শনিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সরকারের চাপে পড়ে যে কজন হেভিওয়েট নেতা বিএনপি থেকে বেরিয়ে ভোটে অংশ নিচ্ছেন। কালের খবর মানবতার সেবায় উদাহরণ হয়ে থাকবেন ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক। কালের খবর সিরাজগঞ্জ- ৬ শাহজাদপুর আসনে নৌকার মনোনয়ন পেলেন মোঃ চয়ন ইসলাম। কালের খবর আসন্ন সংসদ নির্বাচনে রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের মনোনয়নপত্র জমা। কালের খবর প্রতিদিন পাচার হচ্ছে ৪০-৫০ লাখ টাকা, ধরাছোঁয়ার বাইরে চক্রের সদস্যরা। কালের খবর দলের মনোনয়ন-বঞ্চিত হয়ে চট্টগ্রাম -১১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে একাত্মতায় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। কালের খবর মাশরাফির আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী-সাংবাদিক সংস্থার চেয়ারম্যান লায়ন নুর ইসলাম। কালের খবর মুরাদনগরে বাড়িতে ঢুকে অতর্কিত হামলা ভাঙচুর মামলা নেয়নি ওসি নিরাপত্তাহিনতায় ভুক্তভোগি পরিবার। কালের খবর যশোর ৪ আসনে (এনামুল হক বাবুল) নৌকার মনোনয়ন পাওয়ায় বাঘারপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় আনন্দ মিছিল। কালের খবর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা। কালের খবর
ঝাড়ুদার থেকে নৈশপ্রহরী সৈয়দ আলী কোটি কোটি টাকার মালিক। কালের খবর

ঝাড়ুদার থেকে নৈশপ্রহরী সৈয়দ আলী কোটি কোটি টাকার মালিক। কালের খবর

এম আই ফারুক, কালের খবর :

কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেড ট্রাইব্যুনালে চাকরি জীবন শুরু হয়েছিল ২০০ টাকা রোজের ঝাড়ুদার হিসেবে। মাত্র কয়েক বছর হলো তিনি এখন সেখানকার নৈশপ্রহরী। কিন্তু এলাকায় তার পরিচিতি তিনি কাস্টমসের একজন বড় অফিসার হিসেবে।

তিনি লাখ লাখ টাকা দান-খয়রাতও করেন নিয়মিত। কিছুদিন আগে ছেলের সুন্নতে খাৎনার অনুষ্ঠানও করেছেন রাজসিক কায়দায়। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ মিলিয়ে তার সম্পদের পরিমাণ কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার। যুগান্তরের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে কাস্টমসের সেই কোটিপতি নৈশপ্রহরীর হতবাক করা কাহিনী।

সৈয়দ আলী ওরফে সবুজ মতিঝিলের দিলকুশা এলাকায় জীবন বীমা টাওয়ারের চতুর্থ তলার কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালে মাস্টররোলে ঝাড়ুদার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেছিলেন। কয়েক বছর হলো চাকরিতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে স্থায়ী হন নৈশপ্রহরী পদে।

কিন্তু নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকাতে প্রবেশ করলেই তিনি হয়ে যান একজন বড়মাপের কাস্টমস কর্মকর্তা। গত কয়েক বছরে বিশাল অর্থ-বৈভব আর সম্পত্তির মালিক বনে যাওয়া সৈয়দ আলীকে নিয়ে এলাকার মানুষও সহজে মুখ খুলতে চান না।

সরেজমিন সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, মাস্টার ভিলা নামে একটি বাড়িতে মাত্র ৮০০ টাকায় মাসিক ভাড়ায় এক কামরায় জীবন শুরু করা সৈয়দ আলীর এখন সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার কালু হাজী রোডে দুটি দোতলা বাড়ি, ৪ কাঠার উপরে ৫ তলা বাড়ি, ৬ কাঠার উপর এক পাশে ১ তলা পাকা দালান ও অপর পাশে ২০ রুমের আধা-পাকা টিন শেড বাড়ির মালিক।

