রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন
মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল থেকে, সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম হাসান, কালের খবর : মহামারি করোনাভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সিলেটে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায়, দুস্থ, দিনমজুরদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কয়েকদিন ধরে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্প কমান্ডার এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।
একজন বিসিএস ক্যাডার অফিসার এবং র্যাবের কমান্ডার হওয়া সত্ত্বেও খাদ্যসামগ্রীর বস্তা নিজে বহন করি কেন? এ প্রসঙ্গে আমাদের প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের উত্তরে র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্প কমান্ডার এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন,অফিসাররা বোঝা মাথায় নিলে জাত চলে যাবে, বোঝা বহন করা শুধু নিচের র্যাংকের লোকদের কাজ- এমন অমানবিক ও মধ্যযুগীয় চিন্তাধারায় আমি নয়, আমি সবসময় মনে করি মানুষের কল্যাণে সবাই মিলে মিশে কাজ করাটাই উত্তম ।
এই এএসপি আনোয়ার শামীম আরো বলেন, আমি যদি আমার অধীনস্থ র্যাব সদস্যদেরকে বোঝা বহন করবার আদেশ দিয়ে নিজে খালি হাতে হাঁটতাম, তাহলে তারা হয়তো আমাকে স্বার্থপর একজন নেতা হিসেবেই চিহ্নিত করতো, যা তাদের কর্মস্পৃহা ও মনোবলকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতো নিশ্চিত আমি মনে করি।
তাই প্রতিটি ক্ষেত্রে অধস্তনদের সমান ভার নেওয়া, চাল-ডালের বস্তা মাথায়/হাতে নিয়ে সবার সামনে সামনে চলাই আমার নেতৃত্ব দানের স্টাইল। কাঁধের র্যাংক দেখে নয়, কাজের মাধ্যমেই প্রমাণ হোক এখানে কমান্ডার কোন জন।
এর আগেও র্যাবের এই কর্মকর্তা রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কুলাউড়া, মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অসহায়দের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেন। খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে- চাল, ডাল, আলু, তেল, লবণ ও পেঁয়াজ।
উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ করোনা প্রতিরোধের লক্ষ্যে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল পৌর এলাকার চৌমোহনায় নিরাপদ কর্নার শিরোনামে পথচারীদের জন্য বিনামূল্যে ২৪ ঘণ্টা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করে দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন এএসপি আনোয়ার।
এর আগে শাবি ভর্তি পরীক্ষার্থী ছাত্রীকে নিজের গাড়িতে করে কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েও ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন তিনি। এছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়ে মানুষের ভালবাসায় কুড়িয়েছেন তিনি।
শ্রীমঙ্গল র্যাব কমান্ডার আনোয়ার হোসেন শামীম ৩৪তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। ২০১৮ সালের মার্চ মাস থেকে তিনি র্যাব-৯ এ কর্মরত রয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার উত্তর বড়বিল গ্রামে।