রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ অপরাহ্ন
কালের খবর :ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার প্রধামন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের সভায় আইনটির খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়।
সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের চূড়ান্ত খসড়ায় বলা হয়েছে, ৬২ ধারা কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ এর ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬ ধারা বিলুপ্ত হবে। তবে সমালোচনা সত্ত্বেও ৫৭ ধারায় যে কর্মকাণ্ড অপরাধ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৮, ২৯ ও ৩১ ধারায় সেগুলোকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব ধারা লঙ্ঘনে ১০ বছর জেল ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডেরও বিধান রাখা হয়েছে।
এই আইনের প্রাথমিক খসড়ায় জাতির পিতা, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা, প্রচারণার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দের বিধান রাখা হয়েছিল। কিন্তু চূড়ান্ত খসড়ায় এসব অপরাধের শাস্তি কমিয়ে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রাথমিক খসড়ায় ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয়গুলো একাধিক ধারায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু চূড়ান্ত খসড়ায় তা একটিমাত্র ধারায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মহাপরিচালকের ক্ষমতা অর্পণ সংক্রান্ত নতুন বিধান যোগ করা হয়েছে চূড়ান্ত খসড়ায়। ৫৪ ধারায় এ গুরুত্ব্ব ও দণ্ডের মাত্রা অনুযায়ী কিছু অপরাধকে আমলযোগ্য ও অজামিনযোগ্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এর মধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, ৫৭ ধারায় যেসব অপরাধের কথা বলা হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও সেসব ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া বৈঠকে ‘জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৮’-এর খসড়াও অনুমোদনের জন্য তোলা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের আগস্টে কয়েকটি পর্যবেক্ষণসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া মন্ত্রিসভার নীতিগত অনুমোদন পায়। এর আগে থেকেই ২০০৬ সালে প্রণীত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা নিয়ে ছিল আলোচনা ও সমালোচনা। এই ধারার অপপ্রয়োগ করে সাংবাদিকদের হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে রাজনীতিক ও প্রভাবশালীদের সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে এই ধারাটির যথেচ্ছ ব্যবহারে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হুমকির মুখে রয়েছে বলেও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযোগ করা হয়েছে।
গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবির মুখে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রতিশ্রুতি দেন ৫৭ ধারা রহিত হবে।