বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ অপরাহ্ন
কালের খবর রিপোর্ট :
বরগুনায় প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রীর সামনে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার স্বামী শাহ নেয়াজ রিফাত শরীফের শরীরে বড় বড় আটটি কোপের চিহ্ন পেয়েছেন চিকিৎসকরা। বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের উপস্থিতিতে সন্ত্রাসীদের দেওয়া ধারালো অস্ত্রের কোপে রিফাতের গলা ও শরীরে বড় বড় ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ১১টা ৪০মিনিট পর্যন্ত রিফাতের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক চিকিৎসক জামিল হোসেনের নেতৃত্বে ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক চিকিৎসক মাইদুল হোসেন ও ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক চিকিৎসক তন্নী নিহত রিফাতের ময়নাতদন্ত করা হয়।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রিফাত শরীফের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর দেহে আটটি কোপের কথা জানান চিকিৎসকরা।
ময়নাতদন্তে দেখা যায়, রিফাতের গলায়, মাথায়, বুকের ওপর তিনটি বড় ক্ষত রয়েছে। তার গলার রগ কেটে গেছে। গলার রগ কেটে প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ভারী অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত করা হয়েছে। তার ডান হাত এবং বাম হাতে দুটি বড় ক্ষত রয়েছে। রিফাতের শরীরে সাত থেকে আটটি বড় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
যেসব আঘাতে বড় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এসব ক্ষত থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে রিফাত মারা যান বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
প্রসঙ্গত, গতকাল স্ত্রীর সামনে ধারালো অস্ত্র নিয়ে রিফাতের ওপর হামলার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাত্ক্ষণিকভাবে তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ভর্তির এক ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও দ্রুত ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, সন্ত্রাসী দুই যুবক ধারালো দা দিয়ে একের এর এক কোপাতে থাকে রিফাতকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারী দুই যুবককে বারবার প্রতিহত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তাঁর স্ত্রী একজনকে আটকানোর চেষ্টা করলে দ্বিতীয়জন হামলা চালায়, দ্বিতীয়জনকে থামানোর চেষ্টা করলেও অন্যজন রিফাতকে কোপাতে থাকে। আয়েশার চিৎকারে এলাকা প্রকম্পিত হলেও আশপাশের লোকজনের মধ্যে একজন ছাড়া আর কেউ ভয়ে এগিয়ে যায়নি বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।