সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৭ পূর্বাহ্ন
মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি, কালের খবর : কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরের ৫০ শয্যার হাসপাতালটি জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। দীর্ঘদিন ধরে এখানে ডাক্তার ও নার্স সংকট থাকায় এ উপজেলার প্রায় ছয় লাখ মানুষ মানসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে গাইনি, মেডিসিন, অ্যানেসথেসিয়া, সার্জারি ও ডেন্টাল সার্জন বিশেষজ্ঞ নেই। সিনিয়র স্টাফ নার্স, মিডওয়াইফারির দুটি পদ, ফার্মাসিস্ট, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, পরিসংখ্যানবিদ, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী নার্সসহ নৈশ্যপ্রহরী পদ শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এক্স-রে মেশিন অকেজো থাকায় রোগীরা কোনো ধরনের এক্স-রে সেবা পাচ্ছে না। বর্তমানে হাসপাতালের একজন মেডিক্যাল কর্মকর্তা চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। তবে রোগীদের অভিযোগ তিনি হাসপাতালে রোগী দেখেন না। প্রাইভেট চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এ অবস্থায় হাসপাতালে দরিদ্র রোগীরা এলে একজন সহকারী মেডিক্যাল কর্মকর্তা ও নার্সরা ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন।
উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কোনো জটিল রোগী এখানে এলে তাদের তাৎক্ষণিক পার্শ্ববর্তী থানা দেবিদ্বারে বা জেলা সদর কুমিল্লা মেডিক্যাল হাসপাতাল স্থানান্তর করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দরিদ্র রোগীর স্বজনদের বিপাকে পড়তে হয়।
গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে মুরাদনগর উপজেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডাক্তার না থাকায় কয়েকজন রোগী সহকারী মেডিক্যাল কর্মকর্তাকে দেখিয়ে ওষুধ নিচ্ছে। সদর ইউপির ধনিরামপুর গ্রামের ফাতেমা বেগম বিষপান করলে চিকিৎসার জন্য তাকে এ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু কোনো ডাক্তার না পেয়ে চরম বিপাকে পড়ে তাঁর স্বজনরা।
বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বলিক লাল বলেন, ‘ডাক্তার সংকট থাকায় দীর্ঘদিন ধরে মুরাদনগরবাসী চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা জরুরি ডাক্তার নিয়োগ দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। ’
অপর দিকে ডাক্তারের এই সংঙ্কট অবস্থায় হাসপাতাল কর্মকর্তা (টিএইচও) হাসপাতালে অবস্থান না করে জেলা সদরে থাকেন বলে হাসপাতালের একাদিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, হাসপাতাল কর্মকর্তা আলী নূর বশির কুমিল্লা জেলা শহরে থাকেন। সেখান থেকে মুরাদনগরে আসতে দুঘণ্টা হয় এবং যেতেও দুঘণ্টা সময় ব্যায় হয়। বিকালে তিনি পাশের থানা দেবিদ্বার প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী দেখেন। সকাল এগারোটা থেকে বারটা কোনো কোনো সময় একটা পর্যন্ত মুরাদনগর হাসপাতালে সময় দিয়ে তিনি লাপাত্তা হয়ে যান।
এই বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচ) ডা. আলী নূর বশিরের সাথে কথা বলেন, ‘এ হাসপাতালে ডাক্তার, নার্সসহ বিভিন্ন পদে জনবল সংকট রয়েছে। কিন্তু এতো বড় উপজেলায় চিকিৎসক সংকট দিয়ে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব নয়। বিষয়টি উপর মহলকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন