বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৬ অপরাহ্ন
কালের খবর রিপোর্ট :- রাজধানীর মিরপুরের মূল সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করনে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেও আশানুরূপ ফল আসছে না। মিরপুরের বেশিরভাগ ফুটপাতসহ মূল সড়কের এক-তৃতীয়াংশই রয়েছে চিহ্নিত চাঁদাবাজদের দখলে। ফুটপাত দখল করে অবৈধ স্থায়ী-অস্থায়ী বাজার বসিয়ে বিভিন্ন অংকে চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই চিহ্নিত চাঁদাবাজ চক্র।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মুক্তবাংলা শপিং সেন্টারের সামনে মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, শাহ আলী মার্কেট, কো-অপারেটিভ মার্কেটের সামনে ফুটপাতসহ মূল সড়ক দখল করে বসে শত শত দোকান। ফলে এখান দিয়ে পায়ে হেটে চলাই দুষ্কর হয়ে পড়ছে। যানযট তো নিত্যনৈমত্যিক চিরচেনা রুপেই লেগে থাকে।
মিরপুর ১ নম্বর সেকশনের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক চিড়িয়াখানা রোডের সনি সিনেমা হল থেকে শুরু করে ঈদগাহ মাঠ পর্যন্ত ফুটপাত ও সড়ক দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ বাজার। বাজারে কয়েক’শ দোকান বসিয়ে চলছে নিয়মিত চাঁদাবাজির মহোৎসব। থানা পুলিশ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ২০০-২৫০ টাকা হারে চাঁদা তোলা হচ্ছে বলে দোকানদারেরা অভিযোগ করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, জি মার্ট শপিংমলের কর্ণার থেকে ডি ব্লকের রোডের মাথা পর্যন্ত সড়ক ও ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে এই অবৈধ বাজার। পরিচিত মিরপুর -১ নম্বর ঈদগা বাজার’ নামে পরিচিত এই বাজারটি। ফুটপাত ও সড়কে গড়ে ওঠা অস্থায়ী দোকান গুলোতে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা সবজি, আছে মাছ ও মুরগির দোকান। ফুটপাত ছাপিয়ে রাস্তায় চলে আসা ভাসমান দোকানে বিক্রি হচ্ছে মাছ, ফলমূল।
দেখে মনে হয়, মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা কোনো গ্রামীণ হাট। ফুটপাত ও সড়ক দখল হয়ে যাওয়া পথচারী ও যান চলাচল বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। বাঁশ-কাঠ দিয়ে ফুটপাতে এসব দোকান তোলা হয়েছে। ওপরে ত্রিপলের ছাউনি। কাঁচা সবজি, ফলমূল, আদা, পেঁয়াজ, রসুন, মাছ, মুরগি বিক্রি হচ্ছে। কয়েকজন ফুটপাতে বসে মাছ কাটছেন। লোকজন বাজার থেকে মাছ কিনে নিয়ে ফুটপাতে মাছ কাটাচ্ছেন। যত্রতত্র নির্বিকারে ময়লা আবর্জনা ফেলায় নোংরা হয়ে পড়ছে রাস্তাগুলো।
ফুুুটপাত ব্যবসায়িদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে ফুটপাতের ওপরে কয়েকটি মাত্র দোকান ছিল। ক্রেতাদের ভিড় বাড়ায় কেনাবেচাও বেড়েছে, সেই সঙ্গে হুুুর- হুুর করে বেড়েছে দোকানের সংখ্যা। এখন এখানে স্থায়ী ও ভ্রাম্যমাণ মিলিয়ে দুইশ’র মত দোকান। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকালে ভ্রাম্যমাণ দোকান আরও বেড়ে যায়। তাতে প্রায় পুরো সড়কের দুুই-তৃতীয়াংশই দখল হয়ে যায়।
ইদগাহ বাজারের দোকানদারেরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় নূর হোসেন নামক এক ব্যাক্তিকে প্রতিদিন তাঁদের দোকান প্রতি ২০০-২৫০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। তাছাড়া দোকান বসানোর সময় আদায় করা হয় বড় অংকের টাকা।
এদিকে অভিযুক্ত চাঁদাবাজ নুর হোসেনের দাবি, এই চাঁদার টাকা তিনি তোলেন ঠিকই, তবে স্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে থানা পুলিশকেই দিতে হয় সব টাকা। আর এটা কোন চাঁঁদা নয়, দোকানগুলোর ভাড়া। পুুুলিশ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের ভাগ দিয়ে যা থাকে শুধুমাত্র সেই কয়েকটি টাকাই তিনি নিয়ে থাকেন।
এ বিষয়ে শাহ্ আলী থানার অফিসার ইনচার্জ সালাউদ্দিন মিয়া সময়ের কালের খবরকে বলেন, বিষয়টি আমার অজানা। বিষয়টি সম্পর্কে আমাকে অবহিত করার জন্য ধন্যবাদ। অতি শিঘ্রই বিষয়টি তদন্ত করে প্রমাণ পেলে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে যথোপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।