শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৩ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
তীব্র গরমে পথচারীদের সুপেয় পানি সরবরাহ করছে ফায়ার সার্ভিস। কালের খবর সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করে পশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে। কালের খবর সমাজে “শান্তি স্থাপন ও সহিংসতা নিরসনে — সাতক্ষীরায় তাপদাহে রিকশাচালকদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতারণ। কালের খবর প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে বাগান, ঝরছে আম, শঙ্কায় চাষীরা। কালের খবর ট্রাফিক-ওয়ারী বিভাগ যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে। কালের খবর মারামারি দিয়ে শুরু হলো ‘খলনায়ক’দের কমিটির যাত্রা। কালের খবর কুতুবদিয়ার সাবেক ফ্রীডম পার্টির নেতা আওরঙ্গজেবকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন। কালের খবর সাতক্ষীরায় লোনা পানিতে ‘সোনা’ নষ্ট হচ্ছে মাটির ভৌত গঠন। কালের খবর সড়ক প্রশস্তকরণের কাজে অনিয়মের মহোৎসব। কালের খবর
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ড্রাইভারের ঢাকায় একাধিক বাড়ি, গাড়ি, শত কোটির মালিক॥ কালের খবর

স্বাস্থ্য অধিদফতরের ড্রাইভারের ঢাকায় একাধিক বাড়ি, গাড়ি, শত কোটির মালিক॥ কালের খবর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কালের খবর :  স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিবহন পুলের গাড়িচালক আব্দুল মালেক ওরফে ড্রাইভার মালেক (৬৩) অষ্টম শ্রেণী পাস। তৃতীয় শ্রেণীর সাধারণ কর্মচারী হয়েও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি, দামী পাজেরো গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ শতকোটি টাকা মালিক তিনি। পাশাপাশি জাল টাকার ব্যবসা ছাড়াও তিনি এলাকায় চাঁদাবাজিতে জড়িত। আর স্বাস্থ্য অধিদফতরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণী নিয়োগ বাণিজ্য ছিল ওপেন সিক্রেট। রবিবার ভোরে র‌্যাব-১ এর একটি দল রাজধানীর তুরাগ কামারপাড়ার বামনেরটেক এলাকার ৪২ নম্বর হাজী কমপ্লেক্সে বিলাসবহুল বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে। সেখানে তার কাছ থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশী জালনোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়। তাকে গ্রেফতারের পর আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে র‌্যাব। এরপর জানা যায়, বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত রয়েছে তার।

র‌্যাব জানায়, শুধু স্বাস্থ্য অধিদফতরের তদ্বিরবাজি করে বিপুল অর্থের মালিক বনেছে। পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র-জালনোটের কারবারের পাশাপাশি চাঁদাবাজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন আব্দুল মালেক ওরফে বাদল ওরফে ড্রাইভার মালেক। র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর মালেক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অবৈধ অস্ত্রের কারবার, জালনোটের কারবারসহ চাঁদাবাজি করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সাবেক এক মহাপরিচালকে আস্থাভাজন বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মচারী হলেও মালেক ছিলেন প্রভাবশালী। তার দাপটে কেউ কথা বলতে সাহস পেত না। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর নিয়োগ-বদলি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে। মালেক একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হলেও ব্যবহার করতেন দামী পাজেরো গাড়ি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল জানান, সম্প্রতি র‌্যাবের প্রাথমিক গোয়েন্দা অনুসন্ধানে রাজধানীর তুরাগ এলাকায় আব্দুল মালেক ওরফে ড্রাইভার মালেকের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা, জাল টাকার ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি তার এলাকায় সাধারণ মানুষকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শক্তির মহড়া ও দাপট দেখিয়ে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছেন এবং জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছেন। তার ভয়ে এলাকায় সাধারণ মানুষের মনে সর্বদা আতঙ্ক বিরাজ করে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা এবং জাল টাকার ব্যবসা করে আসছেন। অনুসন্ধানে তার আয়-ব্যয়ের সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান ও সম্পদের বিস্তার অসামঞ্জস্যতা লক্ষ্য করা যায়। একজন তৃতীয় শ্রেণীর সাধারণ কর্মচারী হয়েও ঢাকার বিভিন্নস্থানে তার একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি, দামী গাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণে অর্থ গচ্ছিত আছে বলে জানা যায়। এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১ বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রুত ছায়া তদন্ত শুরু করে। তার ওপর গোয়েন্দা নজরদারির শুরু হয়। এরপরই রবিবার ভোরে তাকে গ্রেফতার করে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল জানান, তিনি পেশায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিবহন পুলের একজন চালক। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণী। ১৯৮২ সালে সাভার স্বাস্থ্য প্রকল্পে চালক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি বলেন, পরে ১৯৮৬ সালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিবহন পুলে চালক হিসেবে চাকরি শুরু করেন। বর্তমানে তিনি প্রষণে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদফতরে কর্মরত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা, জালনোট ব্যবসাসহ অস্ত্রের মাধ্যমে ভীতি প্রদর্শনপূর্বক সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, এসব অবৈধ কর্মকান্ড করে প্রায় দীর্ঘ তিন যুগ ধরে তিনি নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক বনেছে। র‌্যাব জানায়, মালেকের তার স্ত্রীর নামে দক্ষিণ কামারপাড়ায় দুটি সাততলা বিলাসবহুল ভবন, ১৫ কাঠা জমিতে একটি ডেইরি ফার্ম, ধানমন্ডির হাতিরপুল এলাকায় সাড়ে চার কাঠা জমিতে একটি নির্মাণাধীন ১০তলা ভবন রয়েছে। র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক জানায়, মালেকের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও জাল টাকার ব্যবসায় জড়িত থাকা এবং অস্ত্র ও জাল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনে পৃথক দুটি মামলা হবে। তাকে রাজধানীর তুরাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে র‌্যাবের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com