শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
আ.লীগ আবার কোন নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে : মোতাহার হোসেন। কালের খবর শিক্ষা মানুষকে সুন্দর করে : আফতাব চৌধুরী। কালের খবর ওয়াদুদ ভুইয়ার শারদীয় উপহার নিয়ে মন্ডপে মন্ডপে মাটিরাঙ্গা উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় বিভিন্ন পুজা মন্ডপ পরিদর্শনে পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দ। কালের খবর মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ নিয়ে কাদাছোড়াছুড়ি। কালের খবর নিত্যপণ্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী বিপাকে ক্রেতারা। কালের খবর বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশের অবনতি। কালের খবর তারেক রহমান : তৃণমূল রাজনীতির কারিগর, নির্মাতা ও ধারক বাহক। কালের খবর কুষ্টিয়ায় শেখ হাসিনার নামে মামলা করলেন মাহমুদুর রহমান। কালের খবর মাটিরাঙ্গার বিভিন্ন পুজা মন্ডপ পরিদর্শনে খাগাড়ছড়ির ডিসি-এসপি। কালের খবর
নেপাল সফরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, কড়া নজর ভারতের

নেপাল সফরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, কড়া নজর ভারতের

কালের খবর ডেস্ক :পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসী দুই দিনের এক বিরল সফরে সোমবার নেপাল গেছেন। নেপালের বড় প্রতিবেশী ভারত এই সফরের ওপর কড়া নজর রাখছে। রোববার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, আঞ্চলিক দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই সফর করছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি গত মাসের মাঝামাঝি ক্ষমতা গ্রহণের পর এটা কোন বিদেশী গুরুত্বপূর্ণ অথিথির প্রথম সফর।


পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের বিবৃতিতে নেপালকে গুরুত্বপূর্ণ, আঞ্চলিক দেশ এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “নেপালের সাথে আমাদের সম্পর্ক আন্তরিকতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সম-স্বার্থের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক স্বার্থে আলোচনার বিষয়টি দুই পক্ষের কাছেই সমান গুরুত্বপূর্ণ।”

নয়াদিল্লী এই সফর নিয়ে মন্তব্য করেনি। তবে ঘটনাপ্রবাহের ব্যাপারে যারা খোঁজ-খবর রাখেন, তারা বলছেন, ভারতের সরকার এই সফরের উপর উদ্বিগ্ন হয়ে নজর রাখছে। ভারতের এই উদ্বেগের পেছনে রয়েছে তিনটি কারণ:

ওলিকে চীনপন্থী মনে করা হয়

প্রথমত, নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি ভারতের সে রকম বন্ধু হিসেবে পরিচিত নন। তাকে দেখা হয় চীনপন্থী হিসেবে। সাবেক পররাষ্ট্র সচিব কানওয়াল সিবাল বলেন, “ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান-চীনের তৎপরতায় নেপালের জড়িয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে।” জয়েশ-ই-মোহাম্মদ এবং লস্করে তৈয়বার মতো সংগঠনগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে পাকিস্তান ভারতবিরোধী কর্মকাণ্ডে সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করা হয়। আর চীনকে দেখা হয় পাকিস্তানর সমর্থনদাতা হিসেবে, যেমন জয়শে মোহাম্মদের প্রধানকে জাতিসংঘের সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে চীনের বিরোধিতা। পাকিস্তান ও চীনের সাথে নেপালের হাত মেলানো শুধু ভারতের স্বার্থেরই বিরোধী নয়, বরং ভারতের জন্য তা উদ্বেগেরও বটে। নেপাল এরইমধ্যে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পে যোগ দিয়েছে। জানুয়ারিতে, চীন নেপালে ভারতের একচেটিয়া ইন্টারনেট সার্ভিসের ইতি টেনেছে। আর নেপাল সীমান্ত পর্যন্ত চীনের রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও শোনা যাচ্ছে। এটা হলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্থলবেষ্টিত নেপালের ভারতের উপর একমুখী নির্ভরতার অবসান ঘটবে।

আব্বাসীর সফরে ওলি দেখাতে পারবেন যে তার আঞ্চলিক বন্ধু রয়েছে

নেপালের নির্বাচনে বাম জোটের জয়ের পর যখন এটা প্রায় স্পষ্ট হয়ে গেছে যে ওলি নেপালের ক্ষমতায় আসছেন, তখন ওলিকে অনেকগুলো প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। গত মাসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ নেপাল সফর করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বেশ কয়েকবার ওলির সাথে ফোনে কথা বলেছেন। কিন্তু সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের সাথে সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে ওলি এটা স্পষ্ট করে বলেছেন যে, চীনের সাথে সম্পর্ক বাড়ানোর মধ্য দিয়ে তিনি নেপালের সুযোগের দুয়ার আরও উন্মুক্ত করতে চান, যাতে দিল্লীর সাথে দেন দরবারের ক্ষেত্রে আরও সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে পারে কাঠমান্ডু। তিনি বলেন, “ভারতের সাথে আমাদের ভালো যোগাযোগ এবং খোলা সীমান্ত রয়েছে। এগুলো সবই ঠিক আছে এবং আমরা যোগাযোগ আরও বাড়াবো, কিন্তু আমরা এটা ভুলে যেতে পারি না যে, আমাদের আরেকটি প্রতিবেশী রয়েছে।” সিবাল মনে করেন, আব্বাসীর সফর ওলির অবস্থানকে আরও সংহত করবে এবং ভারতের দিক থেকে কোন ধরনের চাপ আসলে নেপালি প্রধানমন্ত্রী দেখাতে পারবেন যে, আর আরও আঞ্চলিক বন্ধু রয়েছে।

ওলি মনে করেন, ২০১৬ সালের আগস্টে তার সরকার পতনের পেছনে ভারতের ভূমিকা রয়েছে। ২০১৫ সালের নভেম্বরে নেপালের সংবিধান গৃহীত হওয়ার পর এটা নিয়ে নয়াদিল্লীর সাথে কাঠমান্ডুর বিরোধের শুরু হয়। নেপালের প্রায় ৫১% মানুষ – যাদের মধ্যে রয়েছে মাধেসি, থারুস এবং জাঞ্জাতিস গোষ্ঠী – এদের বিরুদ্ধে সংবিধানে বৈষম্য রয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। নয়াদিল্লীর যুক্তি হলো, তাদের সাথে পাকিস্তান ও চীনের অস্থিতিশীল সীমান্ত রয়েছে, তাই তারা চায় না যে, নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতার কোন প্রভাব যাতে ভারতে না পড়ে।

পাকিস্তান সার্ক সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য চাপ দেবে

পাকিস্তান তাদের দিক থেকে সার্ক সম্মেলন আয়োজনের ব্যাপারে নেপালের সমর্থন আশা করছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক এখন তেমন একটা সুবিধাজনক নয়। ২০১৩ সাল থেকে নিয়ে ভারতের সাথে পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক আলোচনা তেমন নেই বললেই চলে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে মোদি পাকিস্তানে সফরে গেলেও এর কোন ব্যাত্যয় ঘটেনি। এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথম কোন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি পাকিস্তান সফরে যান। নেপাল ও পাকিস্তানের সম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করে সিবাল বলেন, তাদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বলতে তেমন কিছুই নেই। তাই নেপালে বর্তমান সফরে পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী ইসলামাবাদে সার্ক সম্মেলন আয়োজনের ব্যাপারে নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলির সমর্থন আশা করতে পারেন।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com