সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৯ পূর্বাহ্ন
কালের খবর প্রতিবেদক :
জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ‘মনোনয়ন বাণিজ্যের’ অভিযোগ তদন্ত করবে জাতীয় পার্টি (জাপা)।
জাতীয় পার্টির সদ্য নিযুক্ত মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙা দায়িত্ব গ্রহণ করে আজ বিকালে রাজধানীর বনানীতে পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসময় রাঙা বলেন, মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগের প্রসঙ্গে সত্যতা, অসত্যতা রয়েছে। নানা বক্তব্য আছে। আমরা জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যরা গত রাতে আলোচনা করেছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসময় তিনি জানান, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
জাতীয় পার্টির মনোনয়নপত্র বিতরণের শেষে বেশ কজন নেতা অভিযোগ করেন, সিনিয়র কয়েকজন নেতা টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন দিয়েছেন, তাদের কাছে টাকায় হেরে গেছি।
এই অভিযোগকে অস্বীকার করে আসছিলেন জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি বলছিলেন, অভিযোগকারীরা ‘কোনো একটি পক্ষ থেকে টাকা খেয়ে’ তার বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ করছে।
এই প্রসঙ্গে মসিউর রহমান রাঙা বলেন, মনোনয়ন নিতে এসে যারা লাঞ্চিত হয়েছেন, যারা টাকা-পয়সা নেওয়ার অভিযোগ এনেছেন, তারা যদি আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান, তবে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা একটা কমিটি করে দেব। তারপর প্রেসিডিয়াম সদস্যরা তদন্ত করবে। দোষী হলে আমরা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
ঋণখেলাপী হওয়ায় পটুয়াখালী-১ আসনে জাপার প্রার্থী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের মনোনয়ন বাতিল করে দেয় রিটার্নিং কর্মকর্তা।
সোমবার সকালে জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র মোতাবেক এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে মসিউর রহমান রাঙাকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব পদে নিযুক্ত করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
হাওলাদারকে ঠিক কোন কারণে মহাসচিবের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও রাঙা বলেন, আপনারা জানেন, ঋণখেলাপি হওয়ার কারণে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। তার মনোনয়ন গৃহীত হয়নি। .. তবে মাননীয় চেয়ারম্যান তাকে কেন অব্যাহতি দিয়েছেন, তা তিনি বলবেন। হয়তোবা তিনি (হাওলাদার) পদ থেকে অব্যাহতি চাইতে নিজেও বলেছেন……..”
‘মনোনয়ন বাণিজ্যের’ অভিযোগের সময়ে জাপার বেশকজন কেন্দ্রীয় নেতা দল থেকে পদত্যাগ করেন।
রাঙা বলেন, যেসব সাংসদ ও নেতা দল থেকে পদত্যাগ করেছেন, তাদের বলব আপনারা ফিরে আসুন। চেয়ারম্যান স্যার আপনাদের সন্তনের মতো ভালোবাসেন। পিতাই তো ধমক দেন… অভিমান না করে ফিরে আসুন আপনারা।
এসময় তিনি জানান, জাপা থেকে তিন বার থেকে বহিস্কার করে দেওয়া হলেও তিনি দল ছেড়ে চলে যাননি। পরে তিনি রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সম্পাদক ও পরে সভাপতির দায়িত্ব পান। টানা ১৫ বছর ধরে তিনি দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যও।
সংবাদ সম্মেলনে রাঙা অভিযোগ করেন, “জাতীয় পার্টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যখন সংগঠিত হয়ে উঠে, তখন দলের মধ্যে একটি অশুভ শক্তি দলের মধ্যে ঢুকে পড়ে।”
মহাজোটের সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাওয়া জাপার নেতারা এখনও জানেন না মহাজোট থেকে জাপা প্রকৃতপক্ষে কতটি আসন পাবে। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সঞ্চারিত ক্ষোভের কথাও জানেন মসিউর রহমান রাঙা।
তিনি বলেন, অন্তত তিন মাসে জানা উচিৎ ছিল, কারা আমাদের প্রার্থী হবেন। এখন পর্যন্ত প্রার্থী হিসেবে অর্থকড়ি খরচ করেছেন অনেকে। তাদের মানসম্মানের ক্ষতি হোক, এটা তো আমরা চাই না।