শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
‌‌সম্প্রীতি সমাবেশ। কালের খবর সড়ক ও জনপদের ৩য় শ্রেণির কর্মকর্তার সম্পদের পাহাড়। কালের খবর  পেশাদার সাংবাদিকদের সবরকম সুরক্ষা দিতে কাজ করছে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার : এম আব্দুল্লাহ। কালের খবর সরকারি রাস্তা উদ্ধারের দাবিতে শাহজাদপুরে মানববন্ধন। কালের খবর ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ককে সুদৃঢ় করতে হবে : ইউএনও মনজুর আলম। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় সেনাবাহিনীর মানবিক সহায়তা বিতরণ ও চিকিৎসা সেবা প্রদান। কালের খবর ‘দেশ স্বাধীনের পর তৈরি সংবিধানে কোনো জাতির পিতা ছিল না’ : আদালতকে অ্যাটর্নি জেনারেল। কালের খবর দ্রব্যমূল্যের এই বাজারে খরচ কমানোর ২৭ উপায়!। কালের খবর ওলামাদের মধ্যে রুহানী ঐক্য প্রয়োজন : জামায়াত আমির। কালের খবর আ.লীগ নেতা সুমন খান গ্রেফতার। কালের খবর
বিআরটিএ উত্তরা : অভিযানেও থামেনি দালালের উৎপাত। কালের খবর

বিআরটিএ উত্তরা : অভিযানেও থামেনি দালালের উৎপাত। কালের খবর

নিজস্ব প্রতিবেদক,  কালের খবর  :

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) উত্তরার দিয়াবাড়ী কার্যালয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য আসেন মিরপুরের আশরাফ হোসেন। মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে মোটরসাইকেলের লাইসেন্স করে দেয়া যাবে জানিয়ে রাজু নামের এক ব্যক্তি তাকে দালাল এমএ জলিলের কাছে নিয়ে যান। তখন জলিল জানান, মোটরসাইকেলের লাইসেন্সের জন্য সাড়ে ৮ হাজার টাকা দিতে হবে। প্রথম ১৫ দিনের মধ্যে লার্নার (শিক্ষানবিশ) এবং পরবর্তী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে লাইসেন্স দেয়া হবে।

বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, মোটরসাইকেলের লাইসেন্সের জন্য সরকারি ফি মাত্র ২ হাজার ৭১৪ টাকা। এ সময় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ‘এত টাকা কেন লাগবে ?’ জানতে চাইলে দালাল জলিল বলেন, বিআরটিএ অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তাকে টাকা দিতে হবে এবং আমার নিজের খরচ আছে। কিন্তু কোন কর্মকর্তাকে টাকা দিতে হবে জানতে চাইলে নাম না বলেই দ্রুত সটকে পড়েন তিনি। এ চিত্র  বুধবার দুপুর আড়াইটার।
লাইসেন্স করতে আসা একাধিক চালক জানান, এখানে (ঢাকা মেট্রো-৩ সার্কেল, দিয়াবাড়ী) দালালদের সহযোগিতা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। সম্প্রতি নতুন লাইসেন্স, গাড়ির ফিটনেস নবায়ন করার ধুম পড়েছে বিআরটিএতে। এ কারণে দালালরাও টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
ট্রাফিক সপ্তাহ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চালকের লাইসেন্স ও গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা শুরুর পর এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তবে দফা দফায় আরটিএর উত্তরার কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানেও থামানো যায়নি দালালদের দৌরাত্ম্য। কার্যালয়ের সামনে থেকে সরে গিয়ে আশপাশের খাবারের হোটেল ও চায়ের দোকানে বসে গোপনে তৎপরতা চালাতে দেখা যায় তাদের।
সরেজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন হোটেলে বিভিন্ন জনের জটলা, লাইসেন্স পেতে চলছে নানা দেনদরবার। এখানে এমএ জলিল, সোহেল, নাসির হোসেন, লিটন, ফাহাদসহ প্রায় ডজনখানেক ব্যক্তির একটি সংঘবদ্ধ দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে দিয়াবাড়ী কার্যালয়ে।
অভিযানে নম্বর প্লেটে দালালির কারণে ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অমিত দেবনাথ ৩ দালালকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে দন্ড দেন বলে জানিয়েছেন বিআরটিএর ইন্সপেক্টর ফয়সাল। তবে অভিযানের মধ্যেও লাইসেন্স নিতে আসা চালকরা নানা ভোগান্তির কথা শোনান। নাট্যকার মো. অলিউল্লাহ রাজু লাইসেন্সের জন্য পরীক্ষা দিয়ে গাড়ি চালানোর জন্য উত্তরা বিআরটিএ কার্যালয় থেকে অস্থায়ী অনুমতিপত্র পান। অনুমতিপত্রে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি দেয়ার সময় বলে দেয়া হলেও কত তারিখে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হবে তা উল্লেখ নেই। এ রকম আরো অনেকের অনুমতিপত্রে একই চিত্র দেখা গেছে।
অলিউল্লাহ রাজু বলেন, অনুমতিপত্রে তারিখ না থাকায় আমরা বিভ্রান্তিতে আছি। বিআরটিএ অফিসে গেলে তারা বলেন, আজ তো আপনার আসার কথা নয়। তারিখ পেতে নানা রকম ভোগান্তি পোহাতে হয় এবং দালাল ধরতে হয়। তিনি বলেন, প্রায় ৯ মাস আগে দালাল জলিলের মাধ্যমে ৯ হাজার টাকা দিলেও এখনো লাইসেন্স দেয়া হয়নি। কুড়িল থেকে আসা আহসান করিম জানান, তিনি দালাল ফাহাদকের মাধ্যমে লাইসেন্সের জন্য ৯ হাজার টাকা দেন ৪ মাস আগে। নূরুজ্জামান, আলী হোসেন, নাজমুল আমলসহ আরো কয়েকজন একই অভিযোগ করেন।
এদিকে উত্তরা বিআরটিএ কার্যালয়ে টাকা জমা দেয়ার জন্য ব্যাংকের একটি মাত্র বুথ থাকায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় সেবাগ্রহীতাদের। বিআরটিএ কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বিআরটিএর এই কার্যালয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক লোকের আনাগোনা। এখানে অন্তত ৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন, এই কার্যালয়ের কোনো সীমানা প্রাচীর নেই। ফলে দালালরা ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং লাইসেন্স নিতে আসা লোকদের বিভ্রান্ত করে। বাউন্ডারি থাকলে আমরা তাদের আটকে দিতে পারতাম। এ ছাড়া, বর্তমানে আমাদের অফিস টাইম সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা। কিন্তু এখানে নিরাপত্তার জন্য কোনো আনসার নেই। পাশাপাশি আমাদের জনবল সংকটও মারাত্মক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএর উত্তরা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল আজম কালের খবরকে বলেন, আমরা ভাড়া অফিসে আছি, এখানে বাউন্ডারির প্রয়োজন নেই। তবে বিআরটিএর এই কার্যালয়ের জন্য বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় ২৪ কাঠা জমি কেনা হয়েছে। সেখানে অবকাঠানো তৈরির পর আর সমস্যা থাকবে না। তবে দালালদের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com