মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
দুর্গম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেনাবাহিনীর শিক্ষা উপকরণ বিতরণ। কালের খবর ঈশ্বরগঞ্জে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় তারুণ্যের উৎসবে বর্ণাঢ্য র‍্যালি। কালের খবর খাগড়াছড়িতে ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত। কালের খবর মুন্সিগঞ্জে জাতীয় পার্টির ৩৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত। । ‘এবার টার্গেটে সাংবাদিকদের সন্তানেরা’ চট্টগ্রামের মানববন্ধনে কঠোর ব্যবস্থা নিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম। কালের খবর ঈশ্বরগঞ্জে হতদরিদ্রের লাখ লাখ টাকা নিয়ে এনজিও উধাও। কালের খবর ঈশ্বরগঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে ইউএনও’র মত বিনিময়। কালের খবর পরিবেশ সংরক্ষণ ও মানবাধিকার সাংবাদিক ফাউন্ডেশনের ২২ তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত। কালের খবর ফ্যাসিস্ট আ.লীগের নেতা মোঃ কামরুল ইসলাম নান্টুর রাজধানী ঢাকায় আবাসিক হোটেলের নামে অবৈধ পতিতা, মাদক ও অস্ত্রের রমরমা ব্যবসা। কালের খবর
বালুমহালের ইজারা আহ্বানে ক্ষোভ: সন্ধ্যার ভাঙনে ছোট হচ্ছে বানারীপাড়ার মানচিত্র। কালের খবর

বালুমহালের ইজারা আহ্বানে ক্ষোভ: সন্ধ্যার ভাঙনে ছোট হচ্ছে বানারীপাড়ার মানচিত্র। কালের খবর

বানারীপাড়া প্রতিনিধি, কালের খবর :

সন্ধ্যা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে বানারীপাড়া উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদ ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। ভিটামাটি ও ফসলি জমি হারিয়ে হাজার হাজার পরিবার নিঃস্ব ও সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়েছে।

সবকিছু হারিয়ে অনেকে যাযাবর জীবন বেছে নিয়েছেন। অপরদিকে নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ভাঙন তীব্র রূপ ধারণ করেছে। ক্রমাগত ভাঙনে বানারীপাড়ার মানচিত্র ছোট হয়ে আসছে। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বালুমহালের ইজারা আহ্বান করায় বানারীপাড়াবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বরিশালের অন্যতম ভয়ংকর নদী সন্ধ্যা বানারীপাড়া উপজেলার পাশ থেকে বয়ে গেছে। এর অব্যাহত ভাঙনে জিরারকাঠি, হক সাহেবের হাট, মসজিদবাড়ি, চাউলাকাঠি, কালীরবাজার, নলেশ্রী, দিদিহার, উত্তরকূল, বাংলাবাজার, শিয়ালকাঠি, দান্ডয়াট, উত্তর নাজিরপুর, দক্ষিণ নাজিরপুর, জম্বদ্বীপ, ব্রাহ্মণকাঠি, কাজলাহারসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাট-বাজার, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা বিলীন হয়ে গেছে। সর্বশেষ শনিবার বানারীপাড়া ফেরিঘাটের পশ্চিম তীরে ভেঙে গেছে। এ ভাঙন অব্যাহত থাকলে পুরো ফেরিঘাট ভেঙে যাবে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, একদিকে নদীর তাণ্ডব ও অপরদিকে নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের চাপে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। চলতি বছরের ৬ জুন বানারীপাড়ার সন্ধ্যা নদীর ভাঙন পরিদর্শন করেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম। এ সময় বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এখানকার ভাঙন ঠেকানো হবে।

অথচ মন্ত্রীর এ আশ্বাস উপেক্ষা করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে উপজেলার বিভিন্ন বালুমহালের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন বানারীপাড়াবাসী। এ ইজারা অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানান তারা। ইজারা বাতিল করা না হলে তারা আন্দোলনে যাওয়ার হুশিয়ারি দেন।

এর আগে স্থানীয় এমপি মো. শাহে আলম, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি রুবিনা মীরা ভাঙন প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপ নেন। নদীভাঙন রোধে এবং বালু উত্তোলন বন্ধে মাঠে নেমেছেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ উদ্দিন আহমেদ কিসলু। তিনি বলেন, এ বিষয়ে চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল জেলা প্রশাসক বরাবর দরখাস্ত দিয়েছি।

কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো সাড়া না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছি। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠিয়েছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জনপ্রতিনিধি বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে আমরা সোচ্চার হলেও জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলনে নামব। উপজেলাবাসীকে একত্র করে আমরা এ আন্দোলন করব।

স্থানীয়রা জানান, বালু উত্তোলনের ফলে সৈয়দকাঠি, চাখার, বাইশারী ও বানারীপাড়া সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বাইশারী ইউনিয়নের নাটুয়ারপাড় মহিলা মাদ্রাসা, উত্তর নাজিরপুর গ্রামের ধানেরহাট, শিয়ালকাঠি ফেরিঘাট, সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের মসজিদবাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নলেশ্রী, দিদিহার এলাকা, চাখারের কালীরবাজার, সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের গোয়াইলবাড়ি, খেজুরবাড়ি, খোদাবখশা এবং সদর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণকাঠি ও কাজলাহার গ্রামের বিস্তীর্ণ জনপদ, শিক্ষা ও ধর্মীয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদী গ্রাস করেছে। হুমকির মুখে পড়েছে খেজুরবাড়ি আবাসন, বাংলাবাজার ও উত্তর নাজিরপুর গুচ্ছগ্রাম।

এলাকাবাসী জানান, সন্ধ্যার ভাঙন রোধে সব সরকারের আমলে প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও তা শুধু প্রতিশ্রুতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। বালুমহাল ইজারা বাতিল করে ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আবদুল্লাহ সাদীদ বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে বালুমহালের ইজারা দেয়া হয়। এখনও এ প্রক্রিয়া চলছে।

এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, সঠিকভাবে ও বৈধপথে বালু উত্তোলন করলে নদীতে ভাঙন হয় না। বরং নদীর গতিপথ ঠিক থাকে। তিনি বলেন, বালুমহালের ইজারা দেয়া হয়েছে এবং ইজারাপ্রাপ্তদের সঠিক নিয়মে বালু উত্তোলনের দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এতে করে নদী আর ভাঙবে না।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com