শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:০১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে ভুমিকা রাখবে বাঁশরী ওয়াদুদ ফুটবল টুর্নামেন্ট : ওয়াদুদ ভূইয়া। কালের খবর গুইমারায় অস্ত্রসহ দুই সন্ত্রাসীকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। কালের খবর মাকে ৭ বছর পর পেয়ে জড়িয়ে ধরলেন তারেক রহমান। কালের খবর জমি দখলে বেপরোয়া রুহুল আমিন হাওলাদার। কালের খবর মাটিরাঙায় সেনা অভিযানে ১৪ লাখ টাকার অবৈধ সিগারেট জব্দ। কালের খবর দুর্গম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেনাবাহিনীর শিক্ষা উপকরণ বিতরণ। কালের খবর ঈশ্বরগঞ্জে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় তারুণ্যের উৎসবে বর্ণাঢ্য র‍্যালি। কালের খবর খাগড়াছড়িতে ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত। কালের খবর মুন্সিগঞ্জে জাতীয় পার্টির ৩৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত। ।
ছিলাম মিথিলার প্রেমিক, এখন হয়েছি রিকশাওয়ালা। কালের খবর

ছিলাম মিথিলার প্রেমিক, এখন হয়েছি রিকশাওয়ালা। কালের খবর

কালের খবর ডেস্ক :
মিথিলাকে এখন খুব মনে পড়ে সেলিমের। গাঁয়ের মেঠোপথ ধরে তার সঙ্গে কাটানো সময়গুলো এখনো স্বপ্নের মতো মনে হয়।

‘সে দিনগুলো ভাবতে ভালোই লাগে, ভাবনা শেষে কষ্টে বুকটা ভারী হয়ে যায়। সেই ভার সইতে পারি। কিন্তু করোনাভাইরাসের ভার যে সইতে পারছি না। এ কেমন রোগ চারপাশকে যেভাবে জেঁকে ধরেছে, আমরা তো না খেয়েই মরে যাবো।’

করোনাকালের এক বিকেলে নিজের অনুভুতিগুলো এভাবেই বলছিলেন রিকশাচালক সেলিম।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে নিজের রিকশায় বসে বিড়বিড় করে বলেন, ‘কতো রোগ জীবনে দেখলাম, সইলাম কিন্তু এমন আজব রোগ তো দেখিনি। কাজকর্ম বন্ধ, ঘরের খাবার শেষ এই অসহ্য যন্ত্রণা আর সইতে পারছি না। বন্ধের পর বন্ধ, ঘুরছে না রিকশার চাকা। পকেটও শূন্য, অন্ধকার লাগছে পৃথিবীটা। খাবো কি, মা-বাবার ওষুধই কিনতে পারছি না। রোগ যন্ত্রণায় তারা কাতরাচ্ছে।’

বয়সটা বেড়েছে বেশ, ৪০ ছুঁই ছুঁই। তরুণ বয়সে প্রতিবেশী মিথিলার সঙ্গে প্রেম হয়। গড়ায় কয়েক বছর। কিন্তু মিথিলা ভালোবাসলেও তার বাবার কারণে সম্পর্ক আর আগায়নি। সে শোক সইতে না পেরে মা-বাবাকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন সেলিম। সেই থেকে পরিচয় বদলে হয়ে যান রিকশাওয়ালা।

মিথিলা প্রসঙ্গ আসতেই মুচকি হেসে সেলিম বলেন, ‘বিয়ে তো আর করবো না। ছিলাম মিথিলার প্রেমিক, এখন হয়েছি রিকশাওয়ালা। গ্রামে তেমন যাই না। মা-বাবাকে নিয়ে বাকী জীবনটা এখানেই কাটিয়ে দেবো। মিথিলাকে ভুলতেও পারবো না আর বিয়ের পিঁড়িতেও বসবো না। সে সুখে আছে এটা ভেবেই মাঝে মধ্যে ভালো লাগে। তবে আমার কথা ভেবে সেও কষ্ট পায় সেটা আমি অনুভব করতে পারি।’
বাবা-মাকে নিয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী আলুপট্টি এলাকায় তার বসবাস। স্বাভাবিক সময়ে যে আয় হতো ভালোই চলছিল সংসার। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে আয় কমে গেছে। বলতে গেলে শূন্যের কোটায়। সবচেয়ে বড় ভয় মা-বাবাকে নিয়ে, কখন যে কি হয়ে যায়।

সেলিম বলেন, ‘দুইটার সময় গ্যারেজ থেকে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। দুই ঘণ্টায় ৯০ টাকার মতো ইনকাম হয়েছে। সেখান থেকে মালিককে দিতে হবে ৬০ টাকা। বাকী টাকা দিয়ে কি করবো। খাবার কিনবো, নাকি ঘর ভাড়ার জন্য টাকা জমাবো। তার ওপর মা-বাবার ওষুধ তো আছেই।’

তিনি বলেন, ‘বাবা ডায়াবেটিকসের রোগী আর মায়ের লিভারের সমস্যা। প্রতিদিন দুইজনের দুইশ টাকার ওষুধ লাগে। ৫ হাজার টাকা জমানো ছিল। এ কয়দিন সেই টাকাও শেষ। এখন কি করবো। কেমনে কিনবো ওষুধ।’

সেলিম বলেন, ‘কে বুঝবে আমাদের কষ্ট। কাজ করে খাই, সাহায্যের জন্য কোথাও যেতেও পারিনা। গেলে যদি বলে, তুমি না কাজ করে খাও। বহুত ঝামেলার মধ্যে আছি। কাউকে কিছু বলতেও পারছি না। এ অবস্থায় যদি মালিককেও টাকা না দেওয়া লাগতো তবুও একটু হতো। চিন্তায় আর ভালো লাগে না। রিকশা চালিয়েও শান্তি পাচ্ছি না, অস্থিরতা কাজ করে। কবে যে এ করোনাভাইরাস যাবে, আর আমরা ঠিকমতো কাজ করে খেতে পারবো।’

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com