মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০২ পূর্বাহ্ন
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি, কালের খবর : কুলাউড়ায় চার বছর ধরে একটি ঘরে শিকলবন্দি অবস্থায় জীবনযাপন করছেন তৌফিক মিয়া (৩২)। পরিবারের লোকজনের দাবি, তৌফিক মিয়া অপ্রকৃতিস্থ।
কিন্তু চিকিৎসা করার মতো সামর্থ্য তাদের নেই। অন্যের ক্ষতি যাতে না করে সে জন্যই তৌফিককে শিকলবন্দি করে রাখা হয়েছে।
জয়চণ্ডী ইউনিয়নের দক্ষিণ গিয়াসনগর এলাকার বাসিন্দা কারি রমিজ উদ্দিনের (মৃত) দুই ছেলের মধ্যে তৌফিক মিয়া ছোট। তৌফিকের বড় ভাই মোশাহিদ আলী (আয়না মিয়া) জানান, ১১ বছর ধরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তৌফিক। চার বছর আগে তাঁদের বাবা মারা যাওয়ার পর তৌফিক পুরোপুরি অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যান। নিজের সামর্থ্য ও প্রতিবেশীদের সাহায্য নিয়ে ছোট ভাইকে অনেক ডাক্তার-কবিরাজ দেখিয়েছেন। কিন্তু টাকার অভাবে তাঁকে ভালোভাবে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে তুলতে পারেননি।
বিভিন্ন মসজিদ-মক্তবে চাকরি করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোনোরকমে সংসার চালাচ্ছিলেন কারি রমিজ উদ্দিন। চার বছর আগে মৃত্যু হয়।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে যান। পরিবারের হাল ধরেন বড় ছেলে মোশাহিদ আলী। দিনমজুরের কাজ করে মা, ভাই, বোন ও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মোশাহিদের সংসার।
মোশাহিদের বাড়িতে গেলে পরিবারের এক করুণ দৃশ্য চোখে পড়ে। আধাপাকা একটি ঘরে শুয়ে আছেন মা, বোন ও ভাই তৌফিক। তৌফিকের পায়ে শিকলবাঁধা। ঠিকমতো খাওয়া-নাওয়া না করায় শরীরে রোগব্যাধি জেঁকে বসেছে।
মোশাহিদ জানান, পাঁচ বছর ধরে তাঁর স্ত্রী অসুস্থ। স্ত্রীর জরায়ুতে সমস্যা ধরা পড়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার (অপারেশন) করতে হবে। কিন্তু টাকার অভাবে তা করাতে পারেননি। ছয় মাস আগে পুকুরপাড়ে পড়ে ছোট বোন রুলি বেগমের পায়ের গোড়ালি ভেঙে যায়। চিকিৎসা করালেও ভাঙা স্থানটি জোড়া লাগেনি। গত মাসে হঠাৎ বৃদ্ধ মা স্ট্রোক করেন। বর্তমানে পরিবারের প্রায় সবাই অসুস্থ। পরিবারের সদস্যদের জন্য দুই মুঠো খাবার নাকি চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন মোশাহিদ—এই হতাশা কুরে কুরে খাচ্ছে তাঁকে।
সমাজের বিত্তবানরা একটু সুদৃষ্টি দিলে রক্ষা পায় পরিবারটি। কোনো সুহৃদ পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে চাইলে ০১৭২৮-৯৯৬৪০১ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।