বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ১১:৫০ পূর্বাহ্ন
গাজীপুর থেকে আব্দুল লতিফ আনসারী, কালের খবর : গাজীপুরের শ্রীপুরে লিচু বাগানগুলো এখন ফুলে ফুলে ভরে গেছে। মধু সংগ্রহ করে লাভজনক এ চাষে মৌয়ালের সংখ্যা বাড়ছে। প্রাকৃতিক এ মধু সংগ্রহ করে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছে চাষীরা।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুয়ীদ উল হাসান বলেন, শ্রীপুর উপজেলায় ৭’শ ২৭ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ করা হয়। বেশ কয়েকটি জাতের লিচু চাষ হয় শ্রীপুরে। চলতি বছর লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮’শ ৯০ মে.টন।
শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের মৌ চাষী মোহাম্মদ আলী বলেন, শ্রীপুরে যে পরিমাণ লিচু বাগান রয়েছে তাতে বসন্তকালে বাগানে বাক্স স্থাপন শত শত টন মধূ সংগ্রহ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, বসন্তের আবহাওয়া বৃষ্টি ও ঠান্ডামুক্ত থাকলে প্রতি ১’শ বাক্সের বিপরীতে আট থেকে সাড়ে আট’শ কেজি মধু সংগ্রহ করা যায়। চলতি বছর বসেন্তর কিছুসময় ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করেছে। এর মধ্যে একদিন বৃষ্টিও হয়েছে। ফলে এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় মধুর উৎপাদন কিছুটা কম। টেপিরবাড়ী মৃধা পাড়া এলাকায় তাঁর তত্বাবধানে তিনটি বাগানে তিনশত পঞ্চান্নটি মৌ বাক্স বসানো হয়েছে। মধু সংগ্রহে বসন্তের এ সময়ে কমপক্ষে শ্রীপুর উপজেলায় ২’শ প্রশিক্ষিত শ্রমিক দুই মাসের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে থাকেন।
মৌয়ালরা বলেন, দক্ষ প্রশিক্ষিত ব্যাক্তি ছাড়া মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। চাক থেকে মেশিনে মধু নিষ্কাশন, বাক্স থেকে ফ্রেম ছেঁেক আবার বসাতে হয়। অপ্রশিক্ষিত লোকের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ ও পরিচর্যা করতে গেলে মৌমাছির ক্ষতি হয়। চাকে মধু থেকে যায়, ডিম লার্ভা নষ্ট হয়ে মারা যায়।
শ্রীপুর উপজেলা মৌ চাষী সমবায় সমিতির অধীনে ৩৫ জন সদস্য রয়েছে। চাষের সাথে ২৫ জন সরাসরি জড়িত। কিছু সদস্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। বেশির ভাগের প্রশিক্ষণ নেই। দুই বছর যাবত কোনো প্রশিক্ষণ হয় না। প্রশিক্ষিত চাষীরা সহজেই মধু সংগ্রহ ও পরিচর্যা করতে পারেন।
কেওয়া গ্রামের লিচু বাগান মালিক মো. নূরুল আলম মাস্টার বলেন, গত বেশ কয়েক বছর যাবত লিচু গাছে ফুল ফোটার পর কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। কৃষি অফিসের পরামর্শে ফুলের বাধা বের হওয়ার সময় ও ফুল ঝড়ার পর লিচুর গুটি হলে কীটনাশক দেওয়া হয়। এতে মৌ চাষীদের মধু সংগ্রহে সুবিধা হয়।
কেওয়া গ্রামের অপর লিচু বাগান মালিক ফরিদ হুসেন আকন্দ বলেন, বাগানে মধু চাষীরা মৌ মাছির বাক্স স্থাপন করায় পরাগায়ন বেশি হয়। ফলে লিচুর উৎপাদন কমপক্ষে ২৫ ভাগ বেড়ে যায়।