শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২১ অপরাহ্ন
মিহিরুজ্জামান সাতক্ষীরা, কালের খবর :
সাতক্ষীরার বিশ লক্ষাধীক মানুষের চিকিৎসা সেবার মাধ্যম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,বহুমুখি চিকিৎসা সেবার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলা জেলাবাসির স্বপ্ন সাধ পুরনের অবারীত ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হওয়া এই চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটি কিডনি রোগীদের মৃত্যু পথে বসাতে চলেছে। সরকারি ভাবে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উনশিটি কিডনি ডায়ালাইসিস মেশিন সরবরাহ করা হয়। জেলার কিডনি রোগীদের পাশাপাশি জেলার বাইরের কিডনি রোগীরাও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিটের মাধ্যমে কিডনি ডায়ালাইসিস করে জীবন রক্ষা করে আসছিলেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় কম খরচে প্রান্তীক পর্যায়ের হত দরিদ্ররা বিশেষ করে কিডনি রোগীরা ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে ভালই ছিলেন। কিন্তু গত কয়েক দিন যাবৎ কিডনি রোগীদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম ঘটেছে। গত বুধবার সংশ্লিষ্ট ইউনিট হতে রোগীদের জানানো হয় সপ্তাহে দুই দিনের পরিবর্তে একদিন করে ডায়ালাইসিস করা হবে। এই খবরে রোগীদের পাশাপাশি রোগীর সজ্বনদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা এবং আতঙ্ক সেই পরিস্থিতি অব্যাহত আছে। অত্যাধুনিক এবং মানসম্মত মেশিন গুলো কবে কিভাবে নষ্ট হলো এবং জীবন রক্ষাকারী মেশিন গুলো দ্রুততার সাথে মেরামতের ব্যবস্থা করা হলো না কেন? এমন প্রশ্ন জনমনে। উনিশটি মেশিনের মধ্যে ষোল, সতেরটি মেশিন পুরোপুরি নষ্ট। দুই/তিনটি মেশিন দিয়ে কোন ক্রমে চলছে কিডনি ডায়ালাইসিস কার্যক্রম। শতাধিক কিডনি রোগীকে মৃত্যুমুখে ফেলে দেওয়ার দায় কে নেবে? একদিনে তো সতেরটি মেশিন নষ্ট হইনি। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে,দীর্ঘ চার/পাঁচ বছরে ক্রমান্বয়ে নষ্ট হতে থাকে মেশিন গুলো। কিন্তু মেরামত করার ক্ষেত্রে কতটুকু আন্তরিকতা বা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক তা দিনের আলোর মত স্পষ্ট। মেশিন গুলো নষ্ট হওয়ায় কিডনি রোগীরা কেবল কাঙ্খিত সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে তা নয় সরকারি সম্পদ অযত্নে, অবহেলায় অথবা দেখ ভালের অভাবে নষ্ট হয়েছে এ দায় কর্তৃপক্ষ কোন অবস্থাতেই এড়াতে পারে না। রোগীরা আগেই আচ করতে পেরেছিলেন আগামীতে তাদের জন্য মহা বিপদ অপেক্ষা করছে কারন তারা বিভিন্ন মাধ্যমে জেনে ছিলেন তাদের জীবন রক্ষাকারী মেশিন গুলো নস্ট হয়েছে এবং হচ্ছে। রোগী ও তাদের স্বজনরা মেশিন সারাই এর তাগিদ দেন একাধিক বার পরিচালককে কিন্তু কোন কোন কাজ হইনি। মেডিকেল কলেজের একাধিক সূত্রে জানায়, সময় মত অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়কে জানানো হলে এতো দিনে নষ্ট হওয়া মেশিন গুলো সারাই করানো সম্ভব হতো। সরকারের কোটি কোটি টাকা মূল্যের কিডনি ডায়ালাইসিসমেশিন গুলো চালনায় নিশ্চয়ই জনবল নিশ্চিত করা হয়েছে। দক্ষ কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন বিশেষজ্ঞরাই মেশিন পরিচালনা করবেন এটাই বিধি এবং নিয়ম এক্ষেত্রে কতটুকু বলার সুযোগ যে অদক্ষরাই মেশিন পরিচালনা করছেন বা করতেন। তারা তো যথাযথ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ প্রাপ্ত, আর তারা যদি অদক্ষ হন তাহলে তাদের হাতে সরকারের কোটি কোটি টাকা মূল্যের মেশিন তুলে দেওয়া হলো কেন? রোগী ও স্বজনদের প্রশ্ন মেশিন নষ্ট হতেই পারে প্রয়োজন যথা সময়ে সরাই করা। জেলার গরীব অসহায় কিডনি রোগীদের তো বেসরকারি হাসপাতালে যেয়ে বেশী বেশী অর্থ খরচ করে কিডনি ডায়ালাইসিস করার সক্ষমতা নেই। অবিলম্বে মেশিন গুলো মেরামত না হলে নিশ্চিত সাতক্ষীরার কিডনি রোগীদের জীবন বিপন্ন হতে পারে এমন আশঙ্কা রোগী ও তাদের স্বজনদের।