শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৫ পূর্বাহ্ন
যশোর প্রতিনিধি, কালের খবর :
যশোরের কান্না বলা হয় ভবদহকে। বছরের পর বছর
জমে থাকে পানি। পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় অভয়নগর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের কৃষক প্রশান্ত বকসীর ৪২ শতাংশের প্রতি বিঘা ওই জমি আট বছর ধরে জলাবদ্ধ। এ সময়ে তিন ফসলি ওই জমি থেকে তিনি কোনো ফসল পাননি।
যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলা এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল। পলি পড়ে এই অঞ্চলের মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদী নাব্যতা হারিয়েছে। এ কারণে নদী দিয়ে এই এলাকার পানি নামছে না। এ অবস্থায় বৃষ্টির পানিতে এলাকার বিলগুলো প্লাবিত হয়। বিল উপচে পানি ঢোকে বিলসংলগ্ন গ্রামগুলোতে। প্রতিবছর বর্ষাকালে বৃষ্টির পানিতে অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলার বিলসংলগ্ন গ্রামগুলো প্লাবিত হয়। অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হন এলাকার প্রায় তিন লাখ মানুষ।ভবদহ অঞ্চলে অন্তত ৫২টি ছোট–বড় বিল আছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম বোকড়, খুকশিয়া, কেদারিয়া, কপালিয়া, ডুমুর, পায়রা ও দামুখালীর বিল।
বিলগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ বিলের ওপরের অংশে ধান হচ্ছে। তবে বিলের নিচের দিকে শুধু পানি আর পানি। বিল–সংলগ্ন মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদী শুকিয়ে সরু খালের মতো হয়ে গেছে।
অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলা তিনটির ভবদহ অঞ্চলে ২৬ হাজার ২৮ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়। জলাবদ্ধতার কারণে ওই অংশে এবার ৪ হাজার ৮০১ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়নি। এর মধ্যে মনিরামপুর উপজেলায় ২ হাজার ৯২৬ হেক্টর, কেশবপুর উপজেলায় ১ হাজার ৩৫ হেক্টর এবং অভয়নগর উপজেলায় ৮৪০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ভবদহে ২০টি পাম্পসেট (সেচযন্ত্র) দিয়ে সেচ চলছে। এতে এলাকার বেশির ভাগ বিল থেকে পানি নেমে গেছে। ওইসব বিলে এবার গত বছরের চেয়ে প্রায় চার হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে ।