বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২০ পূর্বাহ্ন
কালের খবর ডেস্ক : ঢাকা- অধ্যক্ষ সিরাজের নির্দেশেই ফেনীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পরিকল্পনা করে আগুন দিয়ে হত্যা করা হয়। জেলে বসেই সে এই নির্দেশ দেয়। আর নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার পরিকল্পনা করেন শাহাদাত হোসেন শামীম।
এই হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে পুলিশকে দেওয়া জবানবন্দিতে এই তথ্য জানায় নুসরাত হত্যা মামলার আসামি নূর উদ্দিন।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই প্রধান বনোজ কুমার মজুমদার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নুসরাত হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে গ্রেপ্তারকৃত নুর উদ্দিন। ঘটনাটি পরিকল্পিত বলেও জানিয়েছেন তিনি। জবানবন্দিতে সে জানায়, অপারেশনে চারজন বোরখা পরিহিতের মধ্যে দুই জন ছেলে আর বাকি দুইজন মেয়ে ছিল। তারা সবাই ওই মাদরাসার শিক্ষার্থী।
মিশনে অংশ নেয়া চারজনের মধ্যে ছাত্রলীগ সভাপতি শাহদাত হোসেন শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর শম্পা বা চম্পা নামে যে ছিল সে বাইরে এসে বলছিল নুসরাতকে মারছে। সেই শম্পা বা চম্পাও গ্রেপ্তার হয়েছে।
সম্মেলনে পিবিআই আরো জানায়, এ ঘটনায় জড়িত মোট ১৩। এখন পর্যন্ত ৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- গতরাতে ধরা পড়া শামীম, এস এম সিরাজ উদ দৌলা, নুর উদ্দিন, কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, জুবায়ের আহম্মেদ, জাবেদ হোসেন এবং আফছার উদ্দিন। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অধ্যক্ষ সিরাজের মুক্তির জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে নূর উদ্দিন ও শামীমরা গত ৪ এপ্রিল স্মারক লিপি দেয়। ওইদিনই তারা জেলখানায় গিয়ে দেখা করে অধ্যক্ষ সিরাজের সঙ্গে। সেখানে সিরাজ নূরকে জিজ্ঞেস করে, তোমরা আমার জন্য কি করেছ? এদিন সিরাজ নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার নির্দেশনা দেয়।
সাংবাদিকদের বনজ কুমার বলেন, ‘ঘটনার দিন আনুমানিক সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টায় ঘটনাস্থলে ছিলেন নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, জাবেদ হোসেন, হাফেজ আবদুল কাদের এবং আরও কয়েকজন।’
তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম বলেননি পিবিআইপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘যৌন নির্যাতনের মামলা হওয়ায় আলেম সমাজকে হেয় করা হয়েছে- এই ধরনের যুক্তি দিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ জেলে থেকেই তার সাঙ্গপাঙ্গোদের নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দেন।’
বনজ কুমার আরও বলেন, ‘নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার আরও একটি কারণ আমরা জেনেছি। তা হলো- নুসরাতকে মামলার এজহারভুক্ত তৃতীয় আসামি শাহাদাত প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে সে প্রস্তাব নুসরাত ফিরিয়ে দেয়। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি শাহাদাত। মনে মনে প্রচণ্ড ক্ষোভ জন্মে তার। নুরসাতকে পুড়িয়ে মারার পেছনে সেই আক্রোশটাও কাজ করেছে