বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ অপরাহ্ন
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, কালের খবর :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুমকে অপসারনের দাবীতে মাঠে নেমেছে মার্কেট ব্যবসায়ী ও হকাররা। তারা জড় হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আন্দোলনের ডাক দিয়ে কাঁচপুরে র্যালী করেছে। তাদের আশ্বস্থ করতে কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ও সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোর্শেদ আলম বক্তব্য দেন। হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর পুলিশ সুপার বলেন আমরা আমাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছি। হকারদের ওই জায়গা দখল করতে দেয়া হবে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কাঁচপুরের একটি মার্কেটের সামনে গতকাল সকালে কয়েকশ হকার ও ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে আন্দোলনের শ্লোগান দিতে থাকে। হকারদের অভিযোগ, মার্কেটের ভেতরে অলিতে গলিতে প্রায় দেড়শ হকার বসে কেনাবেচা করে থাকেন। সম্প্রতি কিছু হাইওয়ে পুলিশ সদস্যরা তাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে আসছে। চাঁদা না দিলে তাদের দোকানের জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলে দেয়। লাথি দিয়ে জিনিসপত্র গুড়িয়ে দেয়। তাদের দাবী শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা করতে চান তারা। এদিকে সোনারগাঁ থানার ওসি হকারদেরকে মার্কেটের সামনের অংশে ব্যবসা করা অনুমতি দিয়েছেন।
এদিকে কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় গিয়ে দেখা যায় গাজীপুর জোনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগন ওসি কাইয়ুমকে নিয়ে রূদ্ধদ্বার বিভিন্ন পরামর্শ করতে দেখা গেছে।
জানতে চাইলে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোর্শেদ আলম বলেন, আমি আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করেছি। তাদের সড়ক অবরোধ করা থেকে বিরত রেখেছি। তাদেরকে শান্ত রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনেছি।
হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা জনগনের জন্য কাজ করি। তিনমাস আগে ভ্রাম্যমান আদালত গিয়ে ওই জায়গা দখলমুক্ত করেন। সড়ক ও জনগন কতৃপক্ষ জায়গা দখলমুক্ত করে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে আমাদের পুলিশকে বুঝিয়ে দেয়। আমাদের পুলিশ তাদেরকে ওই জায়গায় বসতে নিষেধ করলেও তারা ঘুরে ঘুরে গিয়ে ওই জায়গাতেই বসে। গত শুক্রবার দুপুরে যোগাযোগ সচিব ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ভ্যান গাড়ি দেখে খুব ক্ষেপে গিয়েছিলেন। তাই আমাদের পুলিশ সদস্যরাও একটু কঠোর হয়েছে। তবে কেউ চাঁদাবাজির জন্য হকারদের পক্ষ নিলে তাদেরও ছাড় দেয়া হবে না।
জানতে চাইলে কাঁচপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশাররফ ওমর বলেন, আমার মত একজন চেয়ারম্যান হকারদের চাঁদা খাবে এটা কি হয়। আমি তাদের দুঃখ দুর্দশা দেখে তাদের পাশে দাড়িয়েছি। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি। কাঁচপুর এলাকার হকারদের চরম অবহেলিত জীবনযাপন আমাকে তাদের জন্য কিছু করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। আমি চাইছি শান্তিপূর্ণভাবে একটা সমাধানের ব্যবস্থা করতে। আমি মনে করি পুলিশ তো আমার সরকারের পক্ষেই কাজ করছে। তাই আমি হকারদের সমস্যা সমাধানে পুলিশের সাথে বসে একটি সমাধানের ব্যবস্থা করতে চাইছি।
এর আগে রোববার দুপুরে বিক্ষুব্দ হকাররা রাজপথে নেমে আসে। এসময় তারা ঢাকা চট্টগ্রাম চার লেনের মহাসড়ক অবরোধ করে। প্রায় আধ ঘন্টা পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুমকেও অবরূদ্ধ করে রাখে। বিষয়টি পুরো কাঁচপুর এলাকার অলিতে গলিতে সাধারন মানুষের আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে। আলোচনা সমালোচনায় মুখোরিত হয়ে উঠে পুরো সোনারগাঁ উপজেলা।
…..দৈনিক কালের খবর