শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০০ পূর্বাহ্ন
মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল থেকে সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম হাসান, কালের খবর :
দেশের চলমান করোনা ভাইরাসসৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকার মসজিদ – মন্দিরের ইমাম, মোয়াজ্জিন ও পুরোহিতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন র্যাব- ৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম। আজ রবিবার (১০ মে) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেঘুরে ধর্মীয় এ ব্যক্তিত্বদের হাতে চাল, ডাল, তেল, আলু, সেমাই, চিনিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর প্যাকেট তুলে দেন র্যাব-৯ এর এই আলোচিত কর্মকর্তা। এ সময় মসজিদ ও মন্দিরগুলো নিয়মিত স্প্রে করার সরঞ্জাম কেনার জন্য নগদ অর্থ সহায়তা দেন তিনি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সরকারের তরফ থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকলেও জেলার মসজিদ-মন্দিরসমূহে মুসল্লি/পূণ্যার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। এ প্রেক্ষিতে আজ সারাদিন জেলার বিভিন্ন এলাকার মসজিদ ও মন্দিরের নেতৃবর্গকে সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি তাদের মধ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালান র্যাব কর্মকর্তা এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে তিনি ইমাম মোয়াজ্জিনদেরকে বলেন, মসজিদ আল্লাহর ঘর। আর এখানে যারা নামাজ আদায় করতে আসবেন, তারা আল্লাহর মেহমান। তাই নামাজিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা আপনাদের উপর অর্পিত পবিত্র আমানত। আপনাদের অবহেলার কারনে একজন মুসল্লিও যদি করোনায় আক্রান্ত হন, তাহলে এর জন্য আপনাদেরকে আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে। উপস্থিত ইমাম মোয়াজ্জিনদেরকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর পুরো মসজিদে জীবানুনাশক স্প্রে করা এবং মসজিদে ঢোকার পূর্বে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখার অনুরোধ জানান আলোচিত এ র্যাব অফিসার।
এ প্রসঙ্গে এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বার্থকভাবে মোকাবিলা করার জন্য ধর্মীয় নেতৃবর্গের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারন মসজিদ-মন্দিরগুলোতে সরকারঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে না চলা হলে তা করোনা বিস্তারে বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। তাই প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পর পুরো মসজিদে স্প্রে করা, মন্দিরগুলোতেও অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। তাই আমি আমার নিজস্ব উদ্যোগে ইমাম – মোয়াজ্জিন ও পুরোহিতদেরকে সহায়তামূলক খাদ্যসামগ্রী প্রদান ও জীবানুনাশক স্প্রে করার সরঞ্জাম কেনার জন্য অর্থ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে তাদেরকে সচেতন করার এই পদক্ষেপটি গ্রহণ করেছি। এ এসময় সারা দেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদেরকেও অনুরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি। সহায়তাপ্রাপ্ত ইমাম, মোয়াজ্জিন ও পুরোহিতেরাও বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন। তারা র্যাবের এএসপি মহোদয়কে সর্বাত্মক পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে মসজিদ-মন্দির পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দেন। একাধিক ইমাম ও মোয়াজ্জিন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দীর্ঘ চাকুরিকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অফিসার কর্তৃক এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের নজির তারা কখনো প্রত্যক্ষ করেন নি। অনেকেই এসে বিভিন্ন পরামর্শ ও আদেশ-নির্দেশের কথা শুনিয়ে যান। কিন্তু ধর্মীয় নেতৃবর্গের মধ্যে ত্রাণের বস্তা বিতরণ এবং স্প্রে করার সরঞ্জাম কেনার জন্য নগদ অর্থ সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করার ঘটনা এই প্রথম।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মানবিক ও পেশাদার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।