সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৮ অপরাহ্ন
কালের খবর রিপোর্ট :
সদরঘাট-গেণ্ডারিয়া কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই ভেতরে সুন্দর-ছিমছাম পরিবেশে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান দেয়া হয়।
স্কুলটির আসবাবপত্র ও শ্রেণিক্ষগুলোও যথেষ্ট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। কিন্তু স্কুলে আশানুরূপ শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে না। বছরের শুরুতে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও কয়েক মাস পড়েই শিক্ষার্থীরা চলে যায় অন্য স্কুলে।
এর কারণ আর কিছুই নয়, স্কুলের গেটের পাশের দেয়ালকেই ময়লা ফেলার জায়াগা বানিয়ে নিয়েছেন এলাকাবাসী। যে কারণে ব্যহত হচ্ছে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। বিদ্যালয়টিতে কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।
সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়ে সামনে ছোট ছোট পুঁটলি বেঁধে ময়লা ফেলছেন এলাকাবাসী। গৃহস্থালি এসব বর্জ্যরে কারণে স্কুলের নিচের তলায় বসাই দায় হয়ে পড়েছে। কোনো রকম ক্লাস করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। প্রচণ্ড দুর্গন্ধের কারণে দুটি রুমে ক্লাস নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সাহিনা খানম কালের খবরকে বলেন, বিষয়টি সত্যিই খুব দুঃখজনক। কোথাও ময়লা ফেলার জায়গা না পেয়ে স্কুলের একদম গেটের পাশে ময়লা রেখে যান এলাকাবাসী। দুর্গন্ধে ক্লাসে থাকা যায় না।
এমনও হয়, কোনো বাড়ি থেকে জানালা দিয়ে ময়লা ফেলে, তখন একদম স্কুলের ভেতরই ময়লা জমে যায়। বিষয়টি নিয়ে অনেকবার মানববন্ধন করেছি, সিটি কর্পোরেশন থেকেও লোকজন এসেছে, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলত গেণ্ডারিয়া এলাকার এ মোড়ে ময়লা ফেলার ডাম্পিং না থাকায় এলাকাবাসী স্কুলের এখানে ময়লা রেখে যায়। তবে এলাকাবাসী বলেছেন, একটি স্কুলের সামনের দেয়ালকে ময়লার ডাম্পিং বানিয়ে ফেলা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
গেণ্ডারিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা মামুন হাওলাদার কালের খবরকে বলেন, সিটি কর্পোরেশন চাইলে এখানে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে পারে। কিন্তু এমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ময়লার কারণে ভুক্তভোগী হচ্ছে, অসুস্থ হয়ে পড়ছে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
আরেক বাসিন্দা রহিমা আক্তার বলেন, আমি মানুষের বাসায় কাজ করি। অল্প আয়ের মানুষ। কম টাকায় পড়ালেখা করার জন্য মেয়েকে প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি করিয়েছি। পনেরো দিনের মাথায় মেয়ে আর স্কুলে যেতে চায় না।
মেয়ে জানায়, দুর্গন্ধে টেকা যায় না। তারপও ক’দিন জোর করে স্কুলে পাঠাই। কয়েকদিন পর মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এখন আর সে স্কুলে যায় না। অন্য স্কুলে পড়াব সেই সামর্থ্যও আমার নেই।
স্কুলের সভাপতি গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেলেন আক্তার কালের খবরকে বলেন, আমি অনেক চেষ্টা করেছি, অন্তত স্কুলের সামনে ময়লা ফেলা বন্ধ করার জন্য। কিন্তু এলাকাবাসী সচেতন হয়নি।
সিটি কর্পোরেশনকেও বিষয়টি বলেছি। কিন্তু তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি। সিটি কর্পোরেশন সকালে ময়লা নিয়ে যায়। কিন্তু সারা দিন যে ময়লাটা স্কুলের সামনে পড়ে থাকে এটার দায় কে নেবে?
ডিএসসিসি ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামসুজ্জোহা কালের খবরকে বলেন, আমি সবে শপথ নিয়েছি। স্কুলের বিষয়টি আমার জানা আছে।
শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য শিগগির আমি ব্যবস্থা নেব। স্কুলের আঙিনার আশপাশে কেউ কোনো ধরনের ময়লা ফেলতে পারবে না।