রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জুলাই-আগষ্টে শহীদদের ছাড়া আর কারো প্রতি দায়বদ্ধতা নেই। কালের খবর পার্বত্য চট্টগ্রামের সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল কাসাভা। কালের খবর চবি এক্স স্টুডেন্টস ক্লাব ঢাকা এর সভাপতি ব্যারিস্টার ফারুকী এবং সাধারণ সম্পাদক জিএম ফারুক স্বপন নির্বাচিত। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল সম্পন্ন। কালের খবর সীতাকুণ্ড হবে বাংলাদেশের অন্যতম মডেল উপজেলা : আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী। কালের খবর মাটিরাঙ্গার গুমতিতে মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মুরাদনগরে সামাজিক সংগঠনের শীতের কম্বল বিতরণ। কালের খবর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে ‘স্বাধীনতা সোপানে’ শ্রদ্ধা নিবেদন। কালের খবর জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন। কালের খবর
ভালোবাসার ফুল যখন সর্বনাশের…অপূর্ব সুন্দরের কুৎসিত অবয়ব!

ভালোবাসার ফুল যখন সর্বনাশের…অপূর্ব সুন্দরের কুৎসিত অবয়ব!

মো: মোত্তাকিম হোসেন (লাভলু) : পপি ফুলকে পারস্যে বলা হয় ভালোবাসার ফুল। উর্দুতে গুল-ই-লালাহ বা শহীদের প্রতীক। পপি গাছ এর আদি নিবাস ইউরোপ। ফুলের রং সাদা, লাল, গোলাপি, হলুদ। ফুলের পাপড়িগুলো রেশমের মতো কোমল।

পপি গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Papaver somniferum। এই নামকরণ করা হয়েছে গ্রীক পুরাণের ঘুমের দেবতা ‘সোমনাস’-এর নামানুসারে। কারণ পপি ক্ষেতে বয়ে যাওয়া বাতাসও প্রাণীদের ঘুম পাড়িয়ে দিতে সক্ষম!

ভয়ঙ্কর সুন্দরের প্রতীক পপি। একই সঙ্গে বিখ্যাত এবং কুখ্যাত একটি গাছ। সুন্দর ফুলের পাশাপাশি এ গাছের রয়েছে নানা ঔষধি গুনাগুনও। আবার এ গাছের ফল থেকেই তৈরি হয় সর্বনাশা মাদক আফিম, হিরোইন, মরফিন।

আফিম
পপি গাছের কাঁচা ফলের খোসা কাটলে যে সাদা রস পাওয়া যায় তা ২৪ ঘণ্টা রোদে শুকালে পাওয়া যায় আফিম। তখন এর রং হয়ে যায় কালো বা কালচে বেগুনী।

বেদনানাশক হিসেবে মানুষ আফিমের ব্যবহার করে আসছে সেই সুপ্রাচীন কাল থেকেই। আফিমের চিকিৎসাগত ব্যবহারই একসময় ছিল প্রধান।

ব্যথা কমানো, অনিদ্রা দূর করা, কাশি ও ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কাজে চলতো এর ব্যবহার। কিন্তু ধীরে ধীরে এর নেশা সৃষ্টির ক্ষমতাও প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর অপপ্রয়োগ শুরু হয়ে যায়।

প্রথমে রোমানরা সেখান থেকে আরবীয়রা, তাদের থেকে ভারত, চীন ইত্যাদি দেশেও ছড়িয়ে পড়ে এর প্রচলন।

মরফিন
নেশা সৃষ্টির উপাদান থাকে আসলে পপিফলের রসে। এর মধ্যে প্রধান হলো মরফিন। পপি ফলে এটা থাকে শতকরা প্রায় ১০ ভাগ পরিমাণে। এছাড়া নোসকাপিন, প্যাপাভেরিন, কোডিন, থিবেইন ইত্যাদিও থাকে অল্প পরিমাণে। এগুলোও মাদকতার সৃষ্টি করে এবং অনেক কাশির ওষুধেও মেশানো থাকে মরফিন।

ব্যথা কমাতে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বা হার্টফেল করার মতো অবস্থায় উদ্বেগ দূর করতে, ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে, অস্ত্রোপচারের আগে, কাশি কমাতে, অসুস্থ ব্যক্তির অতিরিক্ত শারীরিক চাঞ্চল্য দূর করতে, এমনকি কখনো কখনো মুমূর্ষু ব্যক্তির মনে আনন্দের ভাব জাগাতেও মরফিন ব্যবহার করা হয়।

কোনো রোগীকে ৪ ঘণ্টা পর পর মরফিন দিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সে এর ওপর শারীরিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।

মনের মধ্যে আনন্দের ভাব জাগায় বলে মানসিক নির্ভরশীলতাও চলে আসে। ফলে ধীরে ধীরে ব্যক্তি নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং তার জীবন, চিন্তা-চেতন, ব্যক্তিত্ব-মানসিকতা সবকিছুই মরফিন নির্ভর হয়ে পড়ে।
হিরোইন
নেশার রাজা বলি আমরা হিরোইনকে। মরফিন আসক্তদের আসক্তি কমানোর জন্যই হিরোইনের আবিষ্কার, অর্থাৎ হিরোইন ছিল মরফিন আসক্তদের ওষুধ। কাঁচা আফিম থেকে তৈরি হয় এই মরণ নেশা হিরোইন। একবার কেউ এতে আসক্ত হয়ে পড়লে আর বেরিয়ে আসা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

কাঁচা আফিম ভিজিয়ে পরিশুদ্ধ করে পাওয়া যায় মরফিন। এর পর বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় এর সঙ্গে অন্যান্য উপজাত মিশানো হয়। সর্বশেষে তাপ দিয়ে তৈরি করা হয় ডায়া এসিটিল মরফিন বা হিরোইন।

হিরোইনের আসক্তি ক্ষমতা ব্যাখ্যা করতে ইন্ডিয়ার মনোচিকিৎসক ডাঃ শত্রুজিৎ দাশগুপ্ত বলেন যে, ‘যৌন মিলনে যে সুখকর অনুভূতি হয়, তারচেয়ে অন্তত দশগুন আনন্দ আসে একবার হিরোইন চেজ করলে।’

আর এই সব মরণ নেশা দ্রব্যই তৈরী হয় পপি গাছের ফল ও ফুল থেকে। তবে সব পপি ফুল থেকেই মাদক দ্রব্য তৈরি হয় না। পপি ফুলের অনেক নিরীহ প্রজাতি রয়েছে যা বাগানে শোভা পায়।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com