শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করে পশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে। কালের খবর সমাজে “শান্তি স্থাপন ও সহিংসতা নিরসনে — সাতক্ষীরায় তাপদাহে রিকশাচালকদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতারণ। কালের খবর প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে বাগান, ঝরছে আম, শঙ্কায় চাষীরা। কালের খবর ট্রাফিক-ওয়ারী বিভাগ যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে। কালের খবর মারামারি দিয়ে শুরু হলো ‘খলনায়ক’দের কমিটির যাত্রা। কালের খবর কুতুবদিয়ার সাবেক ফ্রীডম পার্টির নেতা আওরঙ্গজেবকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন। কালের খবর সাতক্ষীরায় লোনা পানিতে ‘সোনা’ নষ্ট হচ্ছে মাটির ভৌত গঠন। কালের খবর সড়ক প্রশস্তকরণের কাজে অনিয়মের মহোৎসব। কালের খবর ইপিজেড থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর উদ্যোগে আইন শৃঙ্খলা ও কিশোর গ্যাং প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। কালের খবর
অতিথি পাখিদের অভয়ারণ্য কোটালীপাড়ার ঘাঘর-কান্দা

অতিথি পাখিদের অভয়ারণ্য কোটালীপাড়ার ঘাঘর-কান্দা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : মাত্র শুরু হয়েছে বসন্তকাল। শীতকালের অতিথি পাখি এই বসন্তে যেন ডানা মেলেছে মন খুলে। প্রকৃতি ও পাখির এমন চোখ ধাঁধানো দৃশ্য দেখা যাচ্ছে অতিথি পাখিদের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ঘাঘর-কান্দা এলাকায়। দুই যুগ ধরে পাখিদের নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তুলেছেন এই এলাকার পাখিপ্রেমী মানুষ। বিল-বাঁওড়ে যেমন পাখি শিকারের মহা উত্সব চলে, এখানের চিত্রটা ঠিক তার উল্টা। তাই নিরাপদ আশ্রয়ে শীতকালজুড়ে প্রতিদিনই হাজারো পাখি এখানে আসে। কিন্তু এবারের বসন্তেও যেন পাখির সংখ্যা আরো বেড়েছে। এখনো অসংখ্য গাছে আশ্রয় নেয়া পাখিদের কলকাকলিতে মুখর থাকে পুরো এলাকা। এমন দৃশ্য দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে নিয়মিত অনেক পর্যটক আসেন। তবে, বিলে পাখি শিকারের কারণে পাখির সংখ্যা দিন দিন কমেছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ঘাঘর-কান্দা বাজারের কোলঘেষা প্রায় ২০ বিঘা জমির ওপর সবুজ ছায়া ঘেরা শত শত গাছের সারি। ঢাকা-০৬ আসনের এমপি কাজী ফিরোজ রশিদ ও কোটালীপাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদ হোসেন মন্টুর দৃষ্টিনন্দন বাড়ি। টানা দুই যুগ ধরে এই বাড়িটি ঘিরে অতিথি পাখির অভয়ারণ্যে গড়ে উঠেছে। প্রতি বছর শীতকালজুড়ে অতিথি পাখির দল ঝাঁক বেঁধে হাজির হতে থাকে এখানে। অসংখ্য গাছে হাজার হাজার রং বেরঙের নানা জাতের পাখির ঝাঁকে ঝাঁকে এমন ছুটোছুটি, মন কেড়ে নেবে যে কোনো মানুষের। পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ খানিকের জন্য হলেও ভুলিয়ে দেবে ইট পাথরের জীবনের কথা।

অন্যান্য বছরের মতো এবারো এখানে সকাল-বিকেল হাজার হাজার পাখির দেখা মিলবে। এসব পাখি আশপাশের বিলে খাবার সংগ্রহ শেষে আশ্রয় নেয় এখানের গাছগুলোতে। বাজার এলাকায় মানুষের কোলাহলে কিছুটা বাধা হলেও কমেনি অতিথি পাখি আসার সংখ্যা। পাখিদের অভয়ারণ্য ও যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হওয়ায়, স্থানীয় পাখিপ্রেমীরা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে নিয়মিত অনেক পর্যটক আসে। তারা পাখি দেখে অনেক আনন্দ পান। তবে, বিলে পাখি শিকারের কারণে পাখির সংখ্যা দিন দিন কমেছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

পাখিপ্রেমী কাজী অমিত মাহমুদ জানান, দুই যুগ ধরে আমাদের এই বাড়িটি ঘিরে পাখিদের অভয়ারণ্য। স্থানীয় পাখিপ্রেমী মানুষ ও প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় এই অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতি বছরই অতিথি পাখি মুখর থাকে পুরো এলাকা। এখানে দিন-রাত সব সময়ই পাখিরা অবস্থান করে। অন্যান্য বছরে শীতকালে পাখিদের বিচরণ দেখা গেলেও এবার বসন্তের শুরুতেও পাখিদের বিচরণ অনেক বেশি। বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শত শত পাখিপ্রেমী মানুষ এখানে পাখি দেখতে আসেন।

স্থানীয় সাংবাদিক মিজানুর রহমান বুলু বলেন, প্রতি বছর এই সময়টিতে এখানে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির আগমন ঘটে। বাচ্চাদের নিয়ে প্রায়ই এখানে পাখি দেখতে আসি। মূলত ছেলেমেয়েদের পাখি সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা দিতেই এখানে আসি।

কোটালীপাড়ার শিক্ষার্থী সাকিব আহম্মেদ জানান, স্থানীয়দের সহযোগিতায় এই বাড়িটি ঘিরে অতিখি পাখিদের অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হয়েছে। এই এলাকায় ভুলেও কেউ পাখি শিকারের কথা চিন্তা করে না। কিন্তু বিলে যখন পাখিরা খাবার আহরণের জন্য যায়, তখন কিছু দুষ্টু প্রকৃতির মানুষ এই পাখি শিকার করে। এটা বন্ধ করা গেলে পাখিদের আগমন আরো বাড়বে।

পর্যটক কাজী মেজবাহ আমীন রাজ বলেন, সাধারণত লোকালয়ে পাখিদের এমন অভয়ারণ্য দেখা যায় না। তবে এই এলাকাটা সত্যিই অন্যরকম। এখানের প্রতিটি মানুষ পাখি ভালোবাসে। আমিও ভালোবাসার টানেই এখানে পাখি দেখতে ছুটে এসেছি। অসাধারণ লাগছে পাখিদের এমন বিচরণ দেখে।

জেলার কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিলাল হোসেন জানান, কোটালীপাড়া বিল-বাঁওড় অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় প্রতি বছর অসংখ্য অতিথি পাখি এখানে আসে। কিছু অসাধু লোক রাতের আঁধারে কিছু কিছু এলাকায় পাখি শিকার করে বলে জানতে পেরেছি। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। অতিথি পাখির অবাধ বিচরণ ও শিকার বন্ধে প্রশাসন বরাবরই তত্পর রয়েছে। এ ছাড়া অতিথি পাখিদের জন্য উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভয়ারণ্য গড়ে তোলার চিন্তাভাবনা করছেন বলে তিনি জানান।

শীত মৌসুমে আসা অতিথি পাখিদের রক্ষায় জেলার অন্যান্য উপজেলায়ও এমন অভয়ারণ্য গড়ে তোলার দাবি সবার। সেই সঙ্গে পাখি শিকার বন্ধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারিরও দাবি পাখিপ্রেমীদের।

কালের খবর/১৫/২/১৮

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com