আবারো প্রধানমন্ত্রী হলে আমি আমার জান দিয়ে চেষ্টা করবো এ নারায়ণগঞ্জকে উন্নত করার।
তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের ছাড় না দেয়ার হুশিয়ারী জানিয়ে বলেন, আমার পক্ষে একা মাদক নির্মূল করা সম্ভব না। এমপি হইবা না হই মাদক কারবারীদের ছাড় দিব না।
প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে আমাদের পেজে লাইক দিন