কালু হাজী রোড থেকে কিছুটা ভিতরের দিকে মিজমিজি দক্ষিণপাড়ার এ ব্লকের ৩৩৫/১ হোল্ডিংয়ের ৩ কাঠার ওপর সদ্য নির্মিত ৩ তলা বাড়িটিও নৈশপ্রহরী সৈয়দ আলীর।

এলাকাবাসী জানান, সৈয়দ আলীর ঢাকার রায়েরবাগে রয়েছে একটি ১ কোটি  টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট, রূপগঞ্জের বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে পরিচিত গাউসিয়াতে রয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ৫ কাঠার প্লট।

এতসব সম্পদের খোঁজ পাওয়ার পর নৈশপ্রহরী সৈয়দ আলীর ৫ তলার বাড়ির ৫ম তলার ফ্ল্যাটে দরজা দিয়ে ভিতরে তাকাতেই বিলাসবহুল ফ্ল্যাট দেখে চক্ষু চড়ক গাছ অবস্থা। এ যেন ‘খুলযা সিম সিম-আলী বাবা চল্লিশ চোরের’ গল্পকেও হার মানায়।

গণমাধ্যম কর্মী পরিচয় পেতেই তার স্ত্রী ভিতরে প্রবেশে বাধা দিয়ে সেই ফ্ল্যাটে তালা ঝুলিয়ে দিলেন। চলতে থাকে ম্যানেজ করার মিশন।

সৈয়দ আলীর স্ত্রী বলেন, তারা এত কিছু করেছেন ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা ঋণ করে। এ সময় ঋণের কাগজপত্র কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো কাগজপত্র নেই। তবে বাড়িগুলো তাদের, এমন কথা অকপটে স্বীকার করেন সৈয়দ আলীর স্ত্রী। তিনিও সংবাদ প্রকাশ না করতে সমঝোতা করার বিষয়ে একাধিকবার অনুরোধ করেন।

অনুসন্ধান চলতে থাকা অবস্থাতেই কালের খবরের এই প্রতিবেদকের কাছে গণমাধ্যম কর্মীসহ একের পর এক লোকজন তদবির করতে শুরু করেন। এ সময় এলাকাবাসী মুখ খুললে তাদের প্রতিও অশোভন আচরণ করেন সৈয়দ আলীর স্ত্রী।

এদিকে যার বিরুদ্ধে সম্পদ গড়ার এত অভিযোগ, সেই সৈয়দ আলী সবুজের ব্যাখ্যা জানতে তার মুখোমুখি হতে চাইলে নানা টালবাহানা করে গা-ঢাকা দেন তিনি। টানা ৬ দিন চেষ্টা করেও তার দেখা মেলেনি।

সৈয়দ আলীর মুখোমুখি হতে কালের খবরের প্রতিবেদক হাজির হন ঢাকার মতিঝিলের সেই জীবন বীমা টাওয়ারের চতুর্থ তলার কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেড ট্রাইব্যুনাল কার্যালয়ে। সেখানেও দেখা মিলল না সৈয়দ আলীর। উল্টো জানা গেল, নৈশপ্রহরী হলেও সৈয়দ আলী নিয়মিত দিনের বেলায় অফিসে এসে ব্যস্ত থাকেন নানা তদবিরে। গত ২৬ জুন অফিস কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ এনে তাকে কঠোরভাবে সতর্ক করে শোকজও করেছে।

শেষ পর্যন্ত সৈয়দ আলীকে পাওয়া গেল ফোনে। তার দাবি, এ সম্পদগুলো তার নয়। তার ভাই ও শ্যালক বিদেশে থাকেন, সব সম্পদ তাদের। এসবের প্রমাণ আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আলী কোনো সদুত্তর দিতে না পারলেও নানাভাবে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনৈতিক প্রস্তাবের ইঙ্গিত দিতে থাকেন।

এ সময় তিনি শুধু বলেন, স্যার আমি আইস্যা আমনের লগে দেহা করমুআনে। আমনের আর কষ্ট করতে হইবে না স্যার, আমি দেহা করমু স্যার, যেহানে কইবেন হেয়ানেই দেহা করমু।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com