মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
আগামী নির্বাচনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি গ্রহনের আহবান জানালেন ওয়াদুদ ভুইয়া। কালের খবর সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় ৭ দফা। কালের খবর সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামকে ৫ কোটি টাকা উৎকোচ দিয়ে প্রকৌশলী আব্দুল বারেক নিয়োগ পান ২০২৪ এর জানুয়ারীতে। কালের খবর চিটাগাং ইউনিভার্সিটি এক্স স্টুডেন্ট ক্লাব ঢাকা এর আয়োজনে সম্প্রীতি ইফতার ও দোয়া মাহফিল। কালের খবর উৎসব ভাতা-ন্যার্য বাড়ি ভাড়া দাবি বিএমজিটিএ। কালের খবর ঢাকাতে আবদুল্লাহ আল নোমান এর স্মরণে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত। কালের খবর নবীনগরের তিতাস নদীতে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার। কালের খবর কুষ্টিয়া ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে এবার একদিনেই শেষ হবে লালন স্মরণোৎসব। কালের খবর বিএনপির বিরুদ্ধে মিডিয়া ক্যু হবে অচিরেই : আসিফ সৈকত। কালের খবর বরগুনার সাবেক ইউএনও ও ওসিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সাংবাদিকের মামলা। কালের খবর
সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামকে ৫ কোটি টাকা উৎকোচ দিয়ে প্রকৌশলী আব্দুল বারেক নিয়োগ পান ২০২৪ এর জানুয়ারীতে। কালের খবর

সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামকে ৫ কোটি টাকা উৎকোচ দিয়ে প্রকৌশলী আব্দুল বারেক নিয়োগ পান ২০২৪ এর জানুয়ারীতে। কালের খবর

বিশেষ প্রতিনিধি, কালের খবর : বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি’তে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ নিয়ে নানা অনিয়ম ও দলীয়করণের অভিযোগ রয়েছে। এসব প্রকল্প পরিচালকের মধ্যে বেশিরভাগই আওয়ামী মতাদর্শের। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকারের পতনের পর সরকারের বিভিন্ন সেক্টরে রদ-বদল হলেও আওয়ামী সুবিধাভোগী এসব প্রকল্প পরিচালক এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের সহযোগিতা করছেন জুলাই-আগস্টে আ’লীগ সরকারের পক্ষে রাস্তায় মিছিলে অংশ নেওয়া অধিদপ্তরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারী।

জানা যায়, এলজিইডিতে প্রকল্প তৈরিতে সহায়তাকারী দক্ষ কর্মকর্তাদের পরবর্তীতে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু বিগত সরকার এই নিয়ম না মেনে দলীয় আনুগত্য প্রকাশকারী কম যোগ্যতা সম্পন্ন কর্মকর্তাদেরও এই পদে নিয়োগ দেয়।

এলজিইডি’র আওতায় ৬০২ মিলিয়ন ডলার (৬ হাজার ৩শ কোটি টাকা প্রায়) বাজেটের নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প আইইউজিআইপি এর প্রকল্প পরিচালক হিসেবে তৎকালীন গাজীপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল বারেক নিয়োগ পান ২০২৪ এর জানুয়ারীতে। সুত্রমতে বিগত সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী তাজুল ইসলামকে ৫ কোটি টাকা উৎকোচ দিয়ে তিনি প্রকল্প পরিচালক হয়েছিলেন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এলজিইডি’র তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী সেখ মোহাম্মদ মহসিনের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো অভিযোগ পত্রেও উঠে আসে প্রকল্প পরিচালক আব্দুল বারেকের নাম। অভিযোগে বলা হয়, অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পে প্রকল্প পরিচালক পদে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ না দিয়ে জুনিয়র প্রকৌশলীদের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যেখানে প্রধান প্রকৌশলী সেখ মোহাম্মদ মহসিন সুপারিশ করেছেন। এসব নিয়োগ দিয়ে মোটার অংকের টাকা নিয়েছেন তিনি। টাকার বিনিময়ে এডিবি রক্ষণে বাস্তবায়িত আইইউজিআইপি প্রকল্পের পরিচালক নিয়োগ করা হয়েছে গাজীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল বারেককে। সেখানে অভিজ্ঞ এবং জ্যেষ্ঠতাও মানা হয়নি। প্রকল্পের কাজে অনিয়ম অর্থ লোপাটের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এলজিইডি’র একজন সহকারী প্রকৌশলী জানান, ‘বারেক স্যারের সাথে মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সখ্যতার কথা ভবনে সবাই জানে। গত সরকারের সময় তিনি নিজেই একথা সবাইকে বলে বেড়াতেন। এখন অবশ্য টাকা পয়সা দিয়ে আওয়ামী বিরোধীপন্থিদের সাথে সমঝোতা করে চলছেন।’
অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন পৌরসভার জন্য বরাদ্দকৃত কাজের প্রাক্কলন ও দরপত্র অনুমোদন এবং বিল প্রদানের সময় ১-২ শতাংশ কমিশন আদায় করা হয় সংশ্লিষ্ট পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারের কাছ থেকে। এ কাজ পিডি আব্দুল বারেক নিজে না করে হিসাব শাখার কর্মরত হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মাণিক লাল কুন্ড এর মাধ্যমে আদায় করেন। এক্ষেত্রে তাকে সহায়তা করেন হিসাব রক্ষক মোঃ রিয়াজ উদ্দিন, হিসাব রক্ষক মোঃ আরিফুল আক্তার টুটুল ও এলকেএসএস এর হিসাব রক্ষক মতিন। প্রকল্পের আওতায় দরপত্র প্রক্রিয়াতেও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আতাতের মাধ্যমে এসব টেন্ডার নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে পাইয়ে দেন তিনি। এ প্রকল্পের আওতায় যশোরের কেশবপুর পৌরসভার ৫ টি দরপত্রের সবগুলো কাজ পান MOZAHAR ENTERPRISE (PVT) & JV BANNANTAR TRADING LTD নামের একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া আলমডাঙ্গা, গাংনীসহ এ প্রকল্পের আওতায় অন্যান্য পৌরসভাগুলোতেও একই চিত্র। প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগেও রয়েছে একাধিক অভিযোগ। কুষ্টিয়ার আওয়ামীলীগ নেতা ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদ এর স্ত্রী রিমা খাতুন যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও জিআইসিডি এর ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট-১ হিসেবে চাকুরি দিয়েছেন। এছাড়া আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল নিয়োগে মোটা অংকের ঘুষ আদায় ও স্বজনপ্রীতির ঘটনাও ঘটেছে। এ কাজে প্রকল্প পরিচালক আব্দুল বারেককে সহায়তা করেন তার গাড়ির ড্রাইভার আল- আমিন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রকল্পের একজন কর্মচারী জানান, ‘পিডি স্যারের সব কাজের সাথেই ড্রাইভার আল-আমিন জড়িত। ড্রাইভার হলেও সারাদিন প্রকল্প অফিসেই থাকেন তিনি।’ এসব বিষয়ে নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল বারেকের সাথে কথা বলতে তার অফিসে গেলে অফিস কক্ষে তার ড্রাইভার আল-আমিনকে পাওয়া যায়। এসময় কক্ষে উপস্থিত আরেকজন নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রকল্প পরিচালকের পক্ষে এ প্রতিবেদককে নানান প্রশ্ন করেন। এসময় সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ওই ব্যক্তিকে তার কর্মস্থলের নাম জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক আব্দুল বারেক বলেন, ‘প্রকল্পের সব কিছু নিয়ম মতই চলছে। আমি কাউকে ঘুষ দিয়ে এ পদে বসিনি।’ একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একটি পৌরসভায় সবগুলো কাজ কিভাবে পায় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক হলেও তাদের লাইসেন্স ভাড়া নিয়ে কাজগুলো করে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি। সরকার পতনের পর আওয়ামী সুবিধাভোগিরা অপসারিত হবেন এমনটি প্রত্যাশা ছিল এলজিইডি প্রকৌশলীদের, কিন্তু সরকারের পতনের ৮ মাসের পরও তারা দায়িত্বে বহাল রয়েছেন। এ সময়ে কয়েকটি প্রকল্পের পরিচালক পরিবর্তন করা হলেও বেশিরভাগ প্রকল্প পরিচালক পদে রয়েছেন ফ্যাসিস্টের দোসর।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com