বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ পূর্বাহ্ন
কক্সবাজার প্রতিনিধি
নুরুল আবছার, কালের খবর :
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দালাল আরিফ। তার দালালীপনায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন ক্ষতিপূরণ প্রত্যাশী ও ভূমি মালিকরা। আদালতে চলমান মামলার তপশীলভূক্ত জমির ক্ষতিপূরন আরিফের নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট তুলে নিতে চেষ্টা করলে ইতোপূর্বে জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করেন ভোক্তভূগীরা। কিন্তু এরপরেও ক্ষান্ত হয়নি দালাল আরিফ। সিন্ডিকেটভূক্ত আরো কয়েকজন দালালের যোগসাজশে উক্ত জমির ক্ষতিপূরনের চেক হাতিয়ে নিতে সম্প্রতি মাঠে নেমেছে সে। আরিফের দালালীপনার ব্যাপারে এর আগে একটি স্যাটোলাইট টেলিভিশন চ্যানেলে তথ্যবহুল ডকুমেন্টারি প্রচারিত হলে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
ভূক্তভোগী মহিলা মনজিয়ারা বেগম সাংবাদিকদের জানান, দোহাজারী-কক্সবাজার রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ঈদগাঁও মৌজার তার ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত ৭ শতক জমি অধিগ্রহণ করা হলে তিনি ক্ষতিপূরণের জন্য জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় আবেদন করেন। কিন্তু ঈদগাঁও মৌজার ২৬১ নং রোয়েদাদভূক্ত উক্ত জমির ক্ষতিপূরন আত্নসাৎ করতে একই এলাকার জনৈক মিজান ফেরবী নামজারি খতিয়ান সৃজন করে। উক্ত খতিয়ান বাতিল করতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আদালতে নামজারী আপিল মামলা (নং ১৭৭/ ২০২১) দায়ের করলে আদালত এ খতিয়ানের কার্যকারিতা স্হগিত করেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবি মোস্তাক আহমদ বলেন, বর্তমানে উক্ত মামলা চুড়ান্ত শুনানীর জন্য দিন ধার্য্য রয়েছে।
কিন্তু মামলায় হেরে যাওয়া ও খতিয়ান বাতিলের বিষয়টি বুঝতে পেরে মামলা শুনানীর আগেই ক্ষতিপূরণ তুলে নিতে মাঠে নেমেছে দালাল আরিফ।
এদিকে উপরোক্ত মিজান প্রবাসে অবস্হান করায় এর আগে দালাল অরিফ তার পক্ষে ক্ষতিপূরন তুলে দিতে চুক্তিবদ্ধ হয় ও তার সিন্ডিকেটের আরো কয়েকজন দালালসহ ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় জোর তদবির শুরু করে। এতে ভূক্তভোগী মনজিয়ারা বেগম গত ৩১ জানুয়ারী জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগে তিনি মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ২৬১ নং রোয়েদাদের ক্ষতিপূরণ প্রদান বন্ধ রাখার আবেন করেন।
কিন্তু দালাল আরিফ বিভিন্ন কুট কৌশল অবলম্বন করে উক্ত অভিযোগের শুনানী করতে দেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানায়, ঈদগাঁও মৌজার ২৬১ নং রোয়েদাদভূক্ত উক্ত জমির ক্ষতিপূরনের চেক হাতিয়ে নিতে ইতোমধ্যেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আরিফের নেতৃত্বাধীন দালাল সিন্ডিকেট।
কিন্তু অভিযুক্ত আরিফ এ ব্যাপারে জড়িত নেই দাবী করে বলেন, “আমি এ ব্যাপারে জড়িত নই”। এরপর নিউজ বন্ধ করতে বিভিন্ন তদবীর চালান তিনি।
ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শুভাশীষ চাকমাকে ফোন করলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাহিদ ইকবাল ফোন রিসিভ না করায় এ ব্যাপারে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ভূক্তভোগীরা জানান, বিজ্ঞ আদালতে চলমান মামলাকে আমলে না নিয়ে ফেরবী নামজারী খতিয়ানমূলে ক্ষতিপূরন তুলে নিলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করা হবে